নিজস্ব প্রতিবেদক: ড. নাছিমা খাতুনের তদন্ত কাজে রফিজ মিঞার পক্ষ নিয়ে প্রধান সংগঠকের কাজটি করলেন শিক্ষক নেতা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল। বহুল আলোচিত উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিজ মিঞার নারী কেলেঙ্কারী ঘটনা। ইতোপূর্বে রফিজ মিঞা এই ধরনের কর্মকান্ডের কারণে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন, শাস্তিমূলক বদলীও হয়েছেন বহুবার। শ্যামনগর উপজেলাতেও এসেছেন শাস্তিমূলক বদলীতে। পূর্বের স্থানগুলোতে যে ধরনের অপরাধ করে শাস্তিমূলক বদলী হয়েছেন এই উপজেলাতেও সেই সকল অপরাধ, অনিয়ম- দূর্ণীতি অব্যহত রেখেছেন।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, রফিজ মিঞার নারী শিক্ষকের লাঞ্চিত করার ঘটনা শুধু একটি নয়, ইতোমধ্যে শিক্ষক পিয়ারীর মতো ডজন খানেক পিয়ারীকে তিনি লাঞ্চিত করেছেন। সেই সকল পিয়ারীদের ফুঁসে ওঠার আগেই তাদের বাড়িতে অথবা বিদ্যালয়ে গিয়ে ম্যানেজ করা হয়েছে। ক্লিন ইমেজের শিক্ষক নেতা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল এই ম্যানেজের কারিগর। শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞাকে সাথে নিয়ে তিনি এমন মহৎ কাজগুলো করেছেন। উপজেলার সাধারণ শিক্ষকদের অতি দরদী, আপন, প্রাণের মানুষ, অতি স্বচ্ছ শিক্ষকনেতা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল তার অতি কাছের মানুষ (শিক্ষক)ওমর আলী, দেলোয়ার হোসেন, পরিমল কর্মকার, সিরাজুল ইসলাম এবং মিজানুর রহমানকে নিয়ে পিয়ারীর বাড়ীতে যান। লাঞ্চিত শিক্ষক পিয়ারী পারভীন ম্যানেজ না হলে শিক্ষক সমিতির দুবার নির্বচিত সভাপতি দীনেশ চন্দ্র মন্ডল তদন্তানুষ্ঠানে রফিজ মিঞার পাশে থেকে ঠান্ডা মাথায় সংগঠকের কাজটি সেরে ফেলেন। অতি সুচতুর এই শিক্ষক নেতা নিজেকে শিক্ষকদের কাছে পরিচ্ছন্ন সেজে সফলভাবে নির্বাচিত সময়কাল পার করছেন। বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নিজস্ব যে সকল দায়-দায়িত্ব, রুলস্ এবং কার্য-পরিধি রয়েছে তার সবগুলোকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তিনি তদন্ত অনুষ্ঠানে সক্রিয় ছিলেন। শিক্ষক পিয়ারীকে কোনঠাসা করতে তার এমন অভিপ্রায়? নাকি অন্য কিছু? একটি নিবন্ধিত সংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চ পদে আসীন দীনেশের নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগে অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতি অতি ছায়াদান করা তার অন্যায়ে যুক্ত থাকার সামিল। প্রকৃত অপরাধী শাস্তি পাবে তার জন্যই উর্ধতন কর্মকর্তার তদন্ত অনুষ্ঠান কিন্ত নির্বাচিত সভাপতির একপক্ষ টানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সরেজমিন ঘুরে তেনটিই মনে হয়েছে। জানা গেছে, ১৯ শে জানুয়ারী তদন্ত অনুষ্ঠানের দিন ধার্যকরণের চিঠি আসে উপজেলায়। উপজেলা শিক্ষা অফিসার চিঠিটি হাতে পেয়ে সভাপতি দীনেশ চন্দ্র মন্ডলকে নিয়ে পরামর্শ করেন এবং তদন্তের দিনে সার্বিক কার্যক্রমের রোডম্যাপ তৈরী করেন। সেই রোডম্যাপের অংশ হিসেবে আবেদনকারী পিয়ারীকে শেষ সময়ে জানানো হবে আর তাই পিয়ারীর প্রধান শিক্ষক নুর আলী পিয়ারীকে তদন্তের দিনের পূর্বরাতের দশটার সময়ে মৌখিকভাবে জানান। নিয়ম মাফিক পিয়ারী তদন্তের দিনে উপস্থিত হতে চিঠি পাবেন কিন্ত উদ্দ্যেমূলক ভাবে হয়রানী করতে পিয়ারীকে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি। শিক্ষক নেতা দীনেশ আবেদনকারীর চিঠি না পাওয়ার দায় এড়াতে পারেন না। সরেজমিন ঘুরে আরো দেখা গেছে, শিক্ষা অফিসারের সাথে মুহর্মূহ বৈঠক, অন্যান্য শিক্ষকগনের লিখিত বক্তব্য লেখা কালীন তদারকি, তদন্ত কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ে কি কি বলবেন ইত্যাদিও বিষয়ে সভাপতি দীনেশ তদারকি করছেন, কিন্তু আবেদনকারী শিক্ষকের কোন খোঁজ খবর নেননি। বিষয়টি অতি অমানবিক। এর আগে এই শিক্ষিকা তার সমস্যার প্রতিকার চেয়ে সভাপতি দীনেশ চন্দ্র মন্ডলের কাছে আবেদন করেন। সভাপতি উভয়কে না জানিয়ে সমিতির সদস্যদের নিয়ে জরুরী মিটিং ডেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পক্ষে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ দেবেন বলে রেজুলেশন করার প্রস্তাব করেন।
তিনি অতিশয় ক্লিন ইমেজের মানুষ এবং শিক্ষক সমিতির সম্মানিত সভাপতি। তার সাথে কথা বলে জানা গেছে উপজেলা শিক্ষা অফিসে কোন দূর্ণীতি হয়না। উপজেলা শিক্ষা অফিসার ভালো মানুষএবং কোন দূর্ণীতির সাথে যুক্ত নন। তবে কি তার আমলেরই শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলন কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন শিরোনামের পত্রিকার সিরিজ মিথ্যা ছিল? বর্তমান শিক্ষা অফিসারের নামে বিভিন্ন পত্রিকার দূর্ণীতি ও অপকর্মের সংবাদ ভিত্তিহীন? নাকি শিক্ষা অফিসারদের সকল অপকর্মে পিছনে তার অদৃশ্য হাত রয়েছে? বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সভাপতি দীনেশ নিজেকে স্বচ্ছ দাবী করলেও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে অনেক নাজানা তথ্য। প্রতি বছরই তার বিদ্যালয়ের নামে একাধিক বরাদ্ধ আসে যেটা উপজেলা সব বিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। তিনি স্বচ্ছ সভাপতি কিন্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী খায়রুল সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে নানা ভাবে হাতিয়ে নিয়ে কোটি টাকার সম্পদ তৈরী করে ফেলেছেন। রুটিন মেইনটেনেন্স ও ক্ষুদ্র মেরামতের (২০২১-২২) অর্থের চেক এখনও একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে পৌছায়নি। অফিস অডিটের ঘুষের টাকা উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নেওয়া হয়। প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় তাকে উদ্দেশ্য এক শিক্ষক নেতা মারতে আসে, তিনি উপস্থিত সকল প্রধান শিক্ষকে জানিয়ে দেন ঐ শিক্ষকনেতার মাথায় গন্ডগোল আছে। উপজেলার শিক্ষকদের ভোটে নির্বাচিত বর্তমান সভাপতির সামগ্রিক আচরণ এরুপ হলে সাধারণ শিক্ষকগণ তাদের সমস্যার প্রতিকার কিভাবে পাবেন? তিনি শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য নিবেদিত নাকি শিক্ষকদের? দূর্ণীতিবাজ কিছু শিক্ষকনেতার লেজ ধরে চলে তিনি সাধারণ শিক্ষকদের পায়ে ঠেলছেন, এমন প্রশ্ন শিক্ষক মহলে। উপজেলার শিক্ষকগণের সর্বোচ্চ নেতার সর্বশেষ তদন্ত কার্যক্রমের সার্বিক ভূমিকায় বিস্মিত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার ।
নারী কেলেঙ্কারী তদন্তানুষ্ঠানে রফিজ মিঞার পক্ষে প্রধান সংগঠক দীনেশ
পূর্ববর্তী পোস্ট