রুবেল হোসেন: সকাল ১১ টা। জেলা শহরের জজকোর্ট মোড়। যানবাহনের চাপে রাস্তায় তিল ধরনের ঠাই নেই। রাস্তার একপাশ থেকে অপর পাশে যাওয়ার সুযোগও বন্ধ। সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের খুলনা রোড মোড় থেকে বড়বাজার মোড় পর্যন্ত বাস, ট্রাক, লেগুনা, ইজিবাইক ও মোটরভ্যানের লম্বা লাইন। ফলে সাতক্ষীরা টু আশাশুনি এবং সাতক্ষীরা টু ফিংড়ী সড়কে শহরে প্রবেশের গাড়িসমূহ নিউমার্কেট মোড়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে নিউমার্কেট থেকে সরকারি মহিলা কলেজ মোড় অপরদিকে ডে নাইট কলেজ মোড় পর্যন্ত সৃষ্টি হয় জানজট। যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা ইজিবাইক চালক রায়হান আহমেদ বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই শহরে যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ কারণে আমাদের ট্রিপ কমে গেছে। ফলে আয়ও কমে গেছে। মোটরসাইকেল চালক শামীম বলেন, ১০ মিনিটের পথ যেতে ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগছে। ফলে গৌন্তব্যে যেতে দেরী হওয়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।
খুলনা রোড মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষারত যাত্রী আরিফুল ইসলাম বলেন, জ্যাম (যানজট) থাকায় বাস আসতে দেরি হচ্ছে। তাই অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হচ্ছে। কালিগঞ্জে যাওয়ার বাস পাচ্ছি না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সকাল টা নিরিবিলি শুরু হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে জনমানুষের চাপ। বানের স্রোতের মত মানুষের ঢল নামে শহরে। পৌরসভায় ৭০০ নিবন্ধিত অটো-ইজিবাইক থাকলেও বাস্তবে কয়েক হাজার অনিবন্ধিত ইজিবাইক ও মোটর ভ্যান শহরের প্রধন সড়কে দাপিয়ে বেড়ায়। মূলত অবিনন্ধিত এসব যানবাহন অপরিকল্পিতভাবে চলাচল করায় যানজট বাড়ছে বলে সচেতনমহলের দাবী।
তাছাড়া গ্রাম থেকে আসা লোকজনকে পৌর এলাকার প্রবেশমুখে সংকীর্ণ এবং ভাঙাচোরা রাস্তার কারনে দ্রুত যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারে না। তাছাড়া অধিকাংশ রাস্তার ফুটপথ দখল করে দোকানপাট, ট্রাক, বাস, ইট বালু রাখায় যানবাহনের গতি স্লথ হয়ে যায়। শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল, খুলনা রোড মোড়, লাবনীর মোড়, সঙ্গীতার মোড়, ইটাগাছা হাটবাজারের মোড় ওয়াপদার মোড় অঘোষিত ছোটবড় যানবাহনের স্ট্যান্ডে পরিণত হওয়ায় ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। এছাড়া যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো নামানোসহ অদক্ষ চালকের কারনে বাড়ছে দুর্ঘটনা। এতে করে সাতক্ষীরা শহরে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে পেশাজীবী, শ্রমজীবী, পথচারী, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষকে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পৌরসভার এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এবং আশেপাশের সংযোগ সড়কগুলিতে যানজট লেগেই থাকে। সাধারণ পথচারীদের জন্য হেঁটে চলাও দায়। সাতক্ষীরা বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে শহরের নিউ মার্কেট, পাকাপোল, সংঙ্গীতা মোড়, হাটের মোড়সহ সব জায়গায় চিত্র একই। সাতক্ষীরা শহরের সাধারণ মানুষের দাবী অতিসত্তর পৌর এলাকার রাস্তাগুলি প্রশস্ত করা। এবিষয়ে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) শ্যামল কুমার চৌধুরি বলেন, “সড়কে অবৈধ যান চলাচল রোধে আমাদের টিম তৎপর রয়েছে। তবে সড়কগুলো যানবাহনের তুলনায় তুলনামূলক সংকীর্ণ হওয়ায় যানজট নিরসণে হিমসিম খেতে হচ্ছে।”