
জাতীয় ডেস্ক:
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস আ্যসোসিয়েশনের সভাপতি স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম বলেছেন, পুলিশের চাকরিতে ঢাকায় থাকার যে প্রচেষ্টা তা শুধু নারী সদস্যদের মধ্যে নয়, পুরুষ পুলিশ সদস্যদের মধ্যেও রয়েছে।
তিনি বলেন, শুধু এসপি, কমিশনার কিংবা ডিআইজি করে পাঠালে সেটা যেখানেই হোক তারা রাজি হয়। কিন্তু অন্যান্য পদে থাকা সদস্যরা প্রায়ই ঢাকায় থাকার জন্য আকুলতা প্রকাশ করে।
আজ দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন প্রতিপাদ্যে’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস আ্যসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, যখন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এসপি হিসেবে পদোন্নতি পায় তখন এসপি হিসেবে একটি জেলায় যাওয়ার জন্য বলে। সেই জেলা যদি পঞ্চগড় কিংবা খাগড়াছড়ি হয় তাতেও তাদের আপত্তি থাকে না।
এসববি প্রধান বলেন, অ্যাডভান্স টেকনোলজির জন্য বর্তমান বিশ্ব যেখানে দাঁড়িয়েছে। এই টেকনোলজি ব্যবহার করেই পৃথিবী এগিয়েছে, আমরা এগিয়েছি। নারীবান্ধব টেকনোলজি উদ্ভাবন করা গেলে জেণ্ডার ইকুয়ালিটি সম্ভব হবে।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, নারী ও পুরুষের যে ইন্টারনেট ব্যবহারের বৈষম্য তা বড় আকারে দেখানো হচ্ছে সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি। ইন্টারনেটে সাইবার প্ল্যাটফর্মে নারীরা নিরাপদ নয় বলা হয়। ফলে তারা নানাভাবে হয়রানি, বুলিংয়ের শিকার হয়। এমনকি আত্মহত্যার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে নারীদের সহয়তার জন্য সাইবার স্পেসে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার কেন্দ্রিক আমাদের অন্যান্য ইউনিটও এগিয়েছে। আমরা যদি সাইবার স্পেসে সেফটি আ্যন্ড সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে পারি তাহলে নারীদের ক্ষেত্রে বড় বাধা কেটে যাবে। পুলিশ হিসেবে আমাদের ওপর সেই দায়িত্ব বর্তায়।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস আ্যসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে পুলিশ সদস্যদের অনুরোধ করে তিনি জানান, ফিজিক্যাল স্পেসকে নিরাপদ করার জন্য যেভাবে কাজ করে যাচ্ছি তেমনিভাবে সাইবার স্পেসকেও নিরাপদ করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে।
এসবি প্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ যদি বাস্তবতায়ন করতে চায় সে ক্ষেত্রে নারী পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে, নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে, তাদেরকে নীতি নির্ধারণীতে আনতে হবে। পাশাপাশি সকল নারীদের সমান সুযোগ করে দিতে হবে। এই কাজের দায়িত্ব যেমন পুরুষ সহকর্মীদের তেমন নারীদেরও দায়িত্ব আছে। নারীদেরও আগামীর অগ্রগতির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। নিজেকে নারী হিসেবে না দেখে কর্মকর্তা হিসেবে ভাবতে হবে। তবেই আমরা এগোতে পারবো।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার আ্যন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক প্রফেসর ড. তানিয়া হক, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম, এসবির উপ-মহাপরিদর্শক আমেনা বেগম, সাবেক ডিআইজি মিলি বিশ্বাস ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ।