

ছবির ক্যাপশন: সরকারি রাস্তার ৬ ফুট দখল করে বাড়ির বিম ঢালাই দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষক।

মাপ জরীপের সময় তোলা ছবি।
আহাদুর রহমান জনি: রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মান অব্যাহত রেখেছে মাদ্রাসা শিক্ষক সলিমুদ্দিন। একাধিকবার ইউনিয়নের নায়েব ও মেম্বার কাজ বন্ধ করলেও অদৃশ্য শক্তিতে রাস্তা দখল বজায় রেখেছে সলিমুদ্দিন। রাস্তা দখল নিয়ে সাবেক মেম্বার থেকে পাতি নেতাদের অর্থ নেওয়ার ঘটনাগুলো আগরদাড়ির চায়ের দোকানের আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তুতে পরিনত হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদরের আগরদাড়ি ইউনিয়নের (১নং ওয়ার্ড) জেএল ৫৫, এসএ ৭৬ ও আর,এস৭৯ দাগের সরকারি রাস্তার সাথে মাদ্রাসা শিক্ষক সলিমুদ্দিনের জমি আছে। সম্প্রতি তিনি তার গ্রামের জমি বিক্রী করে কাঠালতলায় বাড়ি তৈরিতে হাত দেন। তবে কোন রকম মাপের বালাই না রেখে রাস্তার ৬ ফুট দখল করে ভিটা কাটেন। এ বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে স্থানীয় মেম্বার মাসুদ রানা রাস্তা দখলে বাধা প্রদান করেন। কিন্তু তখন মাদ্রাসা শিক্ষকের পত্নি মেম্বারকে মারতে উদ্যত হলে তিনি চলে আসেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে নিজের জমির সীমানা নির্ধারণ পূর্বক সলিমুদ্দিনকেক বাড়ি তৈরি করতে বলা হয়। সে মোতাবেক গত ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চারজন আমিন (জমি জরীপকারী) ওই স্থানে মেপে দেখেন সলিমুদ্দিন সরকারি রাস্তার ৬ ফুট দখল করে বাড়ি তৈরির ভিট কেটেছে। পরবর্তী দুই দিন রাস্তা দখল বজায় রেখে বাড়ি নির্মান অব্যাহত রেখে পরের দুই দিন থেকে রড কাটা ও জোড়া দেয়ার কাজ শেষে বেজ ঢালাই দেওয়া হয়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে স্থানীয় মেম্বার মাসুদ রানা গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাদি হয়ে সহকারি কমিশনা (ভূমি) সদর বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে মেম্বারের অভিযোগটি পরদিন ১৪ সেপ্টেম্বর ভূমি অফিসের সুনীলের সহায়তায় অভিযোগটি শামিম নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে তুলে নেয় সলিমুদ্দিন। এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসা শিক্ষক সলিমুদ্দিনের সাথে যোগযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে সরকারি এ রাস্তা দখল কেন্দ্র করে পকেট ভারী করেছে স্থানীয় সাবেক জনপ্রতিনিধি ও পাতি নেতারা। তাদের সকলকে ম্যানেজ করার দায়িত্বে আছে শামিম নামের ওই ব্যক্তি। টাকার ভাগ পেয়েছে আশা মেম্বার, সাবেক মেম্বার খলিল। এ ছাড়াও ইউনিয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাও পেয়েছেন মোটা অংকের টাকার ভাগ। তাদের চাপে প্রতিবাদ বন্ধ করেছে স্থানীয়রা। এদিকে চেয়ারম্যান ও মেম্বার নতুন হওয়ায় তারাও ভোটারদের না চটিয়ে নিরবে মেনে নিয়েছেন দখলের বিষয়টি।
এ নিয়ে আগরদাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাতনদীকে জানান, বিষয়টি আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।
আগরদাড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদ রানার ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আগরদাড়ি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত নায়েব আব্দুল হামিদ চৌধুরী জানান, আমি বেশ কয়েকবার তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু কোন ভাবেই তারা মানতে নারাজ। তবে স্থানীয় কারও অভিযোগ পেলে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুমনা আইরিন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর ভূমি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ আজাহার আলী এ বিষয় নিয়ে বলেন, সরকারি জায়গা কেউ দখলে নিলে অবশ্যই আমরা উচ্ছেদ করবো। সরকারি জায়গা কাউকে নিতে দেওয়া হবে না।