
নিজস্ব প্রতিনিধি :
সুঠাম দেহ, সুন্দর চেহারা, চোখে কালো চশমা দেখেই মনে হয় কোন বাহিনীর সদস্য। এটাকেই পুঁজি করে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে ও বোকা বানিয়ে চাঁদাবাজির বিস্তার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে । কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে যেয়ে জনতার হাতে আটক হয়েছেন একাধিক চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত কথিত সাংবাদিক মামুন। সে কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দুদলী গ্রামের সাকের আলির ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধার সময় কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর বাজারে। এসময় উত্তেজিত জনতা মামুনকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব আলিম আল রাজি উত্তেজিত জনতার নিকট হতে তাকে উদ্ধার করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, একটি সাইকেল ভাঙ্গার ঘটনা প্রসঙ্গে জি,এম মামুন নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে রতনপুর ইউনিয়নের গড়ুইমহাল গ্রামের মোঃ আকবর আলীর ছেলে মোঃ মিয়ারাজ হোসেনকে তার বাড়ি হতে আটক করে নিয়ে আসেন। এরপর স্থানিয় এক মুক্তিযোদ্ধার নাতিকে আটক করার জন্য তাদের ঘরে তল্লাশি চালায়।
এসময় মামুন মিয়ারাজকে পুলিশে ন্যায় তল্লাশি করেন এবং চোর ও মাদকসেবী অপবাদ দিয়ে থানায় নিয়ে যেতে চান। তাছাড়া সাইকেল ভাঙ্গার জরিমানা বাবদ ও পুলিশ পরিচয়ে মামুন মিয়ারাজের নিকট অর্থ দাবি করেন। এসময় সন্দেহ হলে এলাকার মহিলারা প্রথমে তাকে আটক করেন। পরে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে তাকে গণধোলাই দেয় ও আটকে রাখে।
এ-সম্পর্কে ভুক্তভোগী মিয়ারাজ বলেন,” আমি বাড়িতে ছিলাম। মামুন আমার প্যান্টের বেল্ট ধরে বলেন,”থানায় চল, তোকে রিমান্ডে নেব”। সে আমাকে তল্লাশি করে এবং টাকা দাবি করে। তখন সন্দেহ হলে সবাই তাকে আটক করে। পরে জানতে পারি যে,সে ভূয়া পুলিশ। তখন জনতা তাকে গণধোলাই দেয় এবং চেয়ারম্যান সাহেব তাকে উদ্ধার করে।
এবিষয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রতনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব এম আলিম আল রাজি (টোকোন) বলেন,” মামুন পুলিশ পরিচয়ে একজনকে আটক করে চাঁদাবাজি করছিল,স্থানিয় জনগণ তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। আমি তাকে উদ্ধার করি। মামুনের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ পাইছি। সে জীবনে কখনো এমন কাজ আর করবেনা মর্মে কথা দিয়েছে। তাই একবারের জন্য তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।”
এবিষয়ে জানতে চাইলে মামুন বলেন, আমার ভাইয়ের সাইকেল নিয়ে যায় ওই ছেলেরা তাই তাদের বাড়িতে গিয়ে ছিলাম সাধারণ পাবলিক হিসাবে শোনাবোঝা করতে। আমি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চাদা দাবি করিনি । এবিষয়ে আমি স্থানীয় মেম্বার সহিবুল্লাকে অবগত করে ছিলাম।
এ-সম্পর্কে রতনপুর ইউপি সদস্য সহিবুল্লা জানান, আমি বিষয়টি সুনেছিলাম কিন্তু আমি তাদের সাথে ছিলাম না, আমি বাইরে ছিলাম আজ ।
এবিষয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি তিনি পুলিশ পরিচয় দেয়নি। কিন্তু লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত গত তিন দিন আগে মামুন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে শ্যামনগরের এক খামারির গরু আটক করে চাঁদা দাবি করে। তাছাড়া ইতিপূর্বে কালিগঞ্জ থানায় তার নামে একাধিক চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে।