
চারদিনের মাথায় রিং বাঁধ দিয়ে পানির প্রবেশ পথ বন্ধ
মৎস্য – কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতি , ১০ হাজার কাঁচাপাকা ঘরবাড়ি বিনষ্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক : ভাঙনের চারদিনের মাথায় গতকাল শুক্রবার আশাশুনির বিছুটের খোলপেটুয়া নদীর ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধের পানির প্রবেশ মুখে রিংবাঁধ দেয়া হয়েছে । বেড়িবাঁধ ভেঙে ৮ টি গ্রাম প্লাবিত হ্ওয়ার দরুন মৎস কৃষি সহ প্রান্তিক মানুষের ঘরবাড়ির ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে । সরজমিনে উপদ্রুত অঞ্চল ঘুরে নদী ভাঙনের ফলে ক্ষয় ক্ষতির চিত্র পাওয়া গেছে । বিছুট বেড়িবাঁধে দাঁড়িয়ে কথা হয় সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন , এস ডি ই রাশিদুল ইসলাম , এস ও আলমগীরের সাথে ।তারা এই প্রতিবেদকে জানান, গত ৩১ মার্চ সকাল ৯ টার সময় বাঁধ ভাঙনের খবর পান তারা । খবর শুনেই তাৎক্ষনিক ভাবে ঘটনাস্থলে রওনা দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা । জরুরী ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ করে তারা জিও টিউবের মাধ্যমে রিং বাঁধ দেয়া শুরু করেন গত পহেলা এপ্রিল থেকে। গতকাল শুক্রবার দুপুর একটায় ৩৭০ মিটার রিং বাঁধের কাজ শেষ হয় । ফলে পরবর্তী জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করবেনা । রিং বাঁধের তিনটি লেয়ার তৈরি করা হচ্ছে । এই কাজ শেষে মুল বেড়িবাঁধের কাজ করা হবে ।তারা যোগ করে বলেন, তাৎক্ষনিকভাবে লোকালয়ে পানির প্রবেশ বন্ধ করে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কমানো গেল ।
বেড়িবাঁধ ভাঙনের কারন এই প্রতিবেদককে কাছে তারা বর্ননা করেন। তাদের বক্তব্য হল , ভাঙনের বিপরীত পারে কোলা নামক জায়গায় খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে পারমানেন্ট বাঁধ দ্ওেয়া হয়েছে ।ব্লকের নির্মিত এই বাঁধের কারনে ¯্রােতের গতিপথ পরিবর্তন এবং ¯্রােতের তীব্রতা বাড়ে। গত আমাবস্যায় নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে খোলপেটুয়া নদীর বিছুট নামক জায়গায় বেড়িবাঁধে ২০০ মিটার ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে পানি আনুলিয়া ইউনিয়নের ৮ টি গ্রামে প্রবেশ করে। চারদিন দিনরাত পরিশ্রম করে রিং বাঁধ দিয়ে পানির প্রবেশ পথ বন্ধ করা হয়েছে । এদিকে খোলপেটুয়ার বেড়িবাঁধে দাড়িয়ে কয়েকশ নারী টেকসই বেড়িবাঁধের দাবীতে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন,আশাশুনি উপজেলা কৃষকদলের আহবায়ক মো. লিয়াকাত হোসেন, যুবদল নেতা হাফিজুর রহমান, কৃষক মালেক সরদার, সফুর গাজী , জাহানারা বেগম ,সালমা খাতুন ্ও নুরনেছা বেগম প্রমুখ। প্লাবিত ৮টি গ্রাম সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় হাজার হাজার অবর্ননীয় দু:খ দূর্দশা । ৮ টি গ্রামের অনন্ত ১০ হাজার মানুৃষ পানি বন্দি জীবন যাপন করছে । পানি ্ও খাদ্য সংকটে ভুগছে তারা। সরকারীভাবে অপ্রতুল ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে । ইতিমধ্যে বিভাগীয় কমিশনার , জেলা প্রশাসক , সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড ্ও নৌবাহিনী ভাঙন কবলিত অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন।
আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুসের সাথে নির্মানাধীন রিং বাঁধে দাড়িয়ে কথা হয় । তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, পানি প্রবেশের ফলে আনুলিয়া ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম সম্পূর্নরুপে প্লাবিত হয় । ফলে মৎস,কৃষি ও মানুষের ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয় । তার বর্ননা অনুযায়ী ৬হাজার বিঘার চিংড়ি ঘেরের ৪শ মালিকের ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১২শ জন কৃষকের ৩ হাজার একর বোরোধান সম্পূর্ন রুপে বিনষ্ট হযেছে। অনন্ত ১০ হাজার কাঁচা আধা পাকা ঘর বাড়ি সম্পূর্ন রুপে বিনষ্ট হয়েছে । প্লাবিত গ্রামগুলো হলো বিছুট, নয়াখালী , বল্বভপুর , বাসুদেবপুর , আনুলিয়া , চেচুঁয়া ,কাকবাসরা ও পারবিছুট।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, ২০ হেক্টর জমির বোরো আবাদ বিনষ্ট হয়েছে । দেড় হেক্টর জমির সবজি বিনষ্ট হয়েছে । ক্ষয় ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করতে আরো কিছু সময় লাগবে বলে তিনি জানান ।