
লিটন ঘোষ বাপি: দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হচ্ছে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। দলীয় প্রতীকে এবারও ভোট হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে। তৃণমূলের এ নির্বাচনে লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষের।
ইসির তথ্যমতে, আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুতে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। এ জন্য চলছে জোর প্রস্তুতি। এক্ষেত্রে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম ধাপে প্রায় ৭৫০ ইউপিতে ভোট গ্রহণ হবে। প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের জন্য ১১, ১৩, ১৫ ও ১৮ মার্চ সম্ভাব্য তারিখ চিন্তা করা হচ্ছে।
আর দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ হবে মার্চের শেষ দিকে। মার্চের ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ ভোট গ্রহণ হতে পারে।
তাই আসন্ন ইউপি নির্বাচনে হাওয়া বইছে দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নে।
দেবহাটা উপজেলার উত্তরে অবস্থিত কুলিয়া ইউনিয়ন। নির্বাচন অফিস সূত্র হিসেবে কুলিয়া ইউনিয়নে মোট ভোটার ২৫ হাজার ৬ শত ৮৬ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ১ শত ১২ ও মহিলা ১২ হাজার ৫ শত ৭৪ জন । আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নে সম্ভাব্য প্রার্থী ও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। হাটে, বাজারে, চায়ের দোকানে, মাঠে-ঘাটে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সেই সাথে সম্ভাব্য প্রার্থীরাও এলাকার প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে গণসংযোগ, মটরসাইকেল শোভাযাত্র সহকারে শো-ডাউন বাড়িয়েছেন।
এলাকার মানুষের কাছে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সাথে নিজের অবস্থান ও জানান দিচ্ছেন । অনেকেই লবিং শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়ন প্রাত্যাশায়। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশা করে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন ।
তবে মামলার জটে পলাতক থাকায় দেবহাটা উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল কারোর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি তবে কুলিয়া ইউনিয়ন জুড়ে জামায়াত- বিএনপির হয়েছেন বড় অংকের ভোট ব্যাংক। ভোটে অংশ না নিলেও তাদের ভোট জয় পরাজয় নির্ধারণ করতে পারে।
আওয়ামীলীগ থেকে আসন্ন কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান ১নং কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুল হক, দেবহাটা উপজেলা যুব লীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বিজয় ঘোষ, সাতক্ষীরা জেলা বাস মালিক সমিতির কর্মকর্তা বাবু প্রাণনাথ দাশ সহ আরও কয়েকজন নৌকা প্রতীক মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যাই, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও ইতোমধ্যে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সহ সকল প্রার্থীরা অগ্রিম ব্যানার ফেস্টুন ও প্যানা বোর্ড টানিয়েছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান আসাদুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সালে সাধারণ জনগন বিপুল ভোটের মাধ্যমে আমার বড় ভাই ইমাদুল ইসলাম কে নির্বাচিত করেছেন। বর্তমানে আমি প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। আমি আমার সর্বত দিয়ে চেষ্টা করেছি জন-সাধারনের পাশে থাকার। সরকারি অর্থ ও আমাদের নিজস্ব অর্থ দিয়ে চেষ্টা করে চলেছি এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ করার। এজন্য কুলিয়া ইউনিয়নের সাধারন গরিবের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পেরেছি। আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আমার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবো। সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ হবে একটি রোল মডেল ।
উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বিজয় ঘোষ বলেন, আমি দীর্ঘদিন সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। কুলিয়া ইউনিয়নকে মাদক, দুর্নীতি, দারিদ্রমুক্ত ও জবাবদিহিতা মূলক ইউনিয়নে পরিণত করতে হবে। সেই লক্ষে সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে আমি কাজ করে চলেছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে আগামী নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কুলিয়া ইউনিয়ন কে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা মূলক ইউনিয়নে পরিণত করবো।
দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রাথী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কাদের ভুমিকা থাকবে এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- তৃণমুল নেতৃবৃন্দের ভোটাভুটির মাধ্যমে বাছাই করা হবে, উপজেলা এবং জেলার ৬ জনের বোর্ড সে সকল নেতৃবৃন্দ তৃণমুল পর্যায়ে ভাল অব¯’ানে থাকবে তাদের মধ্যে থেকে ৩ জনকে তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। কেন্দ্র বিভিন্ন গয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে তথ্য নিয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন দিবেন, তিনিই প্রার্থী হবেন বলে জানান।
ইতিমধ্যে ইউনিয়নের বিভিন্ন জনপদে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড, মিটিং, গনসংযোগ, ব্যানার, ফেষ্টুন, লিফলেট এর মাধ্যমে তাদের প্রচার প্ররোচনা শুরু করেছে।