নিজস্ব প্রতিবেদক: এক কালের লবন চোরাকারবারী আবু হাসান রাজনৈতিক জোটের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ভোমরা স্থলবন্দরের নিয়ন্ত্রন নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। লক্ষ্যে পৌছতে দুটি শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে বাসিয়েছে দু’জন রাজনৈতিক নেতাকে। চক্রটি অতি সম্প্রতি ভোমরা স্থল বন্দরে অসন্তোষ তৈরি করলে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপে তা থেমে যায়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, দেবহাটা উপজেলার উত্তর পারুলিয়া গ্রামের জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম ওরফে বাঘার পুত্র আবু হাসান। সীমান্ত উপজেলায় বাড়ী হওয়ায় প্রথম কর্মজীবন শুরু হয় ওপার থেকে লবন এপারে এলে তা পাইকারী বিক্রী করার মধ্য দিয়ে। তার পিতাও সীমান্তে চোরাকারবারী ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো। জামায়ত নেতা রফিকুল ইসলামের নামে একাধীক চোরাচালানী মামলাও ছিলো। একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্তও হন তিনি। পিতা পুত্রের চোরাচালান ব্যবসা চলতে চলতে কোন এক সময় আবু হাসান ভোমরা স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। সেখানে এসে যশোরের একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পেয়াজের কারবার শুরু করেন আবু হাসান। ভোমরা থেকে পেয়াজ নিয়ে হাট-বাজারে পাইকারী বিক্রি করতেন আবু হাসান। পিতা জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলামের হাত ধরে আবু হাসানের জামায়াতে প্রবেশ। এরপর জেলা জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের তদ্বিরে ইসলামী ব্যাংক থেকে আবু হাসান ব্যবসায়ীক ঋণ পান। সর্বশেষ এই ব্যাংকে আবু হাসানের ঋণের পরিমান শতকোটি টাকা। নিজ গ্রাম, ভোমরা স্তল বন্দর, বিনেরপোতা ও বাইপাসে আবু হাসানের আছে ডজনখানেক বাড়ী, মার্কেট ও গোডাউন। বাইপাসের ধারে তৈরী করছে ক্যাডেট মাদ্রাসা। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম রাফসান গ্রুপ। বিনেরপোতায় ১১ বিধা জমিতে ফুড এন্ড বেভারেজ প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। এখানে ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন নিশ্চুপ আছে।
বর্তমানে আবু হাসান শতকোটি টাকার সম্পদের মারিক বনে গেছে। বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক আবু হাসান এখন ভোমরা স্থল বন্দরের নিয়ন্ত্রন নিতে চায়। জামায়াতের সহযোগীতায় কোটিপতি বনে যাওয়া আবু হাসান জেলা জামায়াতের শীর্ষ ডোনারও বটে। প্রকাশ্যে তিনি রাজনীতি না করলেও তার পিতা জামায়াতের ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা এবং মা জামায়াতের রোকন।
আবু হাসান একটি রাজনৈতিক জোটের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ভোমরা স্থলবন্দরের নিয়ন্ত্রন নিতে চায়। পরিকল্পনা করে তিনি দুটি শ্রমিক সংঠনে ২ জন জামায়াত নেতাকে নেতৃত্বে বসিয়েছেন অর্থ ব্যয় করে। ১১৫৫নং হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল এবং ১১৫৯ এর সাধারণ সম্পাদক হারুন দু’জনই জামায়াতের প্রতিনিধি। এই দু’জনকে নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী করতে আবু হাসান অর্থ ব্যয় করেন। সম্প্রতি ভোমরা স্থল বন্দরে শ্রমিক অসন্তোষের মূলেও আবু হাসান কলকাঠি নেড়েছে বলে অভিযোগ আছে। তবে প্রশাসন সময়মতো হস্তক্ষেপ করে শ্রমিক অসন্তোষ থামিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা পর্যবেক্ষণে আছে। সম্প্রতি ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানীকারকদের এক সভা থেকে আবু হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কিছুদিন পূর্বে সিএন্ডএফ এজেন্ট্স এসোসিয়েশনের নির্বাচনেও আবু হাসান নিজে এবং তার মতাদর্শের লোককে কমিটির নেতৃত্বে বসাতে তৎপর হয়ে ওঠে।
বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বে আবু হাসান এবং তার সংগঠনের লোকজন বসিয়ে সুযোগ বুঝে ভোমরা স্থল বন্দরে আবু হাসান তার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়।
ভোমরা স্থলবন্দরকে অশান্ত করতে তৎপর হাসান
পূর্ববর্তী পোস্ট