
নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্যামনগরের যুবলীগ নেতা লিটন কর্তৃক ভেটখালী বাজারে পেরিফেরী ভূক্ত জায়গা দখল করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে জানা গেছে যে, উপজেলার ভেটখালী বাজারে আল্হাজ¦ কওছার গাজীর একই পরিবারের ৫ সদস্যের নামে ভেটখালী বাজারের পেরিফেরী ভূক্ত জায়গায় চান্দিনা লাইন্সেস তৈরি করেন। চান্দিনা লাইন্সেস তৈরির পরে একটি জায়গা একই গ্রামের স্থানীয় হোমিও ডাক্তারের কাছে বিক্রি করেন। বিক্রির পরে স্থানীয় হোমিও ডাক্তার ঐ জায়গার নতুন চান্দিনা লাইন্সেস তৈরি করে ব্যবসা করে আসছেন। বাকি ৪টি জায়গার চান্দিনা লাইন্সেস নিয়ে আল্হাজ¦ কওছার গাজী তার বড় ছেলে, ছোট ছেলে এবং তাদের ছেলেদের নামে নামকরণ করে ঘর নির্মাণ করেন এবং বর্তমানে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়ে আসছেন।
ভেটখালী গ্রামের সাবেক রিলিপ চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা মৃত জিএম আবুল কাশেমের সহযোগীতায় বিগত ১৯৭৮ সালের দিকে ভেটখালী বাজারে অগ্রনী ব্যাংক শাখা আসে এবং একটি জায়গায় ছাঁদ বিশিষ্ট পাঁকা ঘর নির্মাণ করে দেন এবং সেই থেকে ব্যাংকের যাবতীয় কর্যক্রম চালিয়ে আসে। বিগত ১৯৯৭ সালে ব্যাংকটি ভেটখালী বাসস্ট্যান্ডে স্থানান্তরিত হলে ঐ জায়গায়টি পতিত অবস্থায় থাকে। দখলীয় শর্তে মৃত জিএম আবুল কাশেমের ওয়ারেশগন ঐ জায়গাটি ঘেরাবেড়া দিয়ে রাখেন। বর্তমানে পতিত ব্যাংকের পাশে কওছার গাজীর ওয়ারেশ আব্দুল্ল্যাহ খোকন তার ঘরের সংস্কারের জন্য উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকীর কাছে আবেদন করলে আব্দুল হাই সিদ্দিকী সংস্কারের জন্য অনুমতি প্রদান করেন। অনুমতি নিয়ে আব্দুল্ল্যাহ খোকন ঐ পতিত জায়গা দখল করতে পূন: নির্মানের কার্যক্রম শুরু করেন। বিষয়টি লক্ষ্য করে মৃত জি এম আবুল কাশেমের ওয়ারেশ জি এম আল-মামুন উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তার কাছে আবেদন করলে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাই সিদ্দিকী কৈখালী তফশীদার সুধীন কুমারের কাছে একটি প্রতিবেদন চেয়ে প্রেরন করেন। সুধীন কুমার দু’পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাপজরিপ সহ তদন্তের প্রয়োজন হিসাবে উপজেলা সার্ভেয়ারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। আব্দুল্ল্যাহ খোকন প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে শ্যামনগর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক আল-মামুন লিটনকে ভাড়া করে নিয়ে আসে এবং লিটন তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অবৈধভাবে দখল করতে ভিত নির্মানের কার্যক্রম চালায়। জিএম আল-মামুন উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তার সাথে বিষয়টি জানালে, তিনি কৈখালী ভূমি কর্মকর্তাকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশে সুধীন কুমার ঘটনাস্থলে হাজির হলে সুধীন কুমারকে লিটন তাড়িয়ে দেয়। আব্দুল্ল্যাহ খোকন রাগান্বিত হলে এবং সংবদ্ধ ভাবে তেড়ে আসলে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে পুলিশের সহয়তা চান আল-মামুন। পরে শ্যামনগর থানার এসআই আবু বক্কর ও এএসআই মিলন যেয়ে ঘটনাস্থালের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রন করেন। পরে তারা চলে গেলে লিটন আবারও কাজ করার নির্দেশ দেয়।
এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক লিটনের কাছে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কাগজপত্র আছে বিধায় আমি কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। কাজ বন্ধ থাকবে কেন ? তুই ২০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়েছিস আব্দুল্ল্যাহ খোকনের কাছে। ফাজলামু করো ? চাঁদাবাজী মামলা করবো তোর নামে। বক্তব্য তোর পাছায় দেবো। তোর ব্যবস্থা করছি দাড়া। আমাকে যা করার করে নে। এই বলে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ সহ হুমকী প্রদর্শন করেন।
শ্যামনগর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক পরিচয়ে লিটন কর্তৃক এ ধরনের জায়গা দখল করে দেওয়ার বিষয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দোকানদার ও সচেতন মহল সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নের্তৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে কৈখালী তফশীলদার সুধীন কুমার বলেন, কাজ বন্ধের কথা বলে এসেছি। কিন্তু তারা কাজ বন্ধ করছে না আমি বিষয়টি উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে অবগত করেছি। তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ ব্যাপারে শ্যামনগর থানার এসআই আবু বক্কর বলেন, যে কোন পরিস্থতি শান্ত করতে আমরা আইনি প্রক্রিয়া ব্যবহার করবো।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মাদ শহিদুল্ল্যাহ বলেন, আমি ঢাকাতে আছি। তফশীলদার ও সার্ভেয়ারকে বলেছি কাজ বন্ধ সহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে তবে কাগজপত্র অনুযায়ী।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বলেন, আমি বিষয়টি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করছি।
এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বলেন, কোন প্রকার অবৈধ দখলের সুযোগ নেই। আমি বিষয়টি দেখছি।