
দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটা ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গ করে, জালিয়াতির মাধ্যমে, অবৈধ ভাবে রাইচমিল দখলের নেওয়ার ষড়ন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন আব্দুল হান্নান নামের এক স্কুল শিক্ষক। তিনি উপজেলার চাঁদপুর এলাকার আব্দুস সামাদের পুত্র। মঙ্গলবার (৩ জুন) দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠে জানান, গত ০৪/০৫/২০২৫ তারিখে তার ভাই সাইদুর রহমান ময়েন মেসার্স এম এন্ড এস রাইস মিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি ফেসবুক পেজে আমার রাইস মিল ও আমাকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়েছে। সে লোভ লালসার বষিভূত হয়ে, অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে, অবৈধভাবে আমার রাইস মিলটি দখল করে কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে এ রকম বিবৃতি প্রচার মাধ্যমে দিয়েছে। আমি তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি আরো জানান, আমি গত ২০০৬ সালে দেবহাটা উপজেলার চাঁদপুর মৌজায় এস এ ২৬৬ দাগে/হাল ৪১২ দাগে (আমার পিতার জমিতে) আমার পিতার মৌখিক অনুমতিতে এবং উক্ত চাঁদপুর মৌজায় সাবেক ২৬৬/হাল ৪১৩ দাগে আমার দাদীর ও ফুফুর জমিতে আমার নিজ খরচে নিচু জায়গায় মাটি ভরাট করে ছোট আকারে একটি চাতালসহ রাইসমিল স্থাপন করি। এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহন করে নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ হতে ট্রেড লাইন্সেস গ্রহণ করি এবং খাদ্য মন্ত্রনালয় হতে লাইন্সেস গ্রহন করে ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকি। যার লাইন্সেস নং- ৩১৩ (৬৩)। এরপর মিলের পরিধি বাড়ানোর প্রয়োজন হলে গত ১৯/০৫/২০০৯ ইং তারিখে আমার পিতা তার নামীয় উক্ত ২৩ শতক জমির সম্পূর্ণটাই “বিজ্ঞ নোটারি পাবলিক এর কার্যালয়” সাতক্ষীরা এর মাধ্যমে মিল চাতালসহ রাইসমিল এর ব্যবসা (আমার নিজ খরচে) করার জন্য আমার নামে এভিডেভিট করে দেয়। এভিডেভিট করার পরে আমি ২০১০ সালে আমার মিলের নামে অগ্রণী ব্যাংক গাজীরহাট শাখা হতে লোন নিয়ে এবং আমার কাছে থাকা সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ও ব্যবসার লাভ দিয়ে আমার নামীয় মেসার্স এম এন্ড এস রাইস মিলটি আকারে বড় করে মেজর রাইস মিলে রুপান্তরিত করি এবং গত ২৩/০৩/২০১৪ ইং তারিখে আমার মিল, মেসার্স এম এন্ড এস রাইস মিলের নামে মেজর রাইস মিল হিসাবে লাইন্সেস গ্রহণ করি। যার লাইন্সেস নং ৬১৫ (১৭)/২০১৩-১৪। আমার রাইস মিল এর আকার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এবং আমি চাকুরি করার কারণে আমার ছোট ভাই মোঃ সাইদুর রহমান ময়েনকে মিলটি দেখাশুনা ও মিলের ব্যবসায় আমাকে সহযোগীতা করার জন্য দায়িত্ব দেই। প্রথম কয়েক বছর মৌখিক ভাবে বেতন চুক্তিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে গত ১০/১২/২০১৭ তারিখ ‘বিজ্ঞ নোটারি পাবলিক এর কার্যালয় সাতক্ষীরা এর মাধ্যমে এফিডেভিট করে আমার মিল দেখাশুনা করার জন্য ময়েনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। উক্ত এফিডেভিডে ময়েন ও আমার যৌথ স্বাক্ষর আছে। সে মোতাবেক আমার ছোট ভাই মিলটি সেখান থেকে দেখাশুনা করে আসছে এবং আমাকে মিলের ব্যবসায় সহযোগীতা করে আসতেছিল। আমিও তার উপর অনেকটা বিশ্বাস ও ভরসা করেছিলাম। কিন্তু সেই সুযোগে বিগত কয়েক বছর যাবৎ সে আমার বিশ্বাস ভঙ্গকরে আমার মিলের ব্যবসার হিসাব নিকাশ না দিয়ে এবং আমাকে বিভিন্ন ভাবে সাইটে রেখে, নিজের জনসমর্থন বাড়ানোর জন্য স্থানীয় কিছু মানুষকে মৌখিক ভাবে মিলের শেয়ার রেখে ব্যবসা বা মিল নিজের মনে করে চালাচ্ছে। আমি বিষয়টি অনুধাবন করার পর তাকে বিভিন্ন ভাবে সতর্ক করতে থাকি এবং তাকে তার কার্যক্রম থেকে ফিরে এসে আমার হিসাব নিকাশ দেওয়ার কথা বলি ও বার বার তাকে সুযোগ করে দেই এবং আমার বোন বোনাইদের শরনাপন্ন হয়ে তাদের কাছে বিষয়টি জানাই। সাথে সাথে মিলের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চালানোর জন্য ব্যাংকের চেকে সই সহ বিভিন্ন ডকুমেন্টে স্বাক্ষর করি যাতে ব্যবসার স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনরুপ সমস্যা না হয়। কিন্তু গত প্রায় এক মাস আগে, আমার ছোট ভাই সাইদুর রহমান ময়েন, আমার মিলের বয়লার, চুলা, হাড়িসহ কয়েকটি স্থাপনা ভেঙ্গে পাশে থাকা তার ও আমার নামীয় যৌথ মালিকানাধীন জমিতে (যার দাগ নং-হাল ৪৪৮ ও ৪৪৭, মৌজা- চাঁদপুর) আমার অংশ সহ, তার অংশের কিছুটা জায়গা দখল করে, আমার উক্ত ব্যবসায়ে বিনিয়োগের টাকা ও উক্ত ব্যবসায় দীর্ঘদিনের লাভের আনুমানিক, ১ কোটি টাকা দিয়ে নতুন একটি রাইসমিলের আংশিক স্থাপনা তৈরি করে, আমার মিলের বাকি স্থাপনা (চাতাল, গোডাউন, অফিসঘর, হাউস, লেবার কোয়াটারসহ ধান ছাটাই এর মিল ও মিলঘর) ব্যবহার করে, আমাকে বাদ দিয়ে, আমার ছোট ভাই মিলের ব্যবসা চালাচ্ছে এবং আমাকে মিলে ঢোকার সমস্ত ব্যবসায়িক পথ বন্ধ করে দেছে। এরকম পরিস্থিতিতে আমি বিশ্বস্তসূত্রে জানতে পারি ময়েন আমার উক্ত মিলটি দেখিয়ে অবৈধভাবে আমার সাথে চরম বেইমানি করে, তার নামে একটি ভুয়া লাইসেন্স গ্রহণ করে চেপে রেখে ষড়যন্ত্র করছে। যা মিলটি সম্পূর্ণরূপে দখল করে নিজের করে নেওয়ার মতলব বলে আমি আশংঙ্খা করছি। এমতাবস্থায় আমি বিষয়টি পূনরায় অনুধাবন করে আমার নিজ বোন, বোনাই, স্থানিয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ ও আমার গণ্যমান্য আত্মীয় স্বজনের স্বরণাপন্ন হই এবং আমার ছোট ভাইয়ের উক্ত কার্যক্রম বন্ধ করতে, ছোট ভাই ময়েনকে বলার জন্য অনুরোধ করি। তাঁরা আমার ছোট ভাইকে বিষয়টি নিয়ে এক জায়গায় বসে সমস্যা সমাধানের জন্য অনুরোধ করে কিন্তু তাঁদের কথায় সে রাজি না হয়ে এবং গুরুত্ব না দিয়ে, জোর করে মিলিং ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমি আমার মিল দখলসহ অন্যান্য বিশৃঙ্খলায় না গিয়ে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।