নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার ১ ২ ও ৯ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্টার নিয়োগে মোটা অঙ্কের টাকা উৎকোচের বিনিময়ে বিধি লঙ্ঘন করে নিয়োগের পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অত্র এলাকার নিকাহ্ রেজিস্টার মাওলানা কামরুল ইসলামের মত্যুর পর উক্ত পদ শূন্য হয়। ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর এই ওয়ার্ডের নিকাহ্ রেজিস্টার নিয়োগের নিমিত্তে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় এবং নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। কিন্ত অপূর্ণাঙ্গ প্যানেল পাঠালে আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয় ৭/২-এ এন১৩/৮৮ (অংশ) ১৬৭ অনুযায়ী এই প্যানেল বাতিল করে।
পরবর্তীতে ২০২২ সালের ১৭ জুলাই পুনরায় একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় উক্ত পদে। সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩রা আগস্ট ২০২২ দরখস্ত দাখিলের শেষ সময় হয় এবং ১৫ দিনের ভিতরে নিয়োগ বোর্ড হওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে ৩ মাস পর অর্থাৎ ২১ নভেম্বর ২০২২ তারিখে সকল প্রার্থীদের অগোচরে কোন নিয়োগ বোর্ড ছাড়াই প্যানেল প্রস্তুত করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়।
এর আগে ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অফিস কক্ষে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আলেম পাশ এবং উল্লেখিত ৩টি ওয়ার্ডের যেকোন একটির স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার কথা থাকলেও আবেদনকারী ৪ জনের মধ্যে ৩জনই শিক্ষাগত যোগ্যতায় পিছিয়ে এবং ১জন উক্ত ওয়ার্ডগুলোর একটিরও স্থায়ী বাসিন্দা না। কিন্তু একজন প্রার্থী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নিকাহ্ রেজিস্টার মাওঃ মোঃ আমিরুল ইসলামের ছেলে মোঃ কামরুল ইসলাম ১,২ ও ৯ নং ওয়ার্ডের নিকাহ্ রেজিস্টার পদে আবেদন করে যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিয়মবহির্ভূত। পরবর্তীতে ৩১ আগস্ট ২০২১ কামরুল ইসলাম ৩ নং ওয়ার্ড হতে ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হওয়ার জন্য আবেদন করে। সে সময়ও তার নিয়োগ প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিলো। কিন্ত পূর্ণাঙ্গ প্যানেলটি বাতিল হয় এবং যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে “কলারোয়ায় নিকাহ রেজিস্টার নিয়োগে চরম অনিয়ম” শিরোনামে প্রকাশিত হয়।
আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের ২০১৩ সালের ২০ অক্টোবর গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে (৬ক) যদি কোন সিটি কর্পোরেশন,পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার কোন নিকাহ রেজিস্টারের মৃত্যু বা অবসরজনিত কারণে লাইসেন্সের কার্যকরতার অবসান ঘটে তাহা হইলে উপ-বিধি (৪) এর অধীন নিকাহ্ রেজিস্টারের লাইসেন্স প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রার্থী বাছাই এবং উপ-বিধি (৬) এর অধীন লাইসেন্স মঞ্জুরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নিকাহ্ রেজিস্টারের পুত্র সন্তানকে বিধি ৮ এর অধীন যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে অগ্রাধিকার প্রদান করিতে হইবে। সেক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পাওয়ার পায়তারাকারী মোঃ কামরুল ইসলাম এ পদে সম্পূর্ণ অযোগ্য। এছাড়াও কামরুল ইসলাম নিয়োগ না পাওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন বিবাহ সম্পন্ন করাচ্ছেন।
এ বিষয়ে অত্র ওয়ার্ডের সাবেক নিকাহ্ রেজিস্টার মৃত মাওলানা শেখ কামরুল ইসলামের পুত্র শেখ তামিম হাসান বলেন, গেজেট অনুযায়ী পিতার ওয়ারেশ হিসেবে এই পদের অগ্রাধিকার আমার আছে। তাছাড়াও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক আলেম পাশ সনদপত্র এবং উল্লেখিত ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা। তারপরও কামরুল ইসলামের নাম প্রথমে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল গঠন করে মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। গেজেট ও সমস্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেন আমাদের অগোচরে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রস্তুত করে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে আমার বোধগম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করি।
এবিষয়ে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি গেজেট অনুযায়ী হওয়া উচিত। কি কারণে হচ্ছে না বিষয়টি আমার অজানা।