
সাতনদী অনলাইন ডেস্ক: দুই বছর ধরে এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হারুনুর রশিদের (৩০)। সে সময় প্রেমিক যুগলের অন্তরঙ্গ অনেক সময় কাটে। কৌশলে সেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি গোপনে ধারণ করে রাখেন প্রেমিক। নানা কারণে তাদের প্রেমের সম্পর্ক আর টেকেনি। এখন প্রেমিকার সেই অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সাবেক প্রেমিকার কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা নেয় হারুন।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ভিকটিম বোয়ালিয়া মডেল থানায় এসে ওই হারুনের বিরুদ্ধে পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২-এর ৮(১)(২)(৩) ধারায় মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার আসামির পুরো নাম মো. হারুনুর রশিদ (৩০)। তিনি বাগমারার নামকান পাড়ার শাহজাহান প্রামানিকের সন্তান।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
তিনি জানান, হারুনুর রশীদ আসলে ওই তরুণীর সঙ্গে দু’বছর ধরে প্রেমের অভিনয় করেছেন। মেয়েটির দুর্বলতার সুযোগে হারুন তার অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। নানা কারণে মনোমালিন্য হলে এখন তাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই। গত ১১ জানুয়ারি মেয়েটি জানতে পারেন, হারুন অন্য একটি নামের ফেসবুক আইডি থেকে তার ভিডিও এবং ছবি পরিচিতদের ম্যাসেঞ্জারে পাঠাচ্ছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে ওই তরুণী হারুনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসব মুছে ফেলার জন্য হারুন তখন তিন লাখ টাকা দাবি করেন। মানসম্মানের ভয়ে ওই তরুণী বিভিন্নভাবে টাকা ম্যানেজ করে হারুনের হাতে তুলে দেন। কিন্তু তারপরও হারুন থামেননি। আগের মতোই তিনি ভিডিও এবং ছবি ছড়াচ্ছিলেন ইন্টারনেটে। দাবি করছিলেন আরও টাকা। এ নিয়ে ভুক্তভোগী তরুণী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় হারুনকে তার নিজ গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে আনেন।
পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, হারুনের মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটি ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। এতে বোঝা যাবে, এই মুঠোফোন দিয়ে হারুন আর কোনো তরুণীর সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছেন কিনা। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা মঙ্গলবারই হারুনকে আদালতে তুলবেন। আদালতে তার রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাকে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।