আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাহুল গান্ধীর সামনে এখন চ্যালেঞ্জ দুটি। সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপকতায় ভারতে যে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে, সেটা নিরাময় এবং কংগ্রেসকে শক্তিশালী করা। ভারত জোড়ো যাত্রায় সমর্থকদের নিয়ে হাঁটছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। গত ৬ জানুয়ারি হরিয়ানা রাজ্যের পানিপথ শহরে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শেষ হয়েছে। পদযাত্রার শুরুতে প্রথম আলোতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে বর্তমান লেখকের লেখার শিরোনাম ছিল ‘গান্ধীদের শেষ যুদ্ধ’। এ রকম অন্তত আরও দুটি বড় ‘যুদ্ধে’র স্মৃতি আছে দক্ষিণ এশিয়ায়। একটা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী লবণ সত্যাগ্রহ বা ৩৮৫ কিলোমিটারের ডান্ডি পদযাত্রা। অপরটি আরএসএস-বিজেপি পরিবারের ‘রাম রথযাত্রা’। প্রথমটির শুরু ১৯৩০ সালের মার্চে। পরেরটি ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বরে।
মোহনদাসের ‘সত্যাগ্রহ’ ঔপনিবেশিক শাসনমুক্তির সংগ্রামকে এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছিল। তার ভেতর দিয়ে কংগ্রেস প্রধানতম রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বেরিয়ে আসে। আর লাল কৃষ্ণ আদভানিদের রাম রথযাত্রা ভারতকে সাম্প্রদায়িক ধারায় নতুনভাবে ভাগ করে হিন্দুত্ববাদের রাজনৈতিক জমিন তৈরি করে। চারদিকে এখন প্রশ্ন, আগের দুই পদযাত্রার পরম্পরায় দাঁড়িয়ে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কতটা রাজনৈতিক লক্ষ্য হাসিল করতে পারবে? কংগ্রেস কী ভাবছে?
হিসাব মেলাতে বসেছেন পণ্ডিতেরা
গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর কংগ্রেস নেতা রাহুলের পদযাত্রার শুরু ভারতের সর্বদক্ষিণে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে। শেষ হলো জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে, এ বছর ৩০ জানুয়ারি। মাঝে রাহুল হাঁটলেন চার হাজার কিলোমিটারের বেশি। পেরিয়েছেন ১২টি রাজ্যের প্রায় ৭৫ জেলা। একালের ভারতে নিঃসন্দেহে বড় এক রাজনৈতিক ঘটনা এটা। ১৯৪৭ সালের পর স্বাধীন ভারতে কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় জনসংযোগ প্রকল্প বলা যায় একে।
পদযাত্রার শুরু এবং শেষের স্থান বাছাইয়ে রাহুলের উপদেষ্টারা কেবল দেশের সর্বদক্ষিণ আর সর্ব–উত্তরকে বিবেচনায় নিয়েছেন, এমন নয়। দক্ষিণ এশিয়ায় কন্যাকুমারীর ভৌগোলিক সুনাম অসাধারণ। এখান থেকে সূর্য ওঠা ও অস্ত যাওয়া দুটিই দেখা যায়। রাহুল নিশ্চিতভাবে কংগ্রেসের ‘নিচুমুখী সূর্যটা’ ঊর্ধ্বমুখী করতে নেমেছেন। আর শ্রীনগরে যে তাঁর পদযাত্রা শেষ হলো, সেটিও বিশেষ তাৎপর্যবহ।