
আশাশুনি প্রতিবেদক: আশাশুনি উপজেলার তেঁতুলিয়া বøকের গণমূখী বীমা প্রকল্পের বøক অফিস বন্ধ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে। বীমা কর্তৃপক্ষের কাছে মেয়াদ উত্তীর্ণ পলিসি হোল্ডাররা ৬ বছর আগে টাকা ফেরৎ পেতে আবেদন করলেও এখনো টাকা দেওয়া হয়নি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে নাগালে না পেয়ে পলিসি হোল্ডাররা বøক কর্মকর্তাকে নানাভাবে নাজেহাল ও সম্মানহানি ঘটিয়ে চলেছে।
সানলাইফ ইনসিওরেন্স কোঃ লিঃ এর গণমূখী বীমা প্রকল্পের তেঁতুলিয়া বøক (কোড-৮৭১) এর বøক কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন, জগদীশ চন্দ্র মন্ডল। তিনি ২০০২ সালে বাঁকা বাজার শাখায় উন্নয়ন কর্মী হিসাবে যোগদান করেন। তার কাজের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে ২০০৪ সালে তাকে তেতুলিয়া বøকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ তখন থেকে এলাকায় এসে প্রায় দ্বিগুণ মোনাফা পাওয়া যাবে এমন প্রলোভন দেখিয়ে ১ থেকে ৬ বছর মেয়াদী ৬০০০ টাকা থেকে বিভিন্ন উর্ধমূখী বীমা অংকের পলিসি খোলান। প্রথম দিকে মেয়াদোত্তীর্ণদের নিয়মিত টাকা পরিশোধ করা হলেও দ্বিগুণের থেকে অনেক কম টাকা পাওয়ায় মানুষের মধ্যে নতুন পলিসি খুলতে অনীহার সৃষ্টি হতে থাকে। যখন নতুন গ্রাহক হওয়া কমে গেল তখন তারা নতুন পলিসি না খুলতে মেয়াদোত্তীর্ণ টাকা ফেরত দিতে তালবাহনা করা হতে থাকে। এক থেকে ৬ বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে এমন শতাধিক ব্যক্তি টাকা পেতে পাশ বই জমা দিলেও তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছেনা। বলা হচ্ছে নতুন পলিসি খুললেই টাকা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে আরও ৫০/৬০ জনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে।
শতাধিক ব্যক্তি টাকা না পেয়ে বøক কর্মকর্তা জগদীশের বাড়িতে গিয়ে হুমকী দিয়ে যাচ্ছেন। পথে ঘাটে, বাজারে যেখানে পাচ্ছেন সেখানেই তার উপর চড়াও হচ্ছেন। এতে করে জগদীশ মান সম্মানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। একেত চাকুরী নেই তার উপর কর্ম করে খাবে সে সুযোগটুকুও তিনি পাচ্ছেননা। জগদীশ মন্ডল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে বলেন, তিনি প্রতিমাসে বøকের পলিসি হোল্ডারদের থেকে টাকা উঠিয়ে খুলনায় বীমা প্রকল্পের বিভাগীয় কার্যালয়ে আদায়কৃত টাকা জমা দিয়ে জমা রশিদ/প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ নিয়েছেন। সকলের থেকে আদায়কৃত টাকা পাশ বহিতে উঠিয়ে দেওয়া হতো। ২০১২ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণদের টাকা ফেরৎ দেওয়া শুরু হয়। তখন তারা কাঙ্খিত টাকা না পাওয়ায় নতুন করে পলিসি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কর্তৃপক্ষ অফিস ভাড়াও দিতে গড়িমশি করায় পরবর্তীতে অফিস ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। এরপর থেকে বারবার খুলনা অফিসে গিয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করে এসেছি। ঢাকায়ও যোগাযোগ করেছি। পলিসি হোল্ডাররা অবিশ্বাস করতে থাকলে তাদেরকে খুলনা ও ঢাকা অফিসের কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলি। এতে উর্দ্ধতন কর্মকর্তা আমার উপর ক্ষিপ্ত হতে থাকেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি বেতনের বিনিময় কর্মচারী হিসাবে কাজ করেছি। যতটাকা আদায় হয়ে নিয়মিত ও সঠিক হিসাবের মাধ্যমে বিভাগীয় অফিসে জমা দিয়ে প্রাপ্তিস্বীকার পত্র নিয়েছি। এখন তারা টাকা ফেরৎ দিতে গড়িমশি ও তালবাহনা করে যাচ্ছে। আর পলিসি হোল্ডাররা তাদের না পেয়ে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে নানাভাবে অপদস্ত ও মান অপমান করছে। আমি এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। গরীব মানুষ একদিন কাজ না করলে আমার সংসার চলেনা।
সচেতন মহলের প্রশ্ন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ও নিয়ন্ত্রিত (নিবন্ধন নং সি- ৩৯৭৫৩ (১৭২১) ২০০০) প্রতিষ্ঠান সান লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিঃ, যার অফিস দেশে অনেক স্থানে চালু আছে। ঢাকাতেও হেড অফিস রয়েছে। সেরকম প্রতিষ্ঠানের পলিসি হোল্ডাররা বছরের পর মেয়াদ উত্তীর্ণের পর টাকা ফেরৎ না পাওয়ার ঘটনা খুবই হতাশা জনক। কোম্পানীর কাছে টাকা জমা দিয়ে বৈধ কাগজপত্র কাছে থাকার পরও কেন এমন সাধারণ নিরিহ বøক কর্মকর্তা অন্যের অপরাধে দোষী হবেন? কেন তাকে পলিসি হোল্ডারদের রোষাণলে পড়তে হবে। কেন তাকে পরিবার পরিজনের মুখে খাদ্য তুলে দিতে না পেরে পালিয়ে বেড়াতে হবে? বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তারা দেখবেন কি?