অনলাইন ডেস্ক: আইসোলেশনে নেওয়ার আগেই করোনা ‘পজিটিভ’ এক ব্যক্তি মুঠোফোন বন্ধ করে লাপাত্তা হয়েছেন। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা হন্যে হয়ে খুঁজছেন তাঁকে। তবে আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত তাঁর কোনো হদিস মেলেনি। তাঁর দেওয়া ঠিকানা ভুয়া। আবার মুঠোফোনও বন্ধ। ফলে ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন (সঙ্গনিরোধ) করা সম্ভব হয়নি। আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িও ‘লকডাউন’ (অবরুদ্ধ) করা যায়নি।
বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে মাত্র একটি পরীক্ষার প্রতিবেদন ‘পজিটিভ’ আসে। এ ছাড়া পাঁচটি নমুনা দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়। মোস্তাফিজুর রহমান জানান, করোনা ‘পজিটিভ’ ওই ব্যক্তির বগুড়া শহরের ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা বলে তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মী। দুদিন আগে তিনি বগুড়ায় ফেরেন। তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই। তবে ঢাকাফেরত হওয়ায় নিজেই মেডিকেল কলেজে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন। ল্যাবে পরীক্ষায় করোনা ‘পজিটিভ’ প্রতিবেদন আসার পর গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাঁকে বাসায় থাকতে বলা হয়। এরপর থেকে মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র বলছে, গতকাল সন্ধ্যার পর প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা ওই ব্যক্তির দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে বাড়ি খুঁজে পাননি। মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর অবস্থানও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয় পৌরসভা কাউন্সিলর থেকে শুরু করে এলাকার কেউই ওই ব্যক্তির সন্ধান দিতে পারেননি। একপর্যায়ে নামের সঙ্গে মিল থাকা ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করেন তাঁরা। এভাবেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন।
বগুড়া পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খোরশেদ আলম বলেন, করোনায় আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে প্রাশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা হন্যে হয়ে খুঁজছেন। এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো হদিস মেলেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে মসজিদে মাইকিং করে তাঁর সন্ধান চেয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, করোনা ‘পজিটিভ’ নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। তাঁর সন্ধানে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৭। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে সাতজনকে।একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর বাইরে আইসোলেশন থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন রংপুরের শাহ আলম নামের এক ব্যক্তি। (সূত্র: প্রথম আলো)