
জেলা কমিটির সভায় পদত্যাগপত্র নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার সুযোগ আছে- নজরুল ইসলাম;
কেন্দ্রে অভিযোগ শহীদুল ইসলামের;
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে
(পর্ব- ১)
হাবিবুর রহমান: অগঠনতান্ত্রিকভাবে আব্দুর রশিদকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনীত করায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল ইসলাম। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অভিযোগের তীর জেলা আওয়ামী লীগের দু’শীর্ষনেতার দিকে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে দেয়া অভিযোগে জানা যায়, গত বছর ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলণে সমঝোতার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ও তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপণ প্রয়াত আবুল খায়েরকে সভাপতি, শাহাজানকে সাধারণ সম্পাদক এবং শহিদুল ইসলামকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করে ১৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন। ওই সম্মেলণে সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম। সম্মেলণে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় শহিদুল ইসলামকে সভাপতি করার। কিন্তু প্রভাবশালী এক নেতার বিরোধীতার কারণে প্রয়াত আবুল খায়েরকে সভাপতি ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হন শহিদুল ইসলাম। তিনি ক্ষোভে অভিমানে চলতি বছরের ১২ই জানুয়ারী সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ৩০ অগাস্ট শহিদুল ইসলাম ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদক বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু ওই আবেদন গ্রহণ না করে শহিদুল ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তিন নম্বর সদস্য করা হয় এবং আব্দুর রশিদকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয়। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার সময় আব্দুর রশিদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। এতেই ঘটে বিপত্তি। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ৭৪তম জন্মদিন পালনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে কর্মসূচী পালন করে। শহিদুল ইসলামকে সরিয়ে আব্দুর রশিদকে অগঠনতান্ত্রিক ভাবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভক্তী প্রকাশ্যে চলে আসে।
[better-ads type=”banner” banner=”2637″ campaign=”none” count=”2″ columns=”1″ orderby=”rand” order=”ASC” align=”center” show-caption=”1″ lazy-load=”disable”][/better-ads]
শহীদুল ইসলাম সাতনদীকে জানান, ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য ২৯ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক পত্রে আমাকে সিনিয়র সহ-সভাপতি উল্লেখ করা হয়। তিনি যোগ করে বলেন, দলের গঠনতন্ত্রের আলোকে জেলা কমিটিতে আমার পদত্যাগপত্র নিয়ে আলোচনা হয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার নিয়ম। কিন্তু তা করা হয়নি। জেলা আওয়ামী লীগের সভায় সিদ্ধান্ত না নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যা গঠনতান্ত্রিক হয়নি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার দাবী করেন।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি সাময়িক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শহিদুল ইসলামের পদত্যাগ পত্র জেলা কমিটিতে আলোচনায় না ওঠার কারণ পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকা। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভায় তা আলোচনায় আসতে পারে এবং সেখানেই তা সমাধান হতে পারে।
তিনি যোগ করে বলেন, পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি না থাকায় শহিদুল ইসলামের পদত্যাগপত্র উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত আবুল খায়েরের কাছে পাঠানো হয়। তিনি জীবিত থাকতে উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জেলা আওয়ামী লীগের কাছে দাখিল করেন। সেখানে শহিদুল ইসলামকে ৩ নম্বর সদস্য করা হয়।
তিনি এও বলেন, শহিদুল ইসলাম কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। সেখান থেকে কোন সিদ্ধান্ত আসলে আমরা সেটিও মানতে বাধ্য।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তৃণমূলের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
…(চলবে)