
হাবিবুর রহমান: তালায় হাইব্রিড আওয়ামী লীগের পাতিনেতা, চরমপন্থী বাহিনীর সদস্য, সরকারী কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত ভূমিদস্যু, দখলবাজ, চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজদের কব্জায় রসাতলে গিয়েছে তালা উপজেলা। তাদের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে গঠিত করেছে তৎকালীন চরমপন্থী বাহিনীর সদস্য ও বিশেষ বাহিনী নিয়ে দুটি স্পেশাল টিম। এমনকি এসকল সরকারী কর্মচারীদের সরব উপস্থিতির দেখা মেলে বিভিন্ন দলীয় অনুষ্ঠানেও।
তালা উপজেলা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে আওয়ামী লীগের পাতিনেতা, চরমপন্থী বাহিনীর সদস্য, সরকারী কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত তালিকায় রয়েছে আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত নেতা ও আলোচিত লুৎফর নিকারী হত্যা মামালা প্রধান আসামী, ভ‚মিদস্যুদের গডফাদার সরদার গোলজার, শফি সরদার, শিমুল, তৎকালীন চরমপন্থী বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড সিরাজুল মোড়ল, উপজেলা সমবায় অফিসের কর্মকর্তা অজয় কুমার ঘোষ, উপজেলা নির্বাহী অফিসের হিসাব সহকারী মনিরুজ্জামান মনির সহ আরও অনেকে।
উপজেলা সমবায় অফিসের কর্মকর্তা ও ঘোষ নগর গ্রামের অমল ঘোষের পুত্র অজয় কুমার তালায় সরকারী চাকুরী করে। সেই সুবাদে দখলবাজদের সাথে আতাঁত করে জমি জবর দখল করে হয়েছেন কোটিপতি। এই অজয় কুমার তালা উপজেলা সমবায় অফিসকে গড়ে তুলেছেন নিজের মত করে। সেখানে সরকারী কোন সুবিধা নিতে গেলে তাকে দিতে হয় বিশেষ অংকের অর্থ। সমবায় অফিসে সমিতির লাইসেন্স ও লাইসেন্স আপডেট করতে গেলে ফাইল প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা না দিলে কাজ না হয়ে ঝুলে থাকবে। এমনকি সরকারী ওই অফিসে দিনে ও রাতে গোপনে-প্রকাশ্য বৈঠক করেন তালা ক্ষমতাশালী ভ‚মিদস্যুরা। তালা রাজ্জাক ডেকোরেটর ও সমবায় অফিসে হলো ভ‚মিদস্যুদের বৈঠকখানা। এসকল ভ‚মিদস্য‚রা বিবাদমান জমির মালিক দুই পক্ষের সাথে আলোচনা বসেন মীমাংশার নাম করে। পরে বিবাদমান জমি তাদের নিজেদের নামে লিখে নেয় তালার এই ভূমিদস্যুরা। এরপর করা হয় দখল কার্যক্রম। তার চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে তালা উপজেলা হাসপাতালে সামনে ও টেলিফোন এক্সচেজ্ঞ অফিসের পিছে ৩ একর জমি জবর দখল করার বিশেষ উৎসবে মেতে উঠেছেন এই সকল ভূমিদস্যুরা। যার সাথে সরাসরি অজয় কুমার ঘোষ জড়িত। প্রকাশ থাকে যে, জরীপ ৩৫ ডিপি ২০৬৫ খতিয়ানে ২.৯৩ একর জমির পুরো জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে দখল করার চেষ্টা করছে তারা। উক্ত খতিয়ানে ১ নং ক্রমিকে আকিমুদ্দীন শেখ এর নামের নিচে গ্রুপ লাইন টানা এবং অত্র খতিয়ানে আবুল কাশেম গংদের কোন দখল নাই। জরীপে ৩১ ধারা শেষে যা প্রিন্টে চলে যায়। কিন্তু জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে পর্চা সৃষ্টি করে জমির রেষ্ট্রিঃ করে নাম পত্তন করেছে অজয়। জমি দখলে না থাকলে জমির নিবন্ধন ও নামপত্তন করা যায়না। কিন্তু তারপরও জাদুবলে অজয় এসএ ১৪৩ নং খতিয়ানের ২৭৭ দাগের ২.৯৩ একর জমির মধ্যে ৬ শতক জমি নিজ নামে নিয়েছে প্রশাসনিক ঝামেলা সামাল দেয়ার জন্য।
অজয় কুমার ঘোষ তার আপন কাকা মাষ্টার দুলাল ঘোষের কয়েক ১ একর ৭৪ শতক ভিটা বাড়ি ও ১২ বিঘা ঘেরের জমি জোর প‚র্বক দখল করে নিয়েছে। এর পাশপাশি অজয় কুমার ঘোষ তালার স্থানীয় হওয়ার সুবাদে সরকারী চাকুরীর সাথে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তার উপস্থিতি ও তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিতে উপজেলার কিছু পাতিনেতা এবং পোড় খাওয়া কিছু আওয়ামী লীগ নেতার ছবি পোস্ট করে নিজের সুবিধা হাসিল করে চলেছেন।
এই সমবায় অফিসের কর্মকর্তা অজয় কুমার ঘোষের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমবায় নেতারা বলেন, তালার সমবায় দপ্তরে কোন কাজ করতে গেলে অজয় কে মোটা অংকের ঘুষ দিতে হবে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার সন্ত্রাসী ও ভ‚মিদস্যু বাহিন দ্বারা হেনস্তা করা হয়। মূলত প্রতিমাসে অজয় কুমার ঘোষ অফিস থেকে মোটে না হলেও ৩ লক্ষ টাকা ইনকাম করেন।
অজয় কুমার ঘোষের বড় কাকা মাষ্টার দুলাল ঘোষের মেয়ে জানান, আমরা এখন খুব অসহায়ত্বর মাঝে দিন যাপন করছি। এই অজয় ও তার বাবা অমল ঘোষ তৎকালীন ইউএনওর মাধ্যমে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমাদের দাদু কাছ হতে প্রাপ্ত ১ একর ৭৪ শতক জমি দখল করে নিয়েছেন। ঘেরের ১২ বিঘা জমি দখল করে বিক্রয় করে দিয়েছেন অজয়। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া তালায় কিছু ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের সাথে অজয় সখ্যতা গড়ে তুলে বিরোধপূর্ণ ৪ শতক জমির একটি জাল দলিল তৈরী করে ৮ শতক জমি দখল করার পায়তারা করছেন।