অনলাইন ডেস্ক:
দেশে দিন দিন বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে দেশব্যাপী। ঘরবন্দি হয়ে আছেন দেশের বেশিরভাগ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রতিদিন মাঠে কাজ করছেন ঢাকাসহ সারাদেশের সাংবাদিকরা। এরইমধ্যে একজন সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ জন সাংবাদিক। তবে সুস্থ হয়েছেন ১১ জন।
রোববার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণমাধ্যমকর্মী ৫৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন- দৈনিক ইত্তেফাকের একজন রিপোর্টার, বাংলাভিশনের একজন রিপোর্টার, আরটিভির বার্তাকক্ষের একজন সংবাদকর্মী, এনটিভির দুই জন রিপোর্টার, একজন বার্তা সম্পাদক, ছয় জন ক্যামেরাম্যান, একজন সংবাদ উপস্থাপক, মেকাপম্যান, অনুষ্ঠান বিভাগের আরও চার জনসহ মোট আক্রান্ত ১৩ জন। অনলাইন নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিমের জামালপুর প্রতিনিধি, বিবার্তার একজন রিপোর্টার, দীপ্ত টিভির পাঁচ সংবাদকর্মী, দৈনিক ইনকিলাবের একজন রিপোর্টার, দৈনিক জনতার একজন রিপোর্টার, দৈনিক কালের কণ্ঠের একজন ফটোগ্রাফার, দৈনিক আমার বার্তা’র সম্পাদক, মাছরাঙা টিভির সাধারণ সেকশনের একজন কর্মকর্তা, নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা পত্রিকার সম্পাদক, রেডিও টুডের নারাযণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি, চ্যানেল আই এর অনুষ্ঠান বিভাগের একজন, দৈনিক আজকালের খবরের বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি, এসএ টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি, যশোরের স্থানীয় দৈনিক লোকসমাজের একজন সাব-এডিটর, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের একজন রিপোর্টার, নতুন সময় টিভির (আইপিটিভি) একজন সংবাদ উপস্থাপক, দৈনিক সময়ের আলো’র চার সংবাদকর্মী, রেডিও আমার’র একজন সংবাদকর্মী।
এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১ জন। তারা হলেন, দৈনিক প্রথম আলোর একজন সংবাদকর্মী, ভোরের কাগজের বামনা উপজেলা (বরগুনা) প্রতিনিধি, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির একজন ক্যামেরাপারসন, যমুনা টিভির একজন রিপোর্টার, দীপ্ত টিভির একজন রিপোর্টার, এটিএন নিউজের একজন রিপোর্টার, যমুনা টিভির নরসিংদী প্রতিনিধি, মানবজমিনের গাজীপুর প্রতিনিধি, বাংলাদেশের খবরের একজন রিপোর্টার ও দৈনিক সংগ্রামের একজন রিপোর্টার।
মাঠে পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকরা বলছেন, শুরুতে অনেক গণমাধ্যম তাদের সুরক্ষা সামগ্রী ঠিকভাবে দেয়নি। যে কারণে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে কর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে মহামারির সময়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও সাংবাদিকদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো ধরণের প্রণোদনা বা সুবিধা না দেয়ায় ক্ষোভও আছে তাদের মধ্যে।
যদিও সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা দাবি করছেন, সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে করোনার সময়ে সাংবাদিকদের সহায়তা দেওয়ার জন্য তারা কাজ করছেন। এছাড়া সংগঠন থেকেও তাদের সদস্যদের সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করছেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী জানান, করোনা ভাইরাসে শনিবার পর্যন্ত ডিআরইউর ১০ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন পাঁচজন। এরমধ্যে মারা গেছেন সাংবাদিক হুমায়ুন কবির খোকন। প্রত্যেক সদস্যকে যথাযথ সেবা, সুরক্ষা দিতে ডিআরইউ শুরু থেকেই তৎপর। দেশে করোনাভাইরাস ছড়ানোর শুরুতেই ডিআরইউ ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও করেছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘ডিআরইউ’র আঠারশ সদস্যের বেশিরভাগই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। এরমধ্যে অন্তত পাঁচ শতাধিক সদস্য আর্থিক সংকটে আছেন। সাংবাদিকরা দেশের জন্যই কাজ করছেন। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা করোনায় মারা গেলে প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকার প্রধানের কাছে আমাদের দাবি, একইভাবে সাংবাদিকদের জন্য সরকার ও মালিকপক্ষ যেন প্রণোদনা দেয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ডিআরইউ সভাপতি বলেন, ‘সরকার রেশন কার্ড করবে। এজন্য ডিআরইউর সদস্যদের তালিকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ডিআরইউ থেকেও সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা দিতে চেষ্টা করছি। কিছু সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছি।’ করোনায় শহীদ সাংবাদিক হুমায়ুন কবির খোকন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ডিআরইউ’র ইন্সুরেন্সসহ আর্থিক সুবিধা তার পরিবার পাবে।’
পূর্বপশ্চিমবিডি