
জাতীয় ডেস্ক:
সুনামগঞ্জে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে তল্লাশি, গৃহবধূর শ্লীলতাহানি ও লুটের চেষ্টার অভিযোগে আব্দুল কুদ্দুস ডলার নাহিদকে গ্রেপ্তার করছে র্যাব। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে আটক করা হয়।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নতলা গ্রামে গোয়েন্দা সংস্থার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোকসেদ আলী এবং তার কয়েকজন প্রতিবেশীদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ঘরের দরজায় বেশ কয়েকবার সজোরে ধাক্কা দেন। ভেতর থেকে পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। পরিচয় শুনে দরজা খুলে দিলে ভেতরে ঢুকে পুরো ঘর তল্লাশি করতে থাকেন। এ সময় নাহিদ ও বিজন বাড়ির অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূর ঘরে ঢুকে তাকেও নাজেহাল করেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি র্যাব-৪ মামলার আসামি বিজন রায়কে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। বিজনের মাধ্যমে র্যাব জানতে পারে সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িসহ কয়েকজনের বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিচয়ে লুটপাট এবং চাঁদাবাজির মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল কুদ্দুস ডলার নাহিদ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল কুদ্দুসকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া পরিচয়পত্র, পোশাক পরিহিত ছবি জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
গ্রেপ্তার আব্দুল কুদ্দুস ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তিনি ২০১৬ সালে ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নেন। এই সুবাদে তার বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। তাদের কার্যক্রম রপ্ত করে গত ৫-৬ বছর ধরে নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খল বাহিনীর একজন কর্মকর্তা পরিচয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণা করেন নাহিদ। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।