
৭ দিনের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হলে বারের সদস্যপদ চিরতরে প্রত্যাহার;
আবেদন করা হবে বার-কাউন্সিলে;
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিল, সঞ্চয় তহবিলসহ বিল্ডিং নির্মাণ খাত হতে ১৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৯৯ টাকা ০৬ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগে এড. এম শাহ আলম এর সমিতির সদস্য পদ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আত্মসাতকৃত টাকা আগামী ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হলে বারের সদস্যপদ চিরতরে প্রত্যাহার হয়েছে বলে গণ্য হবে। এছাড়া উক্ত অপরাধের কারনে এড. এম শাহ আলমের সনদ বাতিলের জন্য সমিতির দরখাস্তসহ রেজুলেশনের কপি বাংলাদেশ বার-কাউন্সিলে প্রেরণ করা হবে। গতকাল বেলা ২ টায় আইনজীবী সমিতির হল রুমে সমিতির সভাপতি প্রবীন আইনজীবী মোঃ আবুল হোসেন’র সভাপতিত্বে এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. আ. ক. ম রেজওয়ান উল্যাহ সবুজ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এক সাধারণ সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে ওই সিন্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
তদন্ত রিপোর্ট হতে জানা যায়, এড. এম শাহ আলম ২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় তিনি সমিতির কল্যান তহবিলের পোষ্ট অফিসের এফ, ডি ১০১১৩ নং একাউন্ট হতে ৪ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৩৭ টাকা, এফ, ডি ১৫৭২ নং একাউন্ট হতে ৭৩ হাজার টাকা, সমিতির সঞ্চয় তহবিল হতে ৬০ হাজার টাকা এবং বিল্ডিং নির্মাণ খাত হতে ৮ লক্ষ ৪৩ হাজার ১৬২ টাকা ০৬ পয়সা অর্থৎ সর্বমোট ১৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৯৯ টাকা ০৬ পয়সা আত্মসাত করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ডক্টর এড. রবিউল ইসলাম খান বারের সভাপতি থাকাকালীন এসব অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দেড় শতাধীক আইনজীবী এড. এম শাহ আলমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সমিতির সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক বরাবর একটি আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষীতে ২০১০ সালের ৩০ মার্চ সমিতির এক সাধারণ সভায় কল্যাণ তহবিল, সঞ্চয় তহবিলসহ আয়-ব্যয়ের হিসাব তদন্তের জন্য সমিতির সাবেক ৮ জন সভাপতির সমন্ময়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা ছিলেন, সাবেক সভাপতি এড. আব্দুর রহিম. সাবেক সভাপতি এড. আলাউদ্দীন আহমেদ, সাবেক সভাপতি এড. আব্দুর রউফ. সাবেক সভাপতি এড. গোলাম মোস্তফা, সাবেক সভাপতি এড. এস, এম হায়দার, সাবেক সভাপতি এড. আবুল হোসেন, সাবেক সভাপতি এড. সালাহ উদ্দীন আহমেদ ও সাবেক সভাপতি এড. এম শাহ আলম। উক্ত কমিটি তাঁদের প্রথম সভায় সাবেক সভাপতি এড. আব্দুর রউফকে হিসাব তদন্ত কমিটির আহবায়ক নির্বাচিত করেন এবং তদন্ত কার্য শুরু করেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্যসহ এড. এম শাহ আলমের বক্তব্যও গ্রহন করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ০৫.০১.২০১১ তারিখে উক্ত আহবায়ক কমিটি এড. এম শাহ আলম কর্তৃক সমিতির আত্মসাতকৃত ১৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৯৯ টাকা ০৬ পয়সা দেশের প্রচলিত আইন এবং সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসারে আদায়যোগ্য মর্মে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। পরবর্তীতে আইনজীবী সমিতি বিভিন্ন সময় উক্ত আত্মসাতকৃত অর্থ এড. এম শাহ আলমের নিকট হতে আদায়ের চেষ্টা করলেও তিনি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে এবং বিভিন্ন সময় সমিতির নির্বাচিত কতক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে জানান একাধিক সিনিয়র আইনজীবী।
সম্প্রতি সমিতির সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী মোঃ আবুল হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক এড. আ, ক, ম রেজওয়ান উল্যাহ সবুজ’র নিকট উক্ত তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী আত্মসাতকৃত অর্থ আদায়ের জন্য ১১১ জন আইনজীবী একটি লিখিত আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষীতে গতকাল ৭ ফেব্রæয়ারী সমিতির এক সাধারণ সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে উপরোল্লিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে নিশ্চিত করেন সমিতির বর্তমান সভাপতি ও প্রবীণ আইনজীবী এড. মোঃ আবুল হোসেন। তিনি আরও জানান, সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অতিদ্রুত সচীব, বাংলাদেশ বার-কাউন্সিল, ঢাকা, জেলা ও দায়রা জজ, সাতক্ষীরা, পুলিশ সুপার, সাতক্ষীরা, সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা সহ বাংলাদেশের সকল জেলা আইনজীবী সমিতিতে প্রেরণ করা হবে।