
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নজরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেছে দূর্বত্তরা। সোমবার বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার আগরদাড়ি ইউনিয়নের ছোট জামতলা এলাকায় তিনি দূর্বত্তের গুলিতে নিহত হন। নিহত নজরুল ইসলাম আগরদাড়ি ইউনিয়নের কুঁচপুকুর গ্রামের মৃত. নেছার উদ্দিনের ছেলে ও আগরদাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি। এ ঘটনার পর হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুতমিশ। তিনি জানান, খবরটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আগরদাড়ি ইউনিয়ন আ’লীগের নেতা নজরুল ইসলামের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। এ হত্যাকান্ড কে বা কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে কদমতলা থেকে বাজার করে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে স্টোন ব্রিকস সংলগ্ন স্থানে পৌঁছানো মাত্র পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সূত্র জানায়, এ হত্যাকন্ড সহ নজরুলের পরিবারে কমপক্ষে ৯ বার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল রাতে এক বোমা হামলার ঘটনায় নজরুল আহত হন। এর পর তিনি নিরাপত্তা নিতে দীর্ঘদিন সাতক্ষীরা থানায় অবস্থান করছিলেন। এর আগে ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর রাতে নজরুলের ভাই সিরাজুল ইসলামকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল নজরুলের ভাতিজা যুবলীগ নেতা রাসেল কবিরকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
দূর্বৃত্তের গুলিতের নিহত আওয়ামীগ নেতার ছেলে পলাশ হোসেন জানান, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে বিরোধ ছিল বাবার। এই বিরোধের জের ধরেই মেম্বর তৌহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা বাবাকে হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছি। তিনি আরও জানান, ২০১৩ সালের পর থেকে আজকের হত্যাকা-ের ঘটনার পূর্ব পর্যন্ত আমাদের পরিবারের উপর নয় বার সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। ২০১৩ সালে তৎকালীন হামলায় আমার চাচা সিরাজুল ইসলাম ও ভাই যুবলীগ নেতা রাসেল নিহত হয়। আমার বাবা নিরাপত্তাহীনতায় সে সময়ে সদর থানায় রাত্রিযাপন করতেন। শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হলো না। আমার বাবার খুনীদের গ্রেফতার শাস্তি চাই। হত্যাকা-ের ঘটনার পর আগরদাঁড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হবি জানান, নিহত নজরুল ইসলাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন। শহরের কদমতলা থেকে বাজার থকে মটর সাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে অর্ধ কিলোমিটার দূর ছোট জামতলা এলাকায় পৌঁছালে দূর্বত্তরা মোটর সাইকেলে যোগে এসে পেছন থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। একটি গুলি মাথায় আরেকটি গুলি বুকে বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আওয়ামী লীগের এই নেতা।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নজরুল ইসলাম দূর্বত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে হত্যাক-ে জড়িতদের গ্রেফতার ও শনাক্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ। কি কারণে বা কারা এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে সে বিষয়ে এখনো কিছু নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে পুলিশের টিম মাঠে রয়েছে।