
এবার বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই বৃষ্টিপাত অনেক বেড়ে গেছে। মৌসুমি বায়ুর আগাম সক্রিয়তায় পুরো জুন মাস জুড়েই সারাদেশে ভারি বৃষ্টিপাতে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষ নাগাদ বন্যা দেখা দিতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, এবার আগেই দেশের প্রধান নদীগুলোর পানি অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। মে মাসের শেষে এবং জুনের শুরুতেই যমুনায় যে পরিমাণ পানি বেড়েছে তা গত ১৯৮৮ সালের পর আর দেখা যায়নি। এতে আগাম হুমকি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদীর সমতলে ৯০টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৪৯টি স্টেশনে সমতলে নদীগুলোর পানি বাড়ছে। এর মধ্যে যমুনা নদীর পানি বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। তারা জানায়, যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার ১ দশমিক ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার এই ধারা অব্যাহত থাকলে ১৫ জুনের পর যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের পূর্বাংশ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এটি আরও অগ্রসর হয়ে সারাদেশে বিস্তার লাভ করবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, লঘুচাপের প্রভাবে সাগর ও উপকূল এলাকায় গভীর সঞ্চারশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে ও বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর, উপকূল এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ করতে না করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সমূদ্রে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রায় সারাদেশের ওপর দিয়েই বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে।