নিজস্ব প্রতিবেদক: আশাশুনির মহিষাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য ও সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে উল্লেখ করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আশাশুনির মহিষাডাঙ্গা গ্রামের নীলিমা মন্ডল ও নিতাই ঢালী অভিযোগ দু’টি দাখিল করেছেন।
নীলিমা মন্ডল স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, সম্প্রতি আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের ৩১নং মহিষাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে নীলিমা মন্ডল একজন অভিভাবক ও বিদ্যুৎসাহী সদস্য, যাহা সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনীত। তিনি ডিগ্রী পাশ একজন সদস্য। অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের সময় সকলের মতামতের মাধ্যমে ডিগ্রী পাশ অভিভাবক সদস্য নীলিমা সরকারকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য সকলে প্রস্তাব দেন। কিন্তু উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলন কান্তি বিশ^াস নির্বাচনের সময় সভায় উপস্থিত নির্বাচিত সদস্যদের গনতান্ত্রিক মতামতকে উপেক্ষা করে একক ক্ষমতাবলে নিজের আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে মহিষাডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি ঠাকুর দাশ সরকারকে সভাপতি নির্বাচন করেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রধান শিক্ষক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিত্রের পরিপন্থিভাবে ক্যাচমেন্ট এরিয়ার বাহির হতে মহিষাডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ধরণী কুমার বিশ^াসকে বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে প্রস্তাবনা পাশ করান। এতে করে এলাকার অভিবাবকবৃন্দ প্রধান শিক্ষকের উপর ক্ষুব্দ। তাই প্রধান শিক্ষকের মনোনীত সদ্য নির্বাচিত কমিটির সভাপতি/ কমিটি- সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন না দিয়ে স্বচ্ছভাবে পূনরায় সভাপতি নির্বাচন করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন তিনি।
নিতাই ঢালী স্বাক্ষরিত পৃথক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি উক্ত বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার ভেতরের একজন অভিভাবক। তিনি বিদ্যুৎসাহী সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মিলন কান্তি বিশ^াস গণতান্ত্রিক মতামত যাচাই না করে স্বীয়স্বার্থ চরিতার্থ করার মানসে পরিপত্র বহির্ভূতভাবে নিজের আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে মহিষাডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ধরণী কুমার বিশ^াসকে বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদে নিয়োজিত করেন। উক্ত ধরনী কুমার বিশ^াস পাশর্^বর্তী অন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার অধিবাসী হওয়ায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদে নিযুক্ত মহিষাডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ধরণী কুমার বিশ^াস বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। তিনি বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার অধিবাসী কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে আমি ভাল জানি না, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকই এ সম্পর্কে ভাল বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলন কান্তি বিশ^াস বলেন, ধরণী কুমার বিশ^াস ২০১০ সালে অভিভাবক সদস্য হিসেবে অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন। সে হিসেবে তাকে এবারও বিদ্যুৎসাহী সদস্য করা হয়েছে। তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন কমিটিতে যারা সদস্য মনোনীত হয়েছেন তাদের মধ্যে তিনজন ডিগ্রী পাশ সদস্য রয়েছেন। সবাই সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় বিষয়টি সুরাহার জন্য কমিটির সদস্য ইউপি সদস্য বিশ^নাথ কে বলা হয়। গত ১০ আগস্ট তারিখে সদস্যদের নিয়ে মিটিং করা হয়। মিটিং এ কমিটির সদস্য মঙ্গলের প্রস্তাবে এবং ইউপি সদস্য বিশ^নাথ সহ সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের সমর্থনে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, বিষটি তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।