
নজরুল ইসলাম, তালা থেকে: পাটকেলঘাটা তালা উপজেলার একটি প্রশাসনিক অঞ্চল ও প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র হিসাবে অতি পরিচিত হলেও নেই অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধারা। সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পাটকেলঘাটাবাসী।এবিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বার বার সংবাদ প্রকাশ করার পরেও আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাজারের ব্যাবসায়ীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, পাটকেলঘাটা বাজারে প্রায় ৩ হাজার ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং এখানে রয়েছে জেলার অন্যতম গরুর হাট, ধানের হাট সহ খুলনা বিভাগের সহ বড় পানের বাজার।পাটকেলঘাটার এই মোকাম থেকে প্রতি বছরে প্রায় কোটি টাকা রাজাস্ব আসে সরকারের। কিন্তু পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর সামনে রাস্তা এখন পানির নিচে। এছাড়া বাজারের মূল-সড়ক বছর চারেক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বাজারের কালীবাড়ি রোড, বল ফিল্ড রোড, পল্লী বিদ্যুৎ রোড সহ বাজারে সকাল রাস্তা পানির নীচে তলিয়ে গিয়ে বড়র গর্তের ন্যায় পুকুরের মত অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এমনি বেহাল দশায় জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে পাটকেলঘাটার কলেজ রোড, পাঁচ রাস্তা মোড়, কাউন্সিল রোড, গাড়ীহাটা রোড অন্যতম। এসকল এলাকায় একটু বর্ষায় রাস্তাগুলোতে কোথাও হাঁটু পানি কোথাও কোমর পানি জমে যায়। কয়েকজন ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাটকেলঘাটা বাজারের ব্যবসায়ীরা পড়েছে সংকটে, চার বছর ধরে এমন অবস্থায় তারা ব্যাবসা করছেন কোন রকম। এত চরম প্রতিকুলতা পেরিয়ে মালামাল আনা নেওয়া অসম্ভব হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন বড় বড় শহরের পাইকারী ব্যাবসায়ীরা আসছে না এই বানিজ্যিক নগরীতে। ছোট বড় মালবাহী ট্রাক মালামাল সরবরাহ করা অসম্ভবপার হয়ে পড়েছে। যদিও কোন মালবাহী আসছে তার ভাড়া টানতে হচ্ছে দ্বিগুন, আর তাতে করে মালামাল ক্রায়ের ক্ষেত্রে অধিক দাম পড়ে যাচ্ছে। আর দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি মধ্যে আরো বেশি দাম ধরলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। মালআনা নেওয়া না করতে পারলে ব্যাবসা করবে কি ভাবে। ব্যাবসা বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে এই মোকারমে ব্যাবসায়ীদের।ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এ সকল রাস্তায় যাতায়াতকারী হাজার হাজার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। এদিকে, বাণ্যিজিক এই বাজারে প্রতি বুধবার ও শনিবার সাপ্তাহিক হাটের দুই দিন লাখো ক্রেতা-বিক্রেতা পাটকেলঘাটায় আসেন। এছাড়া এলাকার স্কুল-কলেজের হাজারো ছাত্র-ছাত্রী এসব পথে যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার কারণে চরম বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে তাদেরকে।দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করা ও কোন রাস্তায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় রাস্তাগুলোর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সাধারণত মানুষ। স্কুল ইউনিফর্মে লাল কাদামাটি মাখা হাইস্কুল রোডে কয়েকজন স্কুল ছাত্র বলেন, ১৫ আগষ্ট আজ আমরা জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীতে রাস্তায় পানি ও গর্ত থাকার কারনে র্যালি দিতে পারিনি। আমরা স্কুলে যাওয়া আসা করতে খুব কষ্ট হয় চার পাঁচ বছর ধরে আমাদের হাইস্কুল রোড় পানিতে তোলানো। নাম প্রকাশ না করলেও তারা বলেন আমাদের এমপি স্যার শুধু গল্প দেয় কাজের কাজ কিছুই না। হাইস্কুল রোডে পানির মধ্যে চালিয়ে আসা ট্রাক চালক জমির উদ্দিন বলেন, আমাদের এখানে কেউ ভালো না চেয়ারম্যান ভালো না, মেম্বার ভালো না, উপজেলা চেয়ারম্যান ভালো না, আর এমপি তো মোটেও ভালো না দেখলাম না কোন দিন। কালিবাড়ী রোডে ইঞ্জিন ভ্যান চালক হায়দার আলী বলেন, আর পারছি না আমাদের পাটকেলঘাটা দেখার কেউ নেই এমপি সাহেব আমাদের কিছুই করলো না। এ্যসিল্যান্ড অফিস রোড়ে ভ্যান চালক রহমত আলী,বলফিল্ড রোডে ভ্যান চালক মুনতাজ উদ্দিন জানান কি আর বলবো এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ভ্যানগাড়ী কেনা এই ডিজিটাল রাস্তার ভ্যান চালিয়ে কিস্তির টাকা শোধ তো দুরের কথা সংসার চালাতে পারছি না। পাটকেলঘাটা বাজারের মুদি দোকানদার লিটন হোসেন বলেন, ব্যাবসা করতে পারছি না কাদামাটি ভেঙে কেউ আসে না। এমপি সাহেব কে তো দেখলাম না, কোন দিন খোঁজ নিল না কয়েক বছর ধরে রাস্তায় পানি জমে আছে। দেখার কেউ নেই। কালীবাড়ি এলাকার জুতা ব্যাবসায়ী মাহাতাব উদ্দিন ও চা বিক্রেতা আহাদ আলী বলেন, আমরা বড় বড় গর্ত ও কাদার মধ্যে দোকানদারী করতে পারছি না। ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না তাদের খুব কষ্ট হয়। আমরা কয়েকবার এমপি মহাদয়ের কাছে দরখাস্ত করেছি কিন্তু কিছুই পেলাম না। মোটরবাইক নিয়ে পানিতে গর্তের মধ্যে পড়ে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পথচারী বলেন, দেশে কত উন্নয়ন হচ্ছে আসলে আমাদের কপাল খারাপ দোষ কাউকে দিবো না আমরা সঠিক জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে ব্যার্থ হয়েছি। তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ এর তালা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এস এম সোহাগ হোসেন রানা সহ সরকারি দলের একাধিক নেতাকর্মীদের কাছে পাটকেল ঘাটার চরম ভোগান্তিতে মানুষ নেই কোন রাস্তা পানিতে তলিয়ে বানিজ্যিক নগর, স্কুল কলেজ ও চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মানুষ চরম বিপাকে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা দায়সারা বক্তব্য দিয়ে অভিযোগেরতীর ছুড়লেন সরাসরি সাতক্ষীরা- ১ এর মাননীয় সংসদ সদস্য এড, মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপির দিকে। তথ্য সূত্রে বলছে, (তালা-কলারোয়া) সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা। তিনি ১৪ দলের প্রাথী হিসেবে মনোনীতি হয়ে ও নির্বাচন চলাকালীন জাতীয় পার্টির সর্মাথন নিয়ে দুই বার সংসসদস্য হলেও ক্ষমতাসীন দল তার শরিকদলের কারও সাথে সমন্বয় না করে তার ইচ্ছা মতন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এছাড়া তিনি তার এলাকায় ২ বার সংসদ সদস্য হলেও কোন দৃশ্যমান উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ স্মাট দেশে রুপান্তিরিত হওয়ার পথে থাকলেও তার কিঞ্চিত পরিমাণ স্বাধ পাননি এই জনপদের সাধারণ মানুষ।