নিজস্ব প্রতিবেদক: ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হয়ে ওঠা সাতক্ষীরা সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি’র ঈগল ভোটারদের কাছ থেকে পাচ্ছে বাড়তি সুবিধা। অন্যদিকে সদরে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে না পারা ও আওয়ামী লীগের একটি অংশের সমর্থন পাওয়ায় শক্ত অবস্থান তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি।
উন্নয়ন, সামাজিক কর্মকান্ডসহ পুরো মেয়াদে জনগনের পাশে থাকায় সাধারণ জনগণের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছে ঈগল প্রতীকের বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। পূর্বের উন্নয়নের কথা মাথায় নিয়েই সতঃস্ফ‚র্তভাবে তার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিগত ১০ বছরে সাতক্ষীরা সদরের উন্নয়নে তার অবদান ও জনপ্রিয়তায় তৈরি হয়েছে তার নিজস্ব ভোটার। পেয়েছেন দিনে দিনে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হয়ে ওঠা সাতক্ষীরা সদর ২ আসনে তৃণমূল ভোটারদের পূর্ণ সমর্থন। অন্যদিকে, বিগত তিন দশকের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে ধীরে ধীরে ভোটার হারাচ্ছে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক। গণতন্ত্রের ধারায় মাত্র একবারই মহাজোটের পূর্ণ সহযোগীতায় জাতীয় পার্টি সাতক্ষীরা সদর আসনে জয়লাভ করে। সাতক্ষীরা সদরে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চেয়েছিলো জেলার সভাপতি শেখ আজহার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু। সাতক্ষীরা সদর আসনে দল মত নির্বিশেষে ইমেজধারী প্রার্থী ছিলো জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শেখ আজহার হোসেন। সেদিক থেকে শেখ আজহার হোসেন মনোনয়ন পেলে লাঙ্গলে ভোট বৃদ্ধি পেতো।
১৯৯১এর ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান ২৩ হাজার ১ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিলো। ১৯৯৬ সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ ৫৩ হাজার ৭৮৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। ২০০১ অষ্টম এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ ১২ হাজার ৬৩৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। তবে সেবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট লাভ করে আওয়ামী লীগের মো. নজরুল ইসলাম ৬৯ হাজার ৮৬১। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির মহাজোটে নির্বাচন করে। এই নির্বাচনে সাতক্ষীরা সদর আসনে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির এমএ জব্বার ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ধারণা করা হয় এই ভোটের দুই তৃতীয়াংশ আওয়ামী লীগ ও ভাসমান ভোটারদের। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবি তিনি ৩২ হাজার ৮৫৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাইফুল করিম সাবু পান ১৫ হাজার ৭৮৯ ভোট। তবে এই দুই প্রার্থীর বেশির ভাগ ভোটই আওয়ামী সমর্থকদের। ২০১৮ এর একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ১ লাখ ১০ হাজার ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিগত ৬টি সংসদ নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় জাতীয় পার্টি ও বিএনপির ভোটের সম্মিলীত ভোটারদের থেকেও আওয়ামী লীগের ভোট বেশি। সেই সাথে ভাসমান ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে পারলে সাতক্ষীরায় শক্তিশালী অবস্থানে আওয়ামী লীগ। কারণ বিগত ৬টি নির্বাচনে প্রমানিত হয়েছে যে সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগের একটি ভোট ব্যাংক। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা সদর ২ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থনে কেন্দ্র পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থক ভোটাররা ভোট আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবির’র ঈগল’কে দিবে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি দলীয় ভোট পেলেও সদর আসনে বিজয়ী হতে লাঙ্গলের প্রার্থীর আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থনের প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে দু’একজন শীর্ষ নেতার নির্দেশনায় তৃণমূল আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা কর্মী এবং সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক লাঙ্গল প্রতীকে সিল মারবে এমনটি নিশ্চিত নয়। বরং উল্টো ঘটনা ঘটতে পারে। দুই একজন শীর্ষ নেতার নির্দেশনা অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে তারা শক্ত অবস্থান নিতে পারে।