আব্দুর রহিম, কালিগঞ্জ: আজ সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জের রাজা বসন্ত রায়ের স্মৃতি বিজড়িত বসন্তপুর নৌবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-(এমপি)। খুলনার বিভাগীয় জনসভা থেকে ভার্চুয়ালি এই নৌ বন্দরের ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন করবেন তিনি। উদ্বোধনকে ঘিরে বর্তমানে কালিগঞ্জের বসন্তপুরে নৌ-বন্দরে সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য নাম ফলকের জায়গা নির্বাচন করেছে বিআইডব্লিউ কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত: ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায় পাকিস্থান আমলের বসন্তপুর নৌ-বন্দর। এরপর থেকে বন্দরটি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়ে আসতে থাকেন স্থানীয়রা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বসন্তপুর নৌ বন্দর চালু দাবিটি জোরালো হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার সুবাদে বসন্তপুর নৌ-বন্দরটি চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার এবং গত বছরের ২৫ অক্টোবর বসন্তপুর নৌবন্দরের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এদিকে, দীর্ঘ ৫৭ বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌ-বন্দরটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়ায় বন্দরজুড়ে বসবাসরত মানুষের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বন্দরটি চালু হলে ওই এলাকার উন্নয়নসহ ভারত-বাংলাদেশ আন্তঃদেশীয় ব্যবসা-বানিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিনোদন প্রেমিদের জন্য একটি পর্যটন এলাকায় পরিনত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বসন্তপুরে ব্রিটিশ আমল থেকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ব্যবসা-বানিজ্যের জন্য গড়ে উঠেছিল এই নৌ-বন্দর। জমকালো এই নৌবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায় এখান থেকে আরও ৫৭ বছর আগে। তবে এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু স্থাপনা। আছে একটি জরাজীর্ণ কাস্টমস ভবন। কাকশিয়ালী-ইছামতি-কালিন্দী-এই তিন নদী এক মোহনায় মিশেছে বসন্তপুর গ্রামে। এখানে এক সময় ছিল সমৃদ্ধ নৌ-বন্দর। বাণিজ্য হতো ভারতের সাথে। কাছেই সীমান্তের ওপারে ভারতের হিঙ্গলগঞ্জ। সেখান থেকে বেশি দুরে নয় কলকাতা শহর। ফলে এখানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বানিজ্যের রয়েছে যথেষ্ট সম্ভাবনা। এখন এখানে পুরনো বাণিজ্যের কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে জরাজীর্ণ কাস্টমস ভবন। এছাড়াও রয়েছে তৎকালিন সময়ের ইমিগ্রেশন অফিসসহ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের স্টাফ কোয়ার্টার। নৌ-বন্দর চালু হলে অর্থনৈতিক প্রাণ-চাঞ্চল্য ফিরে আসবে ওই এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়া বসন্তপুর নৌ বন্দরের এলাকায় ১৪ বিঘা সরকারি খাস জমি রয়েছে। সম্প্রতি মাপ জরিপ করে এর সীমানাও নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া গত বছল পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর কোলকাতার সঙ্গে দূরত্ব কমে যাওয়ায় ভোমরা বন্দরের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। তাই বসন্তপুর নৌ-বন্দরটি চালু হলে ভোমরা বন্দরের উপর চাপ কমার পাশপাশি দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যর সম্প্রসারণ ঘটবে।
বসন্তপুর নদী-বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন আজ
পূর্ববর্তী পোস্ট