
আশাশুনি ব্যুরো: আশাশুনিতে ৩২ বছরের হারীর টাকা না দিয়ে উল্টো জমির মালিকদের হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকী দিচ্ছে জবরদখলকারীরা। তাদের নানান হুমকী ও আস্ফালনে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে কয়েকটি হিন্দু পরিবার। মালিক পক্ষ জানান, মধ্যম বলাবাড়িয়া গ্রামের অনিল কৃষ্ণ মন্ডলের দুর্গাপুর বড় মৌজায় বিএস ৪৫ নং খতিয়ানে ৫৩০১ ও ৫৩০২ দাগে ১.২৫ একর জমি ও শিবপদ মন্ডল ২০ শতক জমিতে চাষাবাদ করতেন। ১৯৯২ সালের দিকে অনিল কৃষ্ণের সাথে ধর্ম সম্পর্ক পাতিয়ে আদালতপুর গ্রামের মৃত তফর শেখের ছেলে আঃ খালেক তার নামীয় ৩ বিঘা জমির সাথে অনিলের জমি হারি দেওয়ার কথা বলে দখলে নেন। কিন্তু হারির টাকা না দিয়ে সেই থেকে জবর দখল করতে থাকেন। অসহায় অনিল ও শিবপদ ইউনিয়ন পরিষদে নালিশ করলেও কোন কাজ হয়নি। শোকেতাপে বয়সের ভারে এক পর্যায়ে অনিল কৃষ্ণ মারা গেলে তার কন্যা সুধা রানী সরদার, সুবিতা রানী সরদার ও বিশাখা রানী জমির মালিক হলেও একই ভাবে তাদেরকে পাত্তাই দেওয়া হয়নি। আঃ খালেকের মৃত্যুর পর তার ছেলে হুমায়ুন কবির বাবু ও শেলী একই ভাবে জবর দখল করতে থাকেন। একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যানদের দারস্থ হলেও কোন লাভ হয়নি তাদের। সবশেষ ২০২৪ সালে ওয়ারেশদের পক্ষে অনিলের বড় মেয়ের ছেলে ধর্মদাশ সরদার ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আবেদন করেন। তিনি মৌখিক রায় দিলেও দখলকারীদের ভয়ে ধর্ম দাশরা জমিতে যেতে পারেনি। এবছর জানুয়ারী মাসে জমির মালিকরা আশাশুনি গ্রামের মৃত করিম মোড়লের ছেলে মোখলেছুর রহমানের কাছে হারির বিনিময়ে জমি ডিড লিখে দেয়। ডিড গ্রহিতা জানুয়ারীর শেষের দিকে জমির দখল বুঝে নিয়ে ঘের প্রস্তুত করে মাছ ছেড়ে বর্তমানে শান্তিপূর্ণ ভাবে দখলে আছেন। জমির মালিক পক্ষের কৃষ্ণ পদ সরকার জানান, ৩২ বছর ধরে জমির হারি না পেয়ে এবছর মোখলেছুর ভাইকে জমি ডিড দেওয়ায় জবর দখলকারী বাবু ও শেলী আমাদের বাড়িতে এসে মারপিট করার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাঁদের হুমকীতে ভীত হয়ে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা যাতে ৩২ বছরের প্রাপ্য হারীর টাকা বুঝে পাই সেজন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ডিড গ্রহিতা মোখলেছুর রহমান বলেন, হিন্দুদের জমিতে মাছের ঘের করে প্রায় ৩২ বছর ধরে তারা হারীর টাকা দেয়না। এবছর জমির মালিকরা আমাকে ডিড দেওয়ায় আমি সেখানে বৈধ ভাবে মাছ ছেড়ে চাষ করেছি। এখন তারা ওই হিন্দু পরিবারগুলোকে হুমকী ধামকী দিয়ে তাদের ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলেছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।