
শেখ বাদশা,আশাশুনি থেকে: বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে প্রায় দুই থেকে তিন হাজার মানুষের লাশ গোসল ও দাফন করেছেন আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের নুর মোহাম্মদ (৭৫)।
তিনি বুধহাটা গ্রামের মৃত জোহর আলী সরদারের একমাত্র ছেলে। দিন আনা, দিন খাওয়া পরিবারে জন্ম হলেও জীবন যুদ্ধে থেমে থাকেননি তিনি। অসহায় গরীব ঘরের সন্তান নুর মোহাম্মদ সাতনদীকে জানান, কৃষি কাজ ও শ্রমিক হিসেবে মাঠে ঘাটে কামলা খেটে পরিবারের ১০সদস্যের মুখে অন্ন যুগিয়েছেন তিনি। মাত্র পাঁচ শতক ভিটাবাড়িতে স্ত্রী, ৫কন্যা ও ৩ ছেলে নিয়ে তার সংসার। এত বড় সংসার থাকা স্বত্তে¡ও বিনা পারিশ্রমিকে মৃত মানুষের লাশ গোসল ও দাফন করেন তিনি।
একান্ত সাক্ষাৎ কালে তিনি সাতনদীকে আরও বলেন, কামলা দেওয়া অবস্থায় কোন পুরুষ মানুষের মৃত্যুর সংবাদ পেলে মালিকের নিকট থেকে ছুটি নিয়ে দ্রæত চলে যান মৃত ব্যক্তির বাড়ি। গোসলের আনুসাঙ্গীক জিনিসপত্র বুঝে নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় মৃত ব্যক্তির গোসল সম্পন্ন করেন। গোসল শেষে লাশের শরীরে কাফনের কাপড় পরিধান করিয়ে মরহুমের নামাজে জানাজায় অংশ গ্রহণ শেষে তিনি চলে যান গোরস্থানে। লাশ দাফন শেষে নিজ বাড়িতে রওনা দেন শেষ বিদায়ের সাথী নুর মোহাম্মদ। এভাবেই কেটে গেছে নুর মোহাম্মদের ৭৫ বছর বয়সের অভিজ্ঞতার ৫০ বছর। স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যবদি মৃত ব্যক্তির গোসল ও দাফনের কাজ অব্যহত রেখেছেন স্বেচ্ছাসেবী নুর মোহাম্মদ। চাওয়া পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাতনদীকে বলেন, মানুষের কাছে দোয়া ছাড়া আমার চাওয়ার আর কিছুই নেই। তবে এখনও পর্যন্ত তিনি কোন সরকারি সহায়তা পাননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন বিনা স্বার্থে মৃত মানুষের লাশ গোসল ও দাফন কাজ অব্যহত রাখবেন বলে আশা ব্যাক্ত করেন পরোপকারী বন্ধু নুর মোহাম্মদ।