
জাতীয় ডেস্ক:
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ গাছে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় আসামিরা। ওই ঘটনায় জড়িত আটজনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শনিবার (৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূঁঞা এতথ্য জানান।
গ্রেপ্তার পাঁচ আসামি হলেন- ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. শাহজাহান (২৬), হামেদ আলীর ছেলে শহিদ মিয়া (৩৮), আবু হনিফার ছেলে মাসুম বিল্লাহ ওরফে ফজর আলী (২২), আবুল কালামের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৪), আ. হাইয়ের ছেলে রাসেল মিয়া (১৯)। তারা প্রত্যেকে জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ও পলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার জানান, স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ হত্যা করা হয়। পরে ওই ছাত্রীর লাশ ৮ ধর্ষক মিলে গাছে ঝুঁলিয়ে রাখে। এই আট জনই দিনের বেলায় ইট ভাটায় কাজ করতেন এবং রাত হলেই ধর্ষণের মতো অপরাধ ঘটাতেন।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। ঘটনার দিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির বাইরে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। ওই দিন অনেক খোঁজাখোঁজি করেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে একটি আমগাছে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
এই ঘটনার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি মারা যাওয়া স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে নাম না জানা ৫/৬ জনকে আসামি করে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা করেন। মামলার পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত কাজ শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দিবাগত রাতে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঁঞা আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, ঘটনার দিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধার পর তারা ভুক্তভোগীন বাড়ির পাশে অবস্থান নেন। ভুক্তভোগী বাড়ির বাইরে আসতেই তাকে জোর করে আখ ক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আটজন মিলে ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। প্রমাণ লোপাট করতে ছাত্রীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে আসামিরা। পরে আমগাছে লাশ ঝুলিয়ে রাখে তারা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত পাঁচ জনের মধ্যে রাসেল মিয়া ও আলমগীর হোসেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করছেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।