
আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে: আবারও পশ্চিম সুন্দরবনে বনদস্যু জিয়া বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করছে তারা। সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনে জিয়া বাহিনীর অত্যাচারী অতিষ্ট বনজীবিরা। জীবিকার তাগিদে সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া, মধু আহরণ করতে হবেই। মহামারি করোনার প্রভাবে লোকালয়ে কাজ করা পুরাতন বনজীবিরা বর্তমানে আবারও মাছ, কাঁকড়া, মধু আহরণ ঝুঁকেছে। এরই সুবাদে পশ্চিম সুন্দরবনে একমাত্র বনদস্যু জিয়া বাহিনী এই সব জেলেদের জিম্মি করে মাথাপিছু লাখ টাকা দাবী করে চলছে। টাকা দিতে না পারলে জিম্মিকৃত জেলেদের অত্যাচারের কুল নেই। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাড়ীতে ফোন করে তাদের অত্যাচারের আকুতি মিনতি বাড়ীর লোকদের শোনাচ্ছে। অপারগ হলেও এই সব জেলে পরিবার সুদের টাকা নিয়ে জিয়া বাহিনীর বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করে তাদের ছাড়িয়ে নিচ্ছে। প্রশাসন যখন মহামারি করোনার সংক্রান্ত রোধে ছুটে চলেছে এর মধ্যে বনদস্যু জিয়া বাহিনী মন খলসা করে বনজীবিদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপন নিয়ে চলেছে।
জেলেদেও সূত্রে জানা গেছে যে, বনদস্যু জিয়াবাহিনীর ২টি নৌকাতে মাত্র ২জন, ২জন মোট ৪ জন সদস্য আছে। তার মধ্যে বনদস্যু বাহিনীর প্রধান জিয়া ও র্যাবের স্যালেন্ডারকৃত আসামী বুলবুল তাদের বাড়ী উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে বর্তমানে ভারতের ক্যানিং এ বসাবস করে। তাদের কাছে ১ টি ডাবল ব্যারেল, ১ টি সিঙ্গেল ব্যরেলের বন্দুক, ১টি ইয়ারগান ও একটি হাতে তৈরি দেশীয় অস্ত্র। সুন্দরবনে বনদস্যু হিসাবে জিয়া বাহিনী ছাড়া আর কোন বাহিনী নজরে আসেনি। বর্তমানে মামুন্দো নদীর বড় বৈগীরি, ম্যাটভাঙ্গা, ছোট বৈগীরি, চুনকুঁড়ি ও কালুন্দী নদীর কছুখালী, হোগল ডোগোর, দারগাং স্থানে তারা পায়তারা শুরু করেছে। ভারত সীমান্তে বসে নজর রেখে দ্রুতগতিতে জেলেদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করে আবারও দ্রুত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমশের নগর এলাকার সুন্দরবনের ঝাড়া নামক স্থানে। তবে জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে চালাচ্ছে চরম অত্যাচার।
জেলেদের মনে একটাই প্রশ্ন গেথে বসেছে, অর্থ লেনদেনের বিষয়ে সহযোগীতা নিচ্ছে মোবাইল বিকাশ একাউন্টের সংশ্লিষ্টরা। সিম কর্তৃকপক্ষ প্রতিটি সিম রেজিট্রেশনের মাধ্যমে বাজারে ছেড়েছে কিন্তু এই সিম গুলো কি ভাবে তারা ব্যাবহার করছে ?
এ বিষয়ে ভেটখালী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ীর অফিসার ইনচার্জ আক্কাজ আলী বলেন, আমরা লোক মুখে শুনেছি কিন্তু কোন জেলে আমাদের কাছে আভিযোগও করেনি এবং সুন্দরবনে টহলরত অবস্থায় আমাদের সামনে পড়েনি। তবে আমরা টহলরত অবস্থায় তৎপর আছি।