
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের উচ্চমান সহকারী মো: আবুল হাসানের বিরুদ্ধে ওই অফিসে কর্মরত এক নারী শ্লীলতাহানী প্রচেষ্টার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অফিস চলাকালীন সময়ে ওই নারী সহকর্মীকে আবুল হাসান তার রুমে ডেকে কুপ্রস্তাব দেন এবং ওই নারীকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩১ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে। নির্যাতিতা ওই নারী ঘটনার পর প্রতিকার চেয়ে লিখিত ভাবে সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর আবুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনা তদন্তের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের নির্দেশে সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের স্টাফ অফিসার ফিরোজ আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।
এদিকে উচ্চমান সহকারী আবুল হাসান এ যাত্রায় রেহায় পাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গাতে ধর্ণাদিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানাগেছে।
নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের কর্মরত ওই নারী নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত যে অভিযোগ করেছেন তাতে উল্লেখ করেছেন, সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের উচ্চমান সহকারী মো: আবুল হাসান প্রায় তাকে বিভিন্ন ভাবে কুপ্রস্তার দিয়ে আসছিল। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে তিনি অফিসের কর্মকর্তাদের কিছু বলতে পারেননি। তবে অফিসের অন্য কয়েকজন নারী সহকর্মীকে তিনি জানায়।
গত ৩১ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে অফিসের হিসাবরক্ষক হাসানূর রহমানের মাধ্যমে উচ্চমান সহকারী মো: আবুল হাসান ওই নারীকে তার রুমে কাজের কথা বলে ডেকে পাঠায়। দাপ্তরিক কাজ সেরে ওই নারী বেলা সোয়া ১ টার দিকে উচ্চমান সহকারী আবুল হাসানের অফিসকক্ষে গেলে তাকে কুপ্রস্তার দেয়। এক পর্যায়ে অফিস কক্ষে ওই নারীকে আবুল হোসেন জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে আসপাশের সহকর্মীরা ছুটে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নির্যাতনের শিকার ওই নারী ঘটনার সূত্রধরে ( ঘটনার তিন দিন পর) গত রোববার অফিসের মধ্যে পায়ের জুতা খুলে আবুল হাসানের মুখে নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে বিষয়টি নির্যাতনের শিকার ওই নারী নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিত ভাবে জানায়ে এ ঘটনার যথাযত প্রতিকার চান এবং নিজের নিরাপত্তার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের উচ্চমান সহকারী মো: আবুল হোসেনের কাছে বৃহস্পতিবার রাতে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পাশে লোকজন রয়েছে। এখন কথা বলতে পারছি না। পরে কথা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সঠিক কি-না জানতে চাইলে তিনি এক পর্যায়ে ফোনের লাইনটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, ওই নারী সহকর্মীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য গত ৪ ডিসেম্বর ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে অফিসের স্টাফ অফিসার ফিরোজ আলীকে। তিনি বলেন, উচ্চমান সহকারী আবুল হাসান লিখিত ভাবে পাল্টা একটি অভিযোগ করেছেন। দুইট অভিযোগই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।