
মোমিনুর রহমান, দেবহাটা: দেবহাটায় ঘুর্নিঝড় বুলবুল’র তান্ডবে দুই হাজারেরও বেশী কাচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়ায় বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন অভ্যন্তরীন রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থা, পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুটি উপড়ে এবং তার ছিড়ে উপজেলাব্যাপী বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল অপারেটর গ্রামীন ফোনের নেটওয়ার্ক। একদিকে বিদ্যুৎ বিভ্যাট আর অন্যদিকে মেবাইলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ায় ঘুর্নিঝড়কালীন ও পরবর্তী সময়ে তীব্র বিপদ সংকুল অবস্থাতে সহায়তা চেয়ে প্রতিবেশী-স্বজন কিংবা কন্ট্রোল রুমের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাত ও প্রবল ঘুর্নিঝড়ে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিস্তৃর্ন ধান ও শীতকালীন ফসলের। অন্যদিকে শনিবার সন্ধ্যা থেকে উপজেলার ১৫টি সাইক্লোন শেল্টার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় দশ হাজার মানুষ। সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। ঘুর্নিঝড়ের আঘাতে উপজেলাব্যাপী ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্নয়ে রবিবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টার ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল গনি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা। ইতোমধ্যেই সরকারীভাবে ও ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ত্রান সহায়তা হিসেবে কিছু শুকনা খাবার সরবরাহ করা হলেও, প্রয়োজনের ক্ষেত্রে তা অতি স্বল্প বলে জানিয়েছেন সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া ক্ষতিগ্রস্থ মানুষেরা। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন বলেন, সাইক্লোন শেল্টার ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্নয় করা হচ্ছে। পাশাপাশি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের বিষয়টি দ্রুত কার্যকর করা হচ্ছে। দেবহাটা কন্ট্রোল রুমের তত্বাবধায়ক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল বশার বলেন, এপর্যন্ত উপজেলাতে ১৪৩০টি ঘরবাড়ি আংশিক ও ৮৮০ টি ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্তের খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়া প্রায় ১০ হাজার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ উপজেলার ১৫টি সাইক্লোন শেল্টার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় ১০ হাজার শিশুখাদ্য, ১০ হাজার গবাদী পশুর খাদ্য, ১৫ মেট্রিক টন জিআর চাউল ও সর্বমোট ৮০ হাজার টাকা নগদ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে।