প্রমথ সানা, পাইকগাছা থেকে: খুলনার জেলার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর, লতা ও দেলুটি তিন ইউনিয়নের সংযোগ সড়কটি শত শত খানা খন্দে পরিনত হয়েছে।রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে জন চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ৪ কিলিমিটার ওই সড়কটি ইট উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে বর্ষার পানি জমে রয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যান বাহন । প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। পথচারী সহ ইউনিয়নবাসী সড়কটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে হাড়িয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার পাঁকা সড়কটি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ইট উঠে খানা খন্দে পরিনত হয়েছে। সড়কটি গদাইপুর, লতা ও দেলুটি ইউনিয়নের সযোগ সড়ক হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ আসা যাওয়া করে। তারপরেও এ সড়কের পাশে রয়েছে অসংখ্য চিংড়ি ঘের ও বাগদা চিংড়ির ডিপু। ঘেরের মাছ বহনের জন্য নছিমন করিমন ট্রলি, মটরসাইকেল ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছে। বিশেষ করে গৌরঙ্গখালীর খালের পাশ দিয়ে কচুবুনিয়া গেট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা একেবারেই চলা চলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় দবির সরদার জানান, রাস্তাটি এতই খারাপ বৃষ্ট হলে মটর সাইকেল ও বাইসাইকেল অনেক সময় ঠেলে নিয়ে যেতে হয়। ভুক্তভোগী রেজাউল করিম বলেন, কচুবুনিয়ায় আমার একটি চিংড়ি ঘের রয়েছে। প্রতিদিন আমার দুইবার যাওয়া আসা করা লাগে। রাস্তার উপর কাঁদা ও ইট উঠে খানাখন্দে পানি জমার কারণে মটর সাইকেল ও বাইসাইকেল ঠেলে নিতে হয়। আমরা খুব বিপদের মধ্য রয়েছি। ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালক প্রশান্ত মন্ডল বলেন আমরা দীর্ঘদিন এ রাস্তায় ভাড়ায় মটর সাইকেল চালিয়ে আসছি। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলে আর মটর সাইকেলে চালানো যাচ্ছেনা। আমি ভাড়ায় মটরসাইকেল চালিয়ে যা পাই তাই দিয়ে চলে সংসার। এখন বৃষ্টির সময় মটর সাইকেল চালাতে পারছি না। গত দুই দিন আগে মটরসাইকেল চালাতে গিয়েছিলাম ইটের পরে কাঁদায় সরে পড়ে পায়ে আঘাত সহ মটরসাকেল ভেঙ্গে গেছে। সাহস পাচ্ছিনা ওই পথে মটর সাইকেল চালাতে। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য পাইকগাছা কয়রার সংসদ সদস্য সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাগদা চিংড়ি ব্যবসায়ী মিঠু, টিপু, আব্দুর জব্বার বলেন, প্রায় ১০ বছর এ সড়কটি চলাচলে অনুপয়োগি হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত যাতায়াতকারীরা নিরাপদে আসা-যাওয়ার ভাবনায় এখন মহাচিন্তিত। একটু বৃষ্টি হলেই গাড়ি চলাচলতো দুরের কথা রাস্তায় হাঁটা যায় না। বর্তমানে সড়কটি খানাখন্দ নিয়ে চলাচল করছে। রাস্তায় খানা খন্দের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। সড়কটি খারাপ হওয়ায় উপজেলা শহরে মাছ নিতে অধিক নসিমন ভাড়া দিয়ে নিতে হয়।
লতা ইউনিয়নের পথচারী বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানান, আমার মা মঙ্গলবার রাতে ভিশন অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি ভ্যান যোগে হাসপাতালে আনতে চাইলে কোন ভ্যান চালক আসতে চইনি। উপায় না পেয়ে মটর সাইকেলে করে কোনমতে হাসপাতালে এনেছি। রাস্তার সমস্যার কারণে হাসপাতালে যেতে অসুস্থ রোগী আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে লতা দেলুটি ইউনিয়নের হাড়িয়া, তেঁতুল তলা, লতা, শংকরদানা, মধুখালী গেওবুনিয়াএলাকার রোগিরা এ সড়ক দিয়ে অনা নেওয়া করা হয়। সড়কটি দ্রæত সংস্কারের জন্য দাবী জানান তিনি।
পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, হাড়িয়া ব্রিজ হতে লতা খেয়াঘাট হয়ে জামতলা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। পরের ৪ কিলোমিটার রাস্তা যশোর খুলনা রুরাল ইনফ্রেসট্রকটর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (জে কে আর আই ডি পি) দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে আনুমোদ পেলে টেন্ডরের আহবান করা হবে। তবে বর্ষামৌসুমের আগে সড়কটি করা সম্ভব হবে না। সড়ক দিয়ে যাতে চলাচল করা যায় তার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।