শেখ এনামুল বাসার টিটো, ডুমুরিয়া(খুলনা) থেকে:
ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল সৈয়দ ঈসা টেকনিক্যাল এন্ড বি এম কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এবং দ‚র্নীতির তদন্তে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের শুনানীর মধ্য দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এদিকে নিজের অপকর্ম ঢাকতে অধ্যক্ষ জি এম আব্দুস সাত্তার নানা জায়গায় দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইলে অবস্থিত সৈয়দ ঈসা টেকনিক্যাল এন্ড বি এম কলেজের অধ্যক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন, এমপিও ভ‚ক্তির কথা বলে কমপক্ষে ৪০ জনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানটিতে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ওই প্রতিষ্ঠানের একাধিক প্রভাষক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ১০ টায় উভয় পক্ষ নিয়ে শুনানী করেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল-আমিন। শুনানীতে অধ্যক্ষের বেশ কিছু অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পান তিনি। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মোঃ আরাফাত হোসেনকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেবাশীষ কুমার বিশ্বাস, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান ও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মোঃ মনির হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় উপজেলা অডিটোরিয়ামে শুনানী হবে বলে জানা গেছে।
ওই শুনানীতে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তকে তাদের স্বপক্ষে প্রমানাদি নিয়ে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি অভিযোগের পর থেকে কলেজে তিনি অনিয়মিত। এক প্রকার কলেজে আসছেন না বলে জানা গেছে। এমনকি ১৬ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী অনুষ্ঠানে অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তা আসলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। একটি দায়িত্বশীল সুত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাকালিন থেকে নানা কৌশলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ জি এম আব্দুস সাত্তার।
তবে গেল সরকারের ভ‚মি মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী সমীর দে গোরা সরাসরি সহযোগিতা করায় তার সব অপকর্ম ঢাকা পড়ে যায়। গেল ২০২২ সালে সাধারণ শাখা এমপিও ভ‚ক্তির পরে ওই গোরাকে সামনে রেখে এমপিও ভ‚ক্তির কথা বলে প্রায় ৪০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন অধ্যক্ষ। কিন্তু অসংগতি থাকায় সিংহভাগ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন না হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন অধ্যক্ষ জি এম আব্দুস সাত্তার। এদিকে গেল ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তন হওয়ায় শমীর দে গোরা লাপাত্তা।
ফলে অধ্যক্ষ এসব অপকর্ম ঢাকতে নতুন পথে হাটছেন বলে জানা গেছে। তিনি ইতিমধ্যে খুলনার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার বাসায় দেনদরবারে নেমেছেন। এসব অপকর্ম ঢাকতে ঢাকা কারিগরি বোর্ডের অসাধু কয়েক কর্মকর্তার সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও সুত্রটি দাবি করেছে। তদন্ত কমিটির আহবায়ক আরাফাত হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে তদন্ত কর্মকান্ড শুরু করেছি। সঠিক তদন্তের স্বার্থে সব মহলের সাথে কথা বলে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, অনিয়ম ও দ‚র্নীতির তথ্য উপাত্ত প্রমানিত হলে বিধি সম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।