
সচ্চিদানন্দ দে সদয়,আশাশুনি থেকে: আশাশুনির একশ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বিপুল পরিমান নকল ও ভেজাল ঘি তৈরি করে বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর নকল ঘি তে ব্যবহার করা হচ্ছে সয়াবিন,ভেজিটেবল ফ্যাট,রাসায়নিক দ্রব্য ও কলার ফ্লেভার। এ সকল নকল ঘি খাওয়ার ফলে জনসাধারন ক্যান্সার,ডায়াবেটিস,কিডনী রোগ সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একাদিক সূত্র জানিয়েছে আশাশুনির বুধহাটার শ্বেতপুর, শোভনালী, কুল্যার কচুয়া, কাদাকাটি, দরগাপুরের, শ্রীধরপুর, আশাশুনি, বড়দলের গোয়ালডাঙ্গা, শ্রীউলার নাকতাড়া, খাজরারর কাপসান্ডা, গদাই পুর, আনুলিয়া, প্রতাপনগর, ফিংড়ীর হাবাসপুর সহ পার্শ্ববত্তী বাঁকা, কাঠিপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে নকল ঘি তৈরির চক্র ও কারখানা।এ সকল কারখানায় উৎপাদিত ঘিয়ের কোটায় নামী দামী কোম্পানির লেবেল লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজার জাত করা হচ্ছে।
জানাগেছে,এসব এলাকার দুধ ও ঘি ব্যবসায়ীরা এক মন দু থেকে আট কেজি ছানা ও তিন কেজি ননী তৈরি করেন।তিন কেজি ননী জ্বালিয়ে দেড় কেজি খাঁটি ঘি তৈরি করেন।অথচ অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় খাঁটি ঘিয়ের সাথে নানা উপকরন মিশিয়ে ভেজাল ঘি- কে খাঁটি ঘি হিসাবে বাজারজাত করছে। এই ঘি কিনে ক্রেতা সাধারণ শুধু আর্থিক ক্ষতির শিকারই হচ্ছেন না মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে পড়ছেন।
জানা গেছে, সয়াবিন তেলের সাথে ১০ কেজি খাঁটি ঘি.,পাঁচ কেজি গোল আলুর পেষ্ট,দুই কেজি ভেজিটেবল ফ্যাট ও কলার ফ্লেভার ভাল ভাবে মিশিয়ে নকল ঘি তৈরি করা হচ্ছে। ক্রেতাদের দেখে বোঝার উপায় থাকে না এটা নকল কি আসল। ভেজাল ও নকল ঘি বাহ্যিক ভাবে দেখে চেনার উপায় থাকে না। প্রতি কেজি নকল ঘি তৈরিতে ব্যয় হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর বাজারে ও ক্রেতা সাধারনের কাজে বিক্রয় করছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। ফলে ভেজাল ঘি এর ব্যবসা করে এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ী রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিনত হচ্ছে। এ দিকে ভোক্তরা এই ভেজাল ঘি খেয়ে নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা জানান, খাঁটি ঘিয়ের গলনাংক থাকে ২৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। এর কম তাপ মাত্রায় জমাট না বাঁধলে বুঝতে হবে এতে ভেজাল রয়েছে। ২৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বেশী তাপ মাত্রায় ঘি জমে না। আসল ঘিয়ে পানি থাকবে শূন্য দশমিক একভাগ। ভোজ্য তেলের গন্ধ হয় তেঁতো এবং ঘিয়ের গন্ধ হবে চমৎকার।
অপর দিকে ভেজাল ঘি খাওয়া মানে বিষ খাওয়া। এর ফলে দ্রæত কিডনী নষ্ট হয়ে যাবে। ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হার্ট এ্যাটাক, চোখের অসুখ বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা। এসব ভেজালের বিরুদ্ধে এক্ষনেই ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে এর পরিনাম ভয়াবহ হবে বলে সচেতন মহল মন করেন।