ফিরোজ হোসেন: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের গোবরদাঁড়ী সর্বকাশেমপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল মাজেদ মাষ্টারের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একটি কুচক্রী মহল। তার পুত্র সাংবাদিক রাউফুজ্জামান জানান, তার পিতা সর্বকাশেমপুর মৌজায় বিভিন্ন সময়ে ডিএস খতিয়ান ৭৬, এসএ খতিয়ান ৮৬, হাল ১৬১ নং খতিয়ান, এসএ ১৪ হাল, বিএস/আরএস ৪৩ দাগ সহ বিভিন্ন দাগে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১১ বিঘা জমি ক্রয় করে। যে জমিগুলো বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত. আব্দুল মাজেদ মাষ্টার ১৯৮৬ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারী ৯৩৮ নং দলিল মূলে ক্রয় করে। সেই জমি কোমরউদ্দীন তার সাত পৌত্রকে সাড়ে ১০ বিঘা জমি দানপত্র রেজিষ্ট্রী করে দেয়। একই তারিখে ৯৪০ নং দানপত্র দলিলে এসএ ২০৮ ও ২৮৭ দাগে ১ একর ১৬ শতক জমি কোমরউদ্দীন এর ছোট পুত্র মোঃ ছহিলুদ্দীন কে রেজিষ্ট্রী দানপত্র দলিল করে দেয়। যার দলিল নং- ৯৪০ তারিখ ০৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৬। উক্ত জমি সহিল উদ্দীন ১৩৮৭/৮৬-৮৭ নামজারী মূলে ঐ জমির খাজনা প্রদান করেন। এবং ছহিলুদ্দীনের টাকার প্রয়োজনে সাতক্ষীরা কৃষি ব্যাংকে ঐ জমির দলিল বন্ধক রেখে ১২৯/৮৭-৮৮ লোন কেচে ৬ হাজার টাকা লোন উত্তোলন করেন। ঐ জমি থেকে ছহিলুদ্দীন সরদার, আব্দুল হাকিম ও আব্দুল মাজেদ মাস্টারসহ কয়েকজনের কাছে জমি বিক্রয় করে দখল হস্তান্তর করে। ৯৩৮/৮৬ বুনিয়াদে সাত পৌত্রগণ যে জমি দানপত্র মূলে পেয়েছিলেন তার মধ্য থেকে লিয়াকত আলী ১৮/০২/১৯৮৭ সালে গাভা গ্রামের জনৈক সন্তোষ কুমারের নিকট এক বিঘা জমি বিক্রয় করে ও দখল বুঝিয়ে দেন। সন্তোষ কুমার ১৩২/৯১-৯২ নিজ নামে নাম জারি করে সরকারি খাজনা প্রদান করে ভোগ দখলে থাকা অবস্থায় আব্দুল মাজেদ মাষ্টার এর নিকট ১৯৯৮ সালে জমি বিক্রয় করে দখল হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ মাস্টার ৮০/২০০৭-২০০৮ নিজ নামে নাম জারী করে খাজনাদী প্রদান করাসহ শান্তীপূর্ণ ভাবে ভোগ দখলে থাকে। ঐ জমির উপর নজর পড়ে একই এলাকার মৃত. মতিয়ার রহমান পুত্র হামিদুর রহমান ওরফে মনু কাস্টমের। মনু কাস্টম ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে ঐ জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। ব্যর্থ হয়ে
২০০৬ সালের ২২ শে জানুয়ারী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে জমি দখলের উদ্দেশ্য হামলা চালালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ মাস্টারের পুত্র মেধাবী কলেজ ছাত্র রাফেউজ্জামান রাফে নিহত হয় এবং মাজেদ মাষ্টার সহ তার অন্যান্য পুত্ররা মারাত্মক আহত হয়। একই দিনে আব্দুল মাজেদ মাষ্টার ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১২-১৩ জনকে অজ্ঞাত রেখে সদর থানায় মামলা করে। মামলা নং- ২৮, তারিখ: ২২/০১/ ২০০৬ ইং। উক্ত মামলার আসামীরা জামিন পেয়ে মুক্ত হয়ে ঐ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া, বিভিন্ন সময় হামলা করা সহ জীবননাশের হুমকী চালিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৮/০৪/২০২১ তারিখে সকালে রাফে হত্যা মামলার প্রধান আসামী হামিদুর রহমান ওরফে মনু (কাস্টম) এর হুকুমে শওকত হোসেন কফিল ওরফে কফিলউদ্দীন, রেহানা, হালিমা, খালেদা, ছালমা, আলতাফ হোসেন কিনা, আনিছ ডাকাত, ছহিলুদ্দীনসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী সালাম গাজী ও পলাশের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধার জমি থেকে আলামিনের বেকু দিয়ে লক্ষাধিক টাকার মাটি কেটে বিক্রয় করে জমির শ্রেণি পরিবর্তনের চেষ্টা করিতেছে। উপরোক্ত ব্যক্তিগণসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক ৮টি বড় আমগাছ ও কয়েকটি শিশু চটকা গাছ কেটে বিক্রয় করে। এব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসারের কাছে অভিযোগ দিলে তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি বোরহান এর নির্দেশে সুপারীঘাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই আজিম গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে জিআর ২৭২/২১, জিআর ৭৮৪/১১,জিআর ১১৪/২০০১, জিআর ১১৫/২০০১ এবং জিআর ১১৬/২০০১ মামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামী আনিছ ডাকাত কে এসআই ওসমান গণি আটক করে কোর্টে চালান দেয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ মাস্টারের পুত্র রাউফুজ্জামান আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। অপরদিকে গত শনিবার বেলা ১২টার দিকে উক্ত গাছের গুড়ি ও জ্বালানী কাঠ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ৩টি ইঞ্জিন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ কাঠগুলি জব্দ করেছে বলে জানাগেছে। ঐ কাঠগুলি উক্ত মামলার আসামী আনিচ ডাকাত জাহানাবাজ গ্রামের মোহর আলীর পুত্র আব্দুর রউফ এর কাছে বিক্রয় করেছে বলে জানাগেছে। এ বিষয় ভূক্তভোগী বিচার পেতে কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।