
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর সার্বজনীন দূর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের কমিটি গঠন নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সাংগঠনিক নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে কমিটি করায় দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ও সংঘর্ষ বাঁধার আশংকা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, গত ১৩ জুলাই রাতে এলাকার কাউকে না জানিয়ে নিজেদের পছন্দের কিছু লোকজন নিয়ে বৈঠক করে একটি পকেট কমিটি গঠন হয়। এতে নিলিপ কুমার মল্লিক সভাপতি ও নিরঞ্জন ঘোষ ছোট্টু সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একতরফা নিজেদের লোকজনের সমর্থনে নির্বাচিত হয়। এ খবর জানতে পেরে অপর একটি গ্রুপের লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে বিগত দিনের হিসাব-নিকাশ ও পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে কমিটি গঠনের তীব্র প্রতিবাদ জানান। এরপরেও তারা ব্রহ্মরাজপুর সার্বজনীন দূর্গা পূজা উদযাপন পরিষদে নিলিপ কুমার মল্লিক সভাপতি ও নিরঞ্জন ঘোষ ছোট্টু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে মর্মে ফেসবুকের মাধ্যমে একটি খবর প্রকাশ করে। ফেসবুকের এই খবরে ব্রহ্মরাজপুর এলাকার অধিকাংশ হিন্দু নারী-পুরুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ, বিতর্ক ও প্রকাশ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মাঝে মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে। আবার কেউ কেউ এই কমিটিকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় দু’গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধার আশংকা প্রকাশ করেছে।
নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন ঘোষ ছোট্টু মোবাইলে সাতনদীকে জানান, রাতে তো সবাই মিটিংয়ে হাজির হয় না। তবে ৫০/৬০ জন লোক সই-স্বাক্ষর করে। সবার মতামতে কমিটি হয়েছে। নিজেদের লোক দিয়ে কমিটি করার কোন প্রশ্নই আসে না।
অন্যদিকে, অপর গ্রুপের এস,কে বোস, স্বদেশ মল্লিক, প্রকাশ চন্দ্র সাহা ও মৃত্যুঞ্জয় আঢ্য সাতনদীকে জানান, এটা সম্পূর্ন একটি অবৈধ কমিটি। নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সার্বজনীন মতামত উপেক্ষা করে এ কমিটি করা হয়েছে। ২৫০/৩০০ লোক পূজা কমিটির কাছে চাঁদা দিয়ে থাকে। অথচ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চাঁদাধারী লোকদের অবমূল্যায়ন করে সাংগঠনিক নিয়ম-কানুনের বাইরে কমিটি করা হলো। এটা আমরা মানি না, মানব না।
এদিকে, এই কমিটি গঠনের বিরোধীতা ও অবৈধ কমিটি আখ্যা দিয়ে ব্রহ্মরাজপুর গ্রামের ২২৯ জন স্বাক্ষরিত পৃথক ৩টি অভিযোগ লিখিত আকারে সাতক্ষীরা জেলা মন্দির সমিতি, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর জমা দিয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা মন্দির সমিতির সাধারণ সম্পাদক রঘুজিৎ গুহ সাতনদীকে জানান, কমিটি গঠন নিয়ে দুটি পক্ষ হয়েছে। আমরা দুটি পক্ষ নিয়ে বসতে চাই। সাংগঠনিকভাবে এটা সমাধান করা হবে।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল সাতনদীকে জানান, লিখিত অভিযোগটি পেয়েছি। এটা পূজা উদযাপন পরিষদের কাজ। বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়েছে।
সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শীবপদ গাইন লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সাতনদীকে জানান, এটা সাংগঠনিকভাবে দ্রুত সমাধান করা হবে। চলতি সপ্তাহে দূর্গা পূজা মন্দির প্রাঙ্গনে এলাকার সূধীজন, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্টেক হোল্ডারসহ দু’পক্ষের লোকজনদের উপস্থিতিতে বিষয়টি শান্তিপূর্ন নিষ্পত্তি হবে।