আলহুসাইন অমি:
‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ কথাটির যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করলেন কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন। তার মানবিকতা আবারো অনুভূতির নরম জায়গাটিতে স্পর্শ করে গেল।
গত মে মাসের ৩১ তারিখের ঘটনা। নড়াইল জেলার আইয়ুব আলী পেশায় ড্রাইভার। আগে ছিল দিন মজুর। কোমরে ব্যাথার কারনে এখন আর তা পারে না। তাই কিছুদিন আগে ব্রাক ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে একটি প্রাইভেট কার কিনে সেটি ভাড়ায় চালায়। মে মাসের ৩০ তারিখে আইয়ুব আলী একটি ভাড়া নিয়ে নড়াইল থেকে ঢাকায় যায়। ঢাকা থেকে ফেরার পথে সে সাতক্ষীরার একটি ভাড়া পায়। চুক্তি হয় সাত হাজার টাকা। পরদিন ৩১ মে যাত্রী নিয়ে সে সাতক্ষীরা চলে আসে। সাতক্ষীরা পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও যাত্রীরা তাকে নিয়ে যায় কালিগঞ্জ পর্যন্ত। তারা যখন কালিগঞ্জে পৌছায় তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। যাত্রীরা ড্রাইভার আইয়ুব আলীকে অন্ধকার রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে বাড়িতে ভাড়ার টাকা আনতে যাওয়ার নাম করে কেটে পড়ে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর ঘটনা বুঝতে পেরে হতাশ হয়ে নড়াইলের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আইয়ুব আলী। পতিমধ্যে সাতক্ষীরায় পৌছালে তার পরিচিত একজনের সাথে দেখা হয়ে যায়। সাতক্ষীরার পরিচিত সেই ব্যক্তি কালিগঞ্জ থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানানোর জন্য আইয়ুব আলীকে পরামর্শ দেয়। এরপর আইয়ুব আলী কালিগঞ্জ থানায় ফোন করলে থানা থেকে তাকে ডেকে পাঠানো হয়। থানায় গিয়ে অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেনকে বিস্তারিত জানায় সে। ঘটনার সত্যতা বুঝতে পেরে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তৎক্ষনাৎ বাটপার সেই যাত্রীদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তাদেরকে ধরে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর গাড়ি চালক আইয়ুব আলীকে তার পাওনা টাকা আদায় করে দেন।
এ ঘটনা নিয়ে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে দেখা গেছে। সেই ভিডিওতে বাংলাদেশ পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করে ড্রাইভার আইয়ুব আলী বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। করোনার লকডাউনে থেকে পকেট যখন একেবারেই খালি তখন আদায়কৃত ভাড়ার এই পাঁচ হাজার টাকা তার কাছে এক কোটি টাকার সমান। পুলিশ নি:স্বার্থভাবে দ্রুততার সহিত তার ভাড়ার টাকা আদায় করে দিয়েছে। আবেগে আপ্লুত হয়ে আইয়ুব আলী এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলে এবং পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন মোবাইলে জানান, ঘটনাটি সত্য। আইয়ুব আলীর ফোন পাওয়া মাত্র তিনি তাকে থানায় ডেকে নিয়ে ঘটনার দ্রুত মিমাংসা করে দেন। তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের এসপি একজন জনবান্ধব মানুষ। তার নিয়ন্ত্রনে থাকা সকল পুলিশ সদস্যরাও তেমনি। তাই সকল সমস্যা নিরসণে পুলিশ সার্বক্ষণিক জনগণের পাশে রয়েছে।