
প্রতিনিধি: জেলার আশাশুনি উপজেলার ৯৭ নম্বর দয়ারঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দীর্ঘদিন ধরে রাখা সিমেন্টের খাম্বা (ব্লক) দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় অভিভাবকরা। মাঠ দখলের কারণে প্রায় ১৫০ শিক্ষার্থী খেলাধুলা, শারীরিক চর্চা ও বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা পারভীনের লিখিত আবেদনে বলা হয়েছে, খোলপেটুয়া নদীর দয়ার ঘাট সংলগ্ন ওয়াপদা ভেড়ীবাঁধ নির্মাণকাজে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকার তত্ত্বাবধানে গত দুই বছর ধরে বিদ্যালয়ের মাঠটি ব্লক তৈরির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে সাময়িকভাবে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া সত্ত্বেও কোনো সময়সীমা মানা হয়নি।
সুত্রে জানা যায়, দয়ারঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় পাঠদান চলছে পাশের জরাজীর্ণ ঘরে। এ পরিস্থিতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরো মাঠে মালামাল রেখে দখল করে রেখেছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য চরম অসুবিধার সৃষ্টি করছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, একাধিকবার মৌখিকভাবে জানানো সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপ হয়নি। এরপর বিদ্যালয় থেকে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে মাঠ খালি করার আবেদন জানানো হয়। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর ইউএনও কৃষ্ণা রায় স্বাক্ষরিত একটি পত্র পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো হয়েছে। পত্রে মাঠ থেকে ব্লক অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা পারভীন বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা ও বিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক রাখতে মাঠ খালি করা জরুরি। আমরা দ্রুত সমাধান আশা করছি।” স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে বিদ্যালয়ের মাঠ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হয়ে একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমীন জানান, “দয়ারঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ব্লক রাখার কারণে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিক্ষাদানের সুযোগ কমে গেছে। এটি একটি গুরুতর সমস্যা। আমরা বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। মাঠ খালি হলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা, শারীরিক চর্চা এবং স্বাভাবিক পাঠদান করতে পারবে। আমরা আশা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।”