
আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ: অভিযোগের পাহাড় সাতক্ষীরা সদরের ৮নং ধুলিহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পল্লী চিকিৎসক দিনেশ দত্তের নামে। জমি দখল, জমির দালালী, কৃষি ব্যাংকের ধুলিহর ইউনিয়ন শাখার লোন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কৃষকদের দ্বন্দ সৃষ্টি করে লাখে ৫ হাজার টাকা দালালী দেয়ার শর্তে ঋণ পাইয়ে দেয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে দিনেশ দত্তের নামে।
এসব অপকর্ম করার জন্য রয়েছে দিনেশের বেশ কয়েকটি পদ। দিনেশ দত্ত সাতক্ষীরা জেলা মন্দির কমিটির সদস্য, হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ৮নং ধুলিহর ইউনিয়নের সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এসব পদের নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে করছে হয়রানি। অভিযোগ রয়েছে দিনেশ দত্তের অত্যাচারে দেশ ও এলাকা ছাড়া হয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবার। বর্তমানে দিনেশ দত্তের কারনে পথে বসেছে একাধীক পরিবার।
ধুলিহর নাথপাড়ার মিনতি ঘোষাল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার নাম করে একাধিক অসহার ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছে দিনেশ দত্ত। এসব অসহায় মানুষ সুদ করে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিনেশ দত্তের কাছে দেয় ঘর পাওয়ার আশায়। কিন্তু তারা কেউ ঘর পায়নি আবার টাকাও ফেরত পায়নি। তারা এখন পথে পথে ঘুরছে। ধুলিহর ইউনিয়নে কোন এনজিওর কাজ এলেই দিনেশ ছাড়া কেউ সভাপতি হতে পারবে না। সবগুলো এনজিওর সভাপতি দিনেশ হয়। আমরা যদি সেখানে যাই দিনেশ দত্ত আমাদের তাড়িয়ে দেয়। দিনেশ রাজনীতি করে বলে তার বউ মনে করে আমি ম্যাজিট্রিট তাই আমাদের ঢুকতেই দেয় না। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প এলে আমি ঢুকতে গেলাম তখন আমাকে নিলো না। পরে আমার ছেলে ছোট বড় কথা বললে অনেক কষ্টে গোপনে আমাকে ঢুকিয়ে নেয়। যেখানে আমি সকলকে একত্রিত করলাম সেখান থেকে আমি বাদ। দিনেশ এমন ভাব দেখায় সে যেন মহারথি। আমরা দিনেশের এধরনে কর্মকা-ে অতিষ্ট।
দিনেশ দত্তের প্রতিবেশী কাকা বাসুদেব বলেন, আমি গরীব মানুষ, ধুলিহর বাজারে আমার একটি ছোট দোকান রয়েছে। করোনা মহামারির কারণে কিছু ঋণ দেনায় জড়িয়ে পড়ি। তখন দিনেশ দত্ত আমাকে পরামর্শ দেয় জমি বিক্রির। বলে জমি বিক্রি না করতে পারলে তুমি ঋণ শোধ করতে পারবে না। আবার আমার বাড়িতে যেয়ে আমার স্ত্রী ও কন্যার কাছে ভালো সাজার জন্য বলে, ‘কাকা জমি বিক্রি করছে কত করে বললাম শুনছেনা’ । যখন পাওনাদার আসে তখন মন খারাপ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে আমি আমার পরিবারের কথা না শুনে জমি বিক্রি করে আমি পথে বসেছি। উপায় না পেয়ে কৃষি ব্যংকের আগের লোন শোধ করে আরেটি একটি লোন নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র রেডি করে লোন অফিসারের সাথে কথা বলে যখন বের হয়ে আসি তখন দেখি দিনেশ দত্ত অফিসের ভিতরে প্রবেশ করছে। তখন সে আমাকে বলে কাকা তুমি কি লোন নিবা। তখন আমি বলি হ্যা নিব। তখন আমি বললাম তুই যখন আছিস আমি যেন লোনটা নিতে পারি। তখন দিনেশ বলে কাকা তুমি যাও তুমি এলেই তোমাকে লোন দিয়ে দিবে। তখন দিনেশের ঐকথা শুনে বাড়ি এসে চার দিন পরে যখন কৃষি ব্যংকে গেলাম তখন লোন অফিসার আমাকে বলে আপনি এখনি অফিস ত্যাগ করেন আপনাকে লোন দিব না। তখন আমি জানতে চাই আমার অপরাধ তখন বলে বেশি কথা বললে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিব। ঐ কথা শুনে আমি দিনেশ দত্তের কাছে ফোন করি সে বলে আমি বাড়িতে আছি তুমি এসো। আমি দিনেশের বাড়িতে যেয়ে দেখি বাড়ির উত্তর পাশের ধানক্ষেতে কাজ করছে। কাকা হয়ে তখন আমি দিনেশের পা ধরে কাঁদতে লাগলাম আর বললাম না হলে আমার বাচ্চারা খেতে পাবেনা। তখন সে আমাকে বললো তুমি ঘাটকাটা আনান্দোর ওখানে যাও আর বড়দলে হকের কাছে যাও অথচ তারা ব্যংকে চাকরী করে না। কিছুদিন পরে আমার ছেলের একটি পা সাইকেলে কেটে যায়। তখন আমি দিনেশ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করায়। কয়দিন পরে দিনেশ ডাক্তারের বউ আমার বাড়িতে এসে বলে ভাইয়ের পা তো খারাপ হয়ে গেছে ঔষধ দিচ্ছোনা আমি বললাম দিনেশ ডাক্তার দিচ্ছে। তখন সে বললো টাকা না দিলে তোমার ছেলেকে ঠিকমত চিকিৎসা করবে না। তখন আমি আমার বাড়ির রান্নার চাল বিক্রি করে দিনেশের টাকা দেই। সেখান থেকেই আমার সাথে শত্রুতা।
একই এলাকার বলাই দাশ বলেন, আমার একটি ভাই আছে মানষিক ভারসম্যহীন। তার কাছ থেকে জোর করে দিনেশ চারকাঠা জমি লিখে নেয়। আমি জমি ফেরত চাইলে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতে থাকে বলে আমার অনেক ধরাকরা আছে। পরে আমি অনেক কষ্টে কোর্ট থেকে আবার সেই জমি আমানত করে ফেরত নেই।