
# প্রার্থীদের মধ্যে অনেকের নেই ছাত্রত্ব , কেউ আবার বিবাহিত, অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ কারো কারোর বিরুদ্ধে।
# আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে একজনের বিরুদ্ধে ।
# স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতারা তাদের অনুসারী প্রার্থীদের নেতৃত্বে আনার জন্য তদ্বির চালাচ্ছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে চলছে তোড়- জোড় । যে কোন সময় কেন্দ্র থেকে ঘোষনা দেওয়া হবে জেলা ছাত্রদলের কমিটি। এমন খবরে প্রার্থীরা চেষ্টা -তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছেন কমিটির শীর্ষ দুটি পদে জায়গা করে নেওয়ার । ছাত্রত্ব নেই ,বিবাহিত , মাদক সিন্ডকেটে জড়িত , দখলবাজি চাঁদাবাজি সহ আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িতরাও শীর্ষ এ দুটি পদে আসীন হতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। আর এসব প্রার্থদের পক্ষে স্থানীয় প্রভাবশালী বি এন পি নেতারাও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের কাছে তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছেন। সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দিতাকারী জেলার মধ্যে যারা সামনের সারিতে আছেন তাদের ভাগ্য নির্ধারন যে কোন সময় ।
প্রার্থদের রাজনৈতিক জীবনবৃত্তান্ত পর্যালোচনা ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ সালে দু-বছর মেয়াদী জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয় । কমিটিতে সভাপতি পদে শেখ শরীফুজ্জামান সজিব ও সাধারন সম্পাদক পদে মমতাজুল ইসলাম চন্দন নেতৃত্বে আসেন। প্রায় ৭ বছর পর এই কমিটি সম্প্রতি ভেঙে দেওয়া হয় । শুরু হয় নতুন কমিটি গঠনের তোড় জোড়। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্শন করে সভাপতি সম্পাদক পদে নেতৃত্বে আসতে আগ্রহী প্রার্থরা রাজনৈতিক জীবন বৃত্তান্ত পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। কেন্দ্রে চলছে যাচাই বাছাই। জেলা ছাত্রদলে সভাপতি পদে আগ্রহীদের মধ্যে অন্যতমরা হলেন, মঞ্জরুল আলম বাপ্পী, এস.কে এম আবু রায়হান, সোহেল রানা, আইউব আলী , আসিফ ইকবল ও জাহাঙ্গীর আলম পলাশ । অপরদিকে সাধারন সম্পাদক পদে আগ্রহীদের মধ্যে অন্যতমরা হলেন, জে. এম দুদায়েভ মাসুদ খান অর্ঘ্য , শেখ ফারহান মাসুক , মো শাহিন ইসলাম, আসিফ মাহামুদ রিপন, ,ইমদাদুল হক বাবু, নাজমুল হাসান সোহেল ও মিজানুর রহমান মিজান।
সভাপতি পদ প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম বাপ্পী বর্তমানে সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক । বিগত দিনে তিনি ওয়ার্ড , ইউনিয়ন ও উপজেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন পদে ছিলেন। সরকার বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন নির্ভিক যোদ্ধা। তার নামে ৬ টি রাজনৈতিক মামলা হয় বিভিন্ন্ন সময়ে । ৩ বার কারাবরন করেন তিনি।বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের ডিগ্রী মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী ।
এস.কে এম আবু রায়হান সভাপতি পদপ্রার্থী : আবু রায়হান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে এল. এল. বি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বর্তমান বয়স ২৯ বছর । বিভিন্ন সময়ে তিনি ছাত্রদলের গুরত্বপূর্ন পদে ছিলেন । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ,জেলা ছাত্রদলের সাংগনিক সম্পাদক ও সদস্য এবং উপজেলা ছাত্রদলের সাহিত্য ও সাময়িকী সম্পাদক ।
সোহেল রানা সভাপতি প্রার্থী: তার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য বার বার যোগাযোগ করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি । একটা সুত্র মতে তিনি বিবাহিত ও ছাত্রদলের আদর্শ পরিপন্থি নানাবিধ কর্মকান্ডে জড়িত বলে অভিযোগ আছে।
সভাপতি প্রার্থী আইউব আলীর সঙ্গে বারংবার যোগাযোগ করলেও তিনি কোন সহযোগিতা করেননি।এমনকি তার রাজনৈতিক জীবন বৃত্তান্ত চেয়েও পাওয়া যায়নি । অনুসন্ধানে জানা গেছে ,তার ছাত্রত্ব নেই ।ছাত্রদলের আদর্শ পরিপন্থি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি এমন অভিযোগ আছে ।
সভাপতি প্রার্থী আসিফ ইকবাল বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে সাতক্ষীরা ল কলেজের ছাত্র । তিনি জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্মসম্পাদক এবং বি. এল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ছাত্রদলের আদর্শ পরিপন্থি কর্মকান্ডের অভিযোগ আছে ।
শেখ ফারহান মাসুক জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী তিনি ড্যাফোডিল ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বি. এস. সি সফটওয়ার ইনঞ্জিনিয়ারিং এ অধ্যায়নরত। তার বাড়ি শহরতলীর লাবসায় । সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য ,সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দ্বায়িক্তে ছিলেন মাসুক।
তার বিরুদ্ধে আছে বিগত সরকারের সময়ে ৩টি রাজনৈতিক মামলা । বারবার কারা বরন করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের কোন অভিযোগ অনুসন্ধানে প্ওায়া যায়নি । অনেকেটা ক্লিন ইমেজের অধিকারী তিনি। মাসুক জানান, দ্বায়িক্ত পেলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ,দেশ নেত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নীতি আদর্শ অনুসরন করে সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে ছাত্রদলের কর্মকান্ড গতিশীল করবেন। তার পিতা মিজানুর রহমান একজন সরকারী কর্মচারী ,মাতা মোছা ফেরদৌসি রহমান পরোলোক গমন করেছেন।
জে এম দুদায়েভ মাসুদ খান অর্ঘ্যের জীবনবৃত্তান্ত থেকে দেখা যায় তার পড়াশোনা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে । তার পিতা খান এ মীর্জা মাসুদ জুয়েলের ছিল ছাত্রদলের রাজনীতির দীর্ঘ ঐতিহ্য । কিন্তু পরে তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তবে আ্ওয়ামীলীগে তার বিশেষ কোন পদ পদবী ছিলনা ।আ্ওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমির হোসেন আমুর কাছের মানুষ ছিলেন তিনি। তার মাতা সাবিনা মাসুদ জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের সাতক্ষীরা জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক । তার দাদা খান মোক্তার আলী একাধিক বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । জে এম দুদায়েভ মাসুদ খান অর্ঘ্য সদ্য সাবেক জেলা ছাত্রদলে যুগ্মসাধারন সম্পাদক । বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের দীর্ঘ শাসন আমলে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিলনা । তবে সরকার পতনের আন্দোলনের সময় তিনি কারাবরন করেন। অর্ঘের বিরুদ্ধে গুরত্বর অভিযোগ হলো তিনি বিগত সময়ে আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসহযোগী সংগঠনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতেন। যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে ছিল তার সখ্যতা । এজন্য তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়নি । আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনী প্রচারনায় তাকে দেখা গেছে প্রকাশ্যে। প্রচার প্রচারনায় অংশ নেওয়া অসংখ্য ছবি এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে । ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন , সংসদ নির্বাচন ও পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচার -প্রচারনায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের সাথে অংশগ্রহন করতেন অর্ঘ্য ।
মো. শাহিন ইসলাম সাধারন সম্পাদক পদের প্রার্থী শহরের কাটিয়াতে তার বসবাস । তিনি আহসানিয়া মেডিকেল এন্ড কলেজে এস এ টি এস বিভাগে অধ্যায়নরত । বর্তমানে তিনি শহর ছাত্রদলের সদস্য সচিব । এছাড়া তিনি সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সাথে যুক্ত ছিলেন । তার বিরুদ্ধে কোন রাজনৈতিক মামলা নেই। তিনি এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন ,আন্দোলন সংগ্রামে বিভিন্ন সময়ে আটক হয়ে টাকা খরচ করে মুক্ত হতেন তিনি।
সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী আসিফ মাহামুদ রিপনের জীবন বৃত্তান্ত থেকে দেখা যায় তার ছাত্রত্ব নেই ।তিনি সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ ছাত্রদলের বর্তমান আহবায়ক ,সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক কলেজ ছাত্রদল ,সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ার্ড ছাত্রদল ।তার বিরুদ্ধে ৩ টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে।
ইমদাদুল হক বাবু সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী, মাদ্রসা পড়ুয়া বাবু মাস্টার্স ফল প্রার্থী । বর্তমানে তিনি পৌর ছাত্রদলের ২ নং যুগ্ম আহবায়ক , পৌর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি । দশম শ্রেনিতে পড়াকালীন সময়ে তিনি নাশকতা মামলায় কারাবরন করেন।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পলাশ শহরের পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা । তার শিক্ষাকতা যোগ্যতা বি এ । তিনি জেলা ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ,সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক বন ্ও পরিবেশ বিষায়ক সম্পাদক এবং সাবেক সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া ও সাতক্ষীরা সিটি কলেজের আহবায়ক নাজমূল হাসান সোহেল , সাতক্ষীরা পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউয়ের আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজান সাধরন সম্পাদক পদে আসতে আগ্রহী ।
ছাত্রদলের পদে আসতে বয়সের হিসাব জানতে চাইলে ,ছাত্রদলের সিনিয়র নেতা এস. কে.এম আবু রায়হান এই প্রতিবেদককে জানান, সর্বোচ্চ ২০০৮ সালে এস. এস. সি পাশ করা ছাত্রদলের নেতারা প্রার্থী হতে পারবেন।