ন্যাশনাল ডেস্ক: বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য করোনার এই দুঃসময়েও তিন সংসদ সদস্যকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। তাঁদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তারের ঘটনা বিশ্ব মিডিয়ায় স্থান পায়। প্রশ্ন উঠেছে, অপরাধ জগতের চিহ্নিত মাফিয়া কিভাবে জাতীয় সংসদ সদস্যের পদ পর্যন্ত বাগিয়ে নিলেন। শুধু তাই নয়, পাপুল তাঁর স্ত্রীকেও বানিয়েছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য। উভয়েই দেশ থেকে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচারের পাশাপাশি মানবপাচারের জঘন্য বাণিজ্য ফেঁদে বসেন। সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ও সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম দম্পতির মাফিয়া সিন্ডিকেট মাত্র সাত-আট বছরেই বাংলাদেশ থেকে ২০ হাজারের বেশি নারী-পুরুষকে বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে বলে অভিযোগ আছে।
এ ছাড়া সরকারদলীয় মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হকও নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ যখন চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন, তখন মানিকগঞ্জ-১ সংসদীয় এলাকায় চলছে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির বেপরোয়া কর্মকাণ্ড। এখানে সংসদ সদস্য দুর্জয়ের স্বজন-পরিজন ও ঘনিষ্ঠ নেতারা অনেকেই নানা অপরাধ অপকর্মে জড়িয়ে রয়েছেন। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘পাপিয়া কাণ্ড’ নিয়ে তাঁকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক চলছে।
রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হকের নারীঘটিত কেলেঙ্কারির ঘটনা নিয়েও তোলপাড় চলে দেশজুড়ে। কয়েক দফা নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্যের চারিত্রিক ক্লেদাক্ততা নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে নানা রকম সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
মানবপাচারকারী সংসদ সদস্য নিয়ে বিব্রত সরকার : কুয়েতে অর্থ ও মানবপাচার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সে দেশের সিআইডি পুলিশের হাতে আটক ও রিমান্ড শেষে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। সংসদ সদস্য হওয়ার তিন বছর আগেও যাঁকে কখনো এলাকায় দেখা যায়নি, এক দিনও রাজপথে মিছিল-মিটিং করতে হয়নি, সেই ব্যক্তির ও তাঁর স্ত্রীর সংসদ সদস্য হওয়া রূপকথার গল্পের মতোই।
জন্মের পর পাপুল ঢাকা ও চট্টগ্রামে শৈশব-কৈশোর কাটিয়ে ১৯৯২ সালে ভাই ও বিএনপি নেতা কাজী মঞ্জুরুল আলমের হাত ধরেই কুয়েতে পাড়ি জমান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেড়-দুই বছর আগে ২০১৬ সালে লক্ষ্মীপুরে আবির্ভূত হন তিনি। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন জোটাতে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। আসনটি আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিলে সেখানে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ নোমান মহাজোটের প্রার্থী হন। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সহায়তা নিয়ে এবং মহাজোট প্রার্থীর সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে টাকা ছিটিয়ে সংসদ সদস্যর মুকুট ছিনিয়ে নেন পাপুল। এরপর কোটি কোটি টাকা খরচ করে ছয়জন সংসদ সদস্যর সমর্থন আদায়ের মধ্য দিয়ে স্ত্রী সেলিনা ইসলাম সিআইপিকেও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বানাতে সক্ষম হন।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুয়েতের দুটি পত্রিকা বাংলাদেশের এক সংসদ সদস্যসহ তিন মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কুয়েতের সিআইডির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল, স্বতন্ত্র এই সংসদ সদস্যসহ তিনজনের চক্র অন্তত ২০ হাজার বাংলাদেশিকে কুয়েতে পাঠিয়ে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছে।
সংসদ সদস্য দুর্জয়কে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা : গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, বখড়াবাজি নিয়ে প্রকাশিত খবরই এখন আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে। দুর্জয়ের অন্যতম দুর্নীতির একটি হচ্ছে—আরিচা ঘাটের কাছে নদীভাঙন ঠেকানোর নামে সরকারি টাকায় বিআইডাব্লিউটিএর ড্রেজার দিয়ে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং তা নিহালপুর এলাকায় পরিত্যক্ত খন্দকার ইটের ভাটায় মজুদ করে বিক্রি করা। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। বিআইডাব্লিউটিএ সাধারণত নাব্যতা সংকটের কারণে ড্রেজিং করে থাকে। কিন্তু এখানে এবার কোনো নাব্যতা সংকট হয়নি। শুধু সংসদ সদস্যর বালুর ব্যবসার জন্য এ ড্রেজিং করা হয়। যে কারণে এবার বর্ষা আসার আগেই আরিচায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া আরিচায় বিআইডাব্লিউটিএর বিশাল টার্মিনাল দখল করে দীর্ঘদিন ধরে বালুর ব্যবসাও চলছে সংসদ সদস্যর নামেই। আরিচা-কাজিরহাট নৌ রুটে অবৈধভাবে স্পিডবোটের ব্যবসাটিও পরিচালিত হচ্ছে সংসদ সদস্য দুর্জয়ের নামেই। এই লকডাউনের মধ্যে ‘সংসদ সদস্যের ছাত্রলীগ’ আরিচা ট্রলার ঘাটের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নিয়ে নেয়। তারা নৌকার মাঝিদের ঘাট থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজেরা যাত্রীপ্রতি ৫০০ টাকা করে নিয়ে পারাপার করেছে। সংসদ সদস্যের চাচা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তায়েবুর রহমান টিপুর অত্যাচারে শিবালয় এলাকায় কেউ জমি কিনতে পারছেন না। কেউ জমি কিনতে গেলেই তিনি প্রতি শতাংশে পাঁচ হাজার টাকা করে দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শিবালয়ের আলোকদিয়ার চরে সোলার বিদ্যুৎ প্লান্টের কাজ থমকে গেছে সংসদ সদস্যের জন্য। কারণ ওই প্লান্টের মাটি ভরাটের কাজে বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি টাকা দাবি করায় ওই কম্পানি আর এগোয়নি।
মানিকগঞ্জের শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলায় হাটবাজার ইজারা নেওয়া, খেয়াঘাট বরাদ্দ, খাসজমি ইজারা থেকে শুরু করে ব্রিকফিল্ডে মাটি সাপ্লাই দেওয়ার ক্ষেত্রেও সংসদ সদস্যের লোকদের নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ করে তবেই পা ফেলা যায়। মাটি খননের নিষিদ্ধ এক্সকাভেটর (ভেকু মেশিন) চলে শতাধিক। হাজার হাজার একর পলি জমি মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ড্রেজিং চলছে অবিরাম। স্পিডবোট চলছে কাজীরহাট রুটে চরম ঝুঁকি নিয়ে। সংসদ সদস্যের নির্দেশনা পুঁজি করেই চলছে সব।
মানিকগঞ্জ-১ আসনে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাদের পেছনে ফেলে নৌকা প্রতীক পান সাবেক ক্রিকেটার দুর্জয়। নির্বাচনের পর এলাকার গরিব মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আদায়সহ নানা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এলাকার অসংখ্য বেকার যুবক বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরির আশায় সর্বস্ব খুইয়েছেন, কিন্তু চাকরি জোটেনি। তাঁরা সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠদের হাতে তুলে দিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। সংসদ সদস্যের বাসভবনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রতারণামূলক কাণ্ড থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা পর্যন্ত রেহাই পাননি।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের চরকাটারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক অভাবী পরিবারের সন্তান। স্বপ্ন দেখেন একটি চাকরির। কিন্তু চাকরি তো হয়ইনি, উল্টো দুর্জয়ের নামে তাঁরই ভাগ্নে আব্বাস ঘুষ বাবদ হাতিয়ে নিয়েছেন পাঁচ লাখ টাকা। সেই টাকার বিপরীতে গত প্রায় আড়াই বছর ধরে সুদের ঘানি টানছে তাঁর পরিবার। তিনি বলেন, ‘টাকা ফেরত না পেয়ে আমি সংসদ সদস্য সাহেবের সঙ্গে ঢাকায় তাঁর লালমাটিয়ার বাসায় দেখা করি। একপর্যায়ে তিনি আমাকে বলেছেন, আরো কিছুদিন ধৈর্য ধর। আবার সার্কুলার দিলে তোর চাকরি হয়ে যাবে।’ কিন্তু চাকরি জোটেনি আজও।
একই উপজেলার লাউতারা গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের এতিম ছেলে আবদুল আজিজও চাকরি বাণিজ্যের শিকার হয়েছেন। স্কুলে পিয়নের চাকরি নিতে তাঁকেও খোয়াতে হয়েছে ১৪ শতাংশ জমির ওপর গড়ে তোলা একটি গাছের বাগান এবং এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের পুরোটাই। আজিজ বলেন, ‘পিয়ন পদের জন্য ঘুষ বাবদ ছয় লাখ টাকা সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ আব্বাসের কাছে পৌঁছে দিই। কিন্তু জোটেনি চাকরি, ফেরত পাইনি টাকাও।’
এসব ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা হলে দুর্জয় বরাবরই সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। চাকরিপ্রার্থীরা যাঁকে ঘুষ দিয়েছেন তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করুন।’ তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না সংসদ সদস্য এনামুলের : রাজশাহী-৪ আসনের (বাগমারা) সংসদ সদস্য এনামুল হকের গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে এবং হঠাৎ ছাড়াছাড়ি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। ব্যাপারটি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট দেওয়া এবং কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে লিজার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় লিজাকে সংসদ সদস্য এনামুল হকের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
অপরদিকে লিজা নিজেকে এখনো সংসদ সদস্য এনামুলের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করছেন। তিনি বলছেন, আমি কোনো কাগজ পাইনি। আমি প্রকাশ্যে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করায় সংসদ সদস্য সাহেব বিষয়টা অস্বীকার করেছেন। ফলে আমি পরিস্থিতির শিকার হয়ে ফেসবুকে আমাদের অন্তরঙ্গ ছবিসহ বেশ কিছু প্রমাণ প্রকাশ করেছি। কারণ, আমি সংসদ সদস্য সাহেবের রক্ষিতা নই, বিয়ে করা বৈধ স্ত্রী। লিজার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৩ সালে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং ২০১৮ সালের ১১ মে তাঁদের রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়। এরপর পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ে হয়।
এ ব্যাপারে এনামুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিয়ের বিষয়টা সত্য। দুবছর আগে দশ লাখ টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। দেনমোহরের টাকাও পরিশোধ করেছি। তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর বুঝতে পারি আমি লিজার চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার। সে বিভিন্ন সময় আমার নাম ভাঙিয়ে তদবির চাঁদাবাজিও শুরু করে। একটা এনজিও করে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে নানা রকম ছবি ফেসবুকে আপলোড করে। অবশেষে বাধ্য হয়ে গত ২৩ এপ্রিল ২০২০ তাকে আইনসম্মতভাবে ডিভোর্স দিয়েছি।’
অপরদিকে প্রতারণার মাধ্যমে জীবন নষ্ট করা, স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়া ও গর্ভের বাচ্চা নষ্টের বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরজি জানানোর কথা বলেছেন লিজা। জীবন নিয়ে সংশয়ে আছেন বলেও দাবি করেন লিজা।
এই বিতর্কই শুধু নয়, তিনি তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও প্রতিবারই নিয়োগ বাণিজ্য, বিএনপি-জামায়াতিদের পুনর্বাসন ও জঙ্গিদের দলে ঠাঁই দেওয়া নিয়েও একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন এনামুল। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘দপ্তরি কাম প্রহরী’ পদে ৫০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রার্থী নির্বাচনে কমিটির কোনো ভূমিকা ছিল না। সংসদ সদস্য এনামুল হক নিয়োগের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি ডিমান্ড অর্ডার (ডিও) লেটার পাঠাতেন। কোন প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে হবে চিঠিতে তার উল্লেখ থাকত। সে তালিকা ধরেই প্রার্থী নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়েছে কমিটি। অভিযোগ আছে, নিয়োগ দেওয়ার বিনিময়ে প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে এনামুল হক চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। সে হিসাবে অন্তত দুই কোটি টাকা নিয়েছেন তিনি। নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা টাকা দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন। সংশ্লিষ্ট ইউএনও ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাও স্বীকার করেছেন যে কেবল সংসদ সদস্যের মনোনীত প্রার্থীদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে এসব নিয়োগে বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে এনামুল হক বলেন, ‘ওই সময় দলীয় কিছু লোকের জন্য ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। তবে কারো কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়নি। যাদের ডিও দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই যোগ্য প্রার্থী।’
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, টাকা ছাড়া চাকরি হয়েছে এমন নজির কমই আছে। বেশির ভাগ নিয়োগ পেয়েছে জামায়াত-বিএনপির লোকজন। শুধু চাকরি নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে বিএনপি-জামায়াতের লোকদেরই বসানো হয়েছে। যোগীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, এনামুল হকের সাড়ে ১০ বছরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাঁর মাধ্যমে কারা নিয়োগ পেয়েছেন খোঁজ নিলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। সূত্র: কালের কন্ঠ