সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি থেকে: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সমলয়ে চাষাবাদ ব্লক প্রদর্শনী আশাশুনির কৃষকদের আগ্রহের বেড়েছে। নতুন পদ্ধতি ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মধ্য দিয়ে চাষাবাদ এর ফলাফল দেখতে কৃষকরা এখন উদগ্রীব হয়ে রয়েছে।
কৃষি কাজে ব্যয় কমানো, সময় বাচানো, অধিক ফসল উৎপাদন ও ফসলের মান রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথা কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করে আসছে। এরই অংশ হিসাবে সমলয়ে চাষাবাদ প্রজেক্টের আওতায় আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ব্লকে শ্বেতপুর গ্রামে ৫০ একর জমিতে ব্লক প্রদর্শনী হাতে নেওয়া হয়েছে। এলাকার ৩২ জন চাষী ৫০ একর জমিতে হাইব্রিড এসএল ৮ এইচ জাতের বোরো ধান চাষাবাদে নিয়োজিত হয়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ইতিমধ্যে কৃষকদের প্রয়োজনীয় বীজ ধান ও সার সরবরাহ করেছে। কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও পরামর্শে ৪ হাজার ৫০০ ট্রে ব্যবহার করে বীজতলা করা হয়েছে। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বীজতলা প্রস্তুত করা হয়। ধানের চারা/পাতার বয়স এখন ২৪ দিন। বীজতলা দেখলে মনে হবে এযেন এক অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত চিত্র। পলিথিন দিয়ে ঘিরে রাখা ও উত্তম পরিচর্চার মাধ্যমে বীজতলাকে আদর্শ বীজতলায় পরিণত করা হয়েছে। ফলে ধানের চারা খুবই সুন্দরভাবে বেড়ে উঠেছে। আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ রোপন কাজ শুরু করা হতে পারে। এজন্য রাইচ ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন আনা হয়েছে। এ মেশিনের সাহায্যে ধান পাতা রোপন করা হবে। এটিই আশাশুনিতে প্রথম মানুষের হাতের পরিবর্তে মেশিনের সাহায্যে রোপন কাজ। সকল খরচ বহণ করবে কৃষি বিভাগ। ধান চাষে প্রয়োজনীয় সার সরবরাহ ও পরিমিত ব্যবহারে কৃষি বিভাগের নজরদারি ও পরামর্শ অব্যাহত থাকবে। একই স্থানে ৫০ একর জমিতে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিত পদ্ধতিতে ধান চাষের উদ্যোগ এলাকার কৃষকদেরকে অনুপ্রাণিত ও শিক্ষনীয় হয়ে উঠবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ধান চাষকে রোগ বালাই সুরক্ষা, প্রয়োজনীয় সার (রাসায়নিক/জৈব), পানি ও পরিচর্চার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হবে। ধান কাটার সময় হলে যাতে কম খরচে, স্বল্প সময়ে ধান ঘরে তোলা যায় সেজন্য কম্বাইন হারভেষ্টার দিয়ে ফসল কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই করার ব্যবস্থা করা হবে। অর্থাৎ শ্রমিক সংকট দূর করা, উৎপাদন খরচ কমিয়ে কৃষকদেরকে লাভবান করে ধান চাষে সম্পৃক্ত করতে মেশিন দিয়ে ধান চাষে যান্ত্রিকীকরণ কাজে উদ্বুদ্ধ করা হবে। এতদিন এলাকার কৃষকরা ছবিতে ধান চাষ ও ফসল কাটা মাড়াই ঝাড়াই কাজ দেখে এসেছেন। এখন তারা স্বচক্ষে আধুনিক ও যান্ত্রিকীকরণ চাষাবাদ দেখতে সুযোগ পেয়েছে। এবং সেই মহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় কৃষকরা দিন গণনা করে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাজিবুল হাসান জানান, সরকার তথা কৃষি বিভাগ কৃষি কাজকে যান্ত্রিকীকরণের মধ্যদিয়ে কৃষি ও কৃষকদেরকে সফলতার দিকে নিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা আশাশুনিতে এতদিন আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহারে কাজ করে অধিক ফসল উৎপাদনে কাজ করেছি। বর্তমানে সর্বাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকদের সম্পৃক্ত ও উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করছি। আশা করি এভাবেই আশাশুনির কৃষি ও কৃষকরা সফলতার দিকে ধাবিত হবে। বিদেশ নির্ভরতা কাটিয়ে নিজেরা নিজেদের খাদ্য উদপাদনে সক্ষমতার পাশাপাশি উদ্বৃত্ত ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে সক্ষম হবে। এবছর ৫০ একর জমি যান্ত্রিকীকরণের আওতায় আনা হয়েছে। আশা করি আগামী অধিকাংশ ধানের জমি এ পদ্ধতির আওতায় আনা সম্ভব হবে।
আশাশুনিতে সমলয়ে চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে
পূর্ববর্তী পোস্ট