
অনলাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সংসদ টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে রেকর্ডিং করা ক্লাস প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একই ধরনের চিন্তাভাবনা করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রাথমিকের বিষয়ে রোববার (২২ মার্চ) আলোচনা করে করণীয় ঠিক করা হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধের এই সময়ে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, সংসদ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যাবতীয় আলোচনা শেষ হয়েছে। আপাতত মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) থেকে আমরা পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শুরু করবো। তিনদিন পরীক্ষামূলকভাবে প্রচারের পর করোনাভাইরাসের কারণে যতদিন বন্ধ থাকবে, এই পদ্ধতিতেই ক্লাস নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিসপ্তাহে ৩৫টি ক্লাস সম্প্রচার করবো। ইতোমধ্যেই ক্লাসের রেকর্ডিংয়ের কাজ শুরু করেছি। দেশের সেরা শিক্ষকরা টেলিভিশনে তাদের ক্লাস লেকচার দেবেন।
সারাদেশে অন্তত ১ কোটি শিক্ষার্থী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে পড়ে। একইসাথে প্রায় ২ কোটি শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা নিচ্ছে।
মাউশির সূত্রে জানা গেছে, শনিবার থেকেই এসব ক্লাস রেকর্ডিং করা শুরু হয়েছে। তিনটি স্টুডিওয়ে এই ক্লাস রেকর্ডিং করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি স্টুডিও সরকারের শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর। এ ছাড়া ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং মোবাইল ফোন অপারেটর রবির স্টুডিওতে এসব ক্লাস রেকর্ডিং করা হচ্ছে। আগামী মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে এসব ক্লাস প্রচার করা হবে। এরপর নিয়মিতভাবে এটি চলবে। আগামী সপ্তাহ থেকেই নিয়মিতভাবে এভাবে ক্লাস হবে।
এভাবে ক্লাস চালু রাখার বিষয়টিকে ভালো বলছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফওজিয়া। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে অন্তত বাড়িতে বসে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারবে।
প্রাথমিক স্তরের শিশুদের জন্যও বিকল্প উপায়ে ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেছেন, তাঁরাও বিকল্প উপায়ে কীভাবে ক্লাস বা পড়াশোনা চালু রাখা যায়, সে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। টিভির মাধ্যমে ক্লাস প্রচারের বিষয়টিও তাদের চিন্তাভাবনায় আছে। রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বন্ধের সময়ে কোনো শিক্ষার্থীকে অযথা বাইরে ঘোরাফেরা না করতে এবং বাড়িতে নিরাপদে রাখার জন্য অভিভাবকদের নির্দেশনা দিতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করেছে।