নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়া-আসার সময় বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের আর্থিক হয়রানিসহ নানা জটিলতা ও ভোগান্তির অভিযোগ করেছে ভারত ফেরত একাধিক বাংলাদেশী যাত্রী।
বুধবার ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাত্রী সংবাদ কর্মি ইয়ারব হোসেন, কাজল রানী, আতাউর রহমান, সুবোল রায় সহ একাধিক যাত্রীরা জানান, স্থলবন্দরে বাংলাদেশ থেকে সহযোগীতা পেলেও বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমস অফিসে ঢোকার সাথে সাথে পাসপোর্ট বই হাতে নিয়েই দু’শত টাকা দাবি করা হয়। ওই টাকা ঘুষ না দিলে ব্যাপক হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি টাকা (ঘুষ) না দিলে অনেক বৃদ্ধ ও শিশু যাত্রীদের ৬/৭ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে মানুষিক ভাবে হয়রানি করছে। ফলে বাংলাদেশী যাত্রীরা এই অবৈধ টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। একইসাথে অভিযোগকারী যাত্রীরা বন্দরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে, গত মঙ্গলবারে ভারত ফেরত এক বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রী জানান, ভারতে প্রবেশের পর ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি যাত্রীদের নিকট থেকে বিভিন্ন অজুহাতে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে জোরপুর্বক অবৈধ ভাবে (ঘুষ) নিচ্ছে। আবার ভারত থেকে ফেরত আসার পথে ভারতীয় ১০০ রুপি কাস্টমস অফিসে ঘুষ হিসেবে নিচ্ছে। এছাড়া পরিবারের জন্য কিছু জিনিস পত্র নিয়ে আসলে দাবি করা হয়। মোটা অংকের টাকা। তিনি বলেন, এসব অবৈধ টাকা নেয়ার বিষয়ে কোন যাত্রী প্রতিবাদ করলে তাদেরকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ৭/৮ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখছে। যদিও পরে আসা যাত্রীরা টাকা দিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বৈধভাবে পরিবারের সদস্যদের জন্য সামান্য জিনিসপত্র কিনে আনলেও ভারতীয় কাস্টমসে হয়রানির শিকার হতে হয়। কোন প্রকার জিনিষপত্র বৈধভাবে সাথে নিয়ে আসলেও তাদেরকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। তিনি অবিলম্বে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমস অফিসে বাংলাদেশী যাত্রীদের নিকট থেকে অবৈধ টাকা গ্রহন ও হয়রানি বন্ধের জোর দাবি জানান।
এদিকে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমস অফিসে টাকা (ঘুষ) দেওয়া নিয়মিত ঘুষের রাজ্যে পরিণত হয়েছে জানিয়ে শিখা নামে এক পাসফোর্টধারী যাত্রী বলেন, একজন পাসপোর্টধারী যাত্রীকে বৈধভাবে যেতেও ভ্রমণ করের বাইরে আরও অন্তত এক হাজার বাংলাদেশী টাকা দিতে হচ্ছে। যা বাংলাদেশী যাত্রীদের সাথে চরম বৈষম্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার যাত্রী গমনাগমন করছে। হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশী যাত্রীদের নিকট থেকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হয়রানি ও অর্থ গ্রহনের বিষয়ে একাধিক বাংলাদেশী যাত্রীদের নিকট থেকে মৌখিক ভাবে শুনেছেন এবং বিষয়টি সমাধানে ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমসের কর্মকর্তা অশোক বাবুর সাথে কথা বলেছেন। ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের এই কর্মকর্তা দ্রুতই বিষয়টি সমাধান হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।