
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরায় পর্ণগ্রাফি মোবাইলে ডাউন লোড দেওয়ার অভিযোগে অবশেষে ৫ কম্পিউটারের দোকানদারকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের লাবনী মোড় এলাকায় সদর সার্কেল মীর্জা সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, পুরাতন সাতক্ষীরা নাথপাড়া এলাকার বলাই চন্দ্র বিশ্বাসের পুত্র শ্যামল কান্তি বিশ্বাস, দেবহাটার চর বালিথা এলাকার নজরুল ইসলামের পুত্র শরিফুল ইসলাম, মাগুরার নিরোধ কর্মকারের পুত্র গোপাল চন্দ্র কর্মকার, আশাশুনির গড়ালী গ্রামের গফফার গাজীর পুত্র রায়হান হোসেন ও মোজাফফর হোসেনের পুত্র আফজাল হোসেন।
সদর সার্কেল মীর্জা সালাউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা লাবনী মোড়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সে সময় প্রত্যেকের কম্পিউটার থেকে প্রচুর পরিমাণে পর্ণগ্রাফি পাওয়া যায়। ওই দোকানদাররা শহরের স্কুল, কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের মোবাইলে স্বল্প খরচে লোড করে দেয়। এতে করে শিক্ষার্থীরা বিপথে চলে যাচ্ছে। এ ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে পর্ণগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।
একটি সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা শহরের লাবণী সিনেমা হলের দ্বিতীয় তলার মার্কেটে দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল, হার্ডডিস্ক ও পেন ড্রাইভে নীল ছবি (ব্লু ফ্লিম) ভরে দিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এসব নীল ছবি নিতে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শত শত কম্পিউটারে মেমোরী লোড ব্যবসায়ীরা ওই মার্কেটটিতে ভীড় জমাতো। দেশ ও বিদেশের হাজার হাজার সেক্স সিম্বল ভিডিও গান ও ছবি তারা টাকার বিনিময়ে লোড ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। যে কেউ চাইলে সহজেই এটা টাকা দিলেই নিতে পারতো। এই মার্কেটে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পর্ণগ্রাফি ব্যবসা চলে থাকে। স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পর্ণগ্রাফীতে আসক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কালেকশনের আশায় ভীড় জমিয়ে থাকে। জেলার প্রতিটি ছোট-বড় সব মেমোরী লোড ব্যবসায় পর্ণগ্রাফি ব্যবসা জমজমাট। মেমোরী লোড ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সিনেমার গান, ফুল মুভি, ইংলিশ এ্যাকশন মুভি, টিভি নাটক ও সিরিয়াল ভিডিও, কৌতুক, মডেলিং গান, কার্টুন, ওয়াজ মাহফিল, এ্যানিমেল ভিডিও ও বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও মেমোরী লোডের অন্তরালে এই পর্ণগ্রাফি ব্যবসা চালিয়ে থাকে। বাংলাদেশের কপি রাইট আইনে এ ধরনের মেমোরী লোড ব্যবসা নিষিদ্ধ ও অবৈধ হলেও জেলার সবখানে রয়েছে এই মেমোরী লোডের জমজমাট ব্যবসা।
পর্ণ ছবিতে আসক্ত হয়ে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে। ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে যুব সমাজ। দেরীতে হলেও প্রশাসনের এ ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে সাতক্ষীরার সুশীল সমাজ। এ ব্যাপারে সব জায়গায় মেমোরী লোড ব্যবসা বন্ধের জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছে সব শ্রেণী পেশার মানুষ।