মেহেদী হাসান, খুলনা থেকে: খুলনা কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চয়িতা দাশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার মনোমুগ্ধকর বক্তব্যে মুগ্ধ করলেন। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকৃত দুই হাজার কিলোমিটার মহাসড়কের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে খুলনার ৩৫২ দশমিক ২৬ কিলোমিটার মহাসড়কও রয়েছে। এই উন্নয়নকৃত মহাসড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চয়িতা দাশ খুলনার শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য তুলে ধরেন।
খুলনা জেলা স্টেডিয়াম থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চয়িতা দাশ বলেন, আপনার মতো একজন মহাত প্রাণ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলার সুযোগ প্রদানের জন্য খুলনা জেলার সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ধন্যবাদ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার জন্য আজ আমরা খুলনা থেকে মাত্র ৩ ঘন্টায় পদ্মাসেতুর উপর দিয়ে ঢাকা পৌছাতে পারছি এছাড়াও সড়ক পথ তৈরি, প্রসস্থ করন ও মেরামতের মাধ্যমে আমাদের সড়ক পথে চলতে কোন অসুবিধা হয় না। প্রধানমন্ত্রী আপনার জন্য আমরা কয়রা, পাইকগাছা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত চুকনগর হয়ে সাতক্ষীরা পৌছাতে পারছি। পাশাপাশি সড়ক পথে সুন্দরবন ভ্রমণেরও সুযোগ পাচ্ছি। খুলনায় আপনি যে রাস্তাগুলো তৈরি করে দিয়েছেন এবং উদ্বোধন করেছেন সে গুলোতে তৈরি করা হয়েছে ফুটপাথ যেগুলার মাধ্যমে আমরা নিরাপদে স্কুলে পৌছাতে পারছি এবং দুর্ঘটনাও কমে এসেছে।
স্কুল ছাত্রী চয়িতা দাশ আরও বলেন, বছরের প্রথম দিন আমরা যে বিনামূল্যে বই পাচ্ছি তার জন্য আমরা আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ। এছাড়াও আপনি তৈরি করেছেন নান্দনিক ভবন স্কুল গুলোতে, সারাদেশের ৯১৭৬টি ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ ও ৩০০টি ‘শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা আইসিটিতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারছি। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমের মাধ্যমে আমরা আমাদের জরুরি ভিডিও বা ছবি দেখতে পারি, যার জন্য আমরা শিক্ষার্থীরা আনন্দ উপভোগ করতে পারছি। এছাড়াও প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় বৃত্তি ও উপবৃত্তি এতে উপকৃত হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনাকে বার বার ক্ষমতায় দেখতে চাই। আপনার জন্য বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ উন্নত হবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করি। সেই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনাকে খুলনায় দেখতে চাই। খুলনাবাসীর সকলের পক্ষ থেকে আপনাকে খুলনায় আসার জন্য বিনিত অনুরোধ করছি।
চয়িতা দাশের কথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুগ্ধ হয়ে বলেন, অনেক অনেক ধন্যবাদ, খুব খুশি হলাম। তোমরাই আমার স্মার্ট বাংলাদেশের রুপকার হবে, তোমরাই তো বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করবে। স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গী তোমরাই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় খুলনা জেলা স্টেডিয়াম প্রান্ত থেকে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু, বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
খুলনা কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির খ- শাখার ছাত্রী চয়িতা দাশ ক্লাশে ভর্তি রোল নম্বর-১৫। তার বাবা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতা মানস কুমার দাশ ও মা লিপা রাণী দাশ। চয়িতা স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হবে। সে স্কুলে একজন ভালো বির্তাকিক।
প্রধানমন্ত্রীকে মুগ্ধ করলেন খুলনার স্কুলছাত্রী চয়িতা দাশ
পূর্ববর্তী পোস্ট