
বিশেষ প্রতিবেদক,তালা: মানুষকে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে রোজগার করা এখন তার পেশা। নামের আগে লাগিয়েছেন ডাক্তার। বিএনপি নেতা ও একাধিক নাশকতা মামলার আসামি শেখ মহিউদ্দীন এখন কবিরাজ।
শেখ মহিউদ্দীন সাতক্ষীরার তালা সদরের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০ বছর পূর্বে তিনি পার্শ্ববর্তী সুজনশাহ গ্রাম থেকে এখানে এসে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। শুক্রবার (১১ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক রোগী ও স্বজনদের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক পিটিয়েছেন তিনি।
শেখ মহিউদ্দীনের প্রতিবেশী আবুল সরদার জানান, মহিউদ্দীন বিএনপির নেতা। তার নামে কয়েকটি নাশকতা মামলা রয়েছে। জেল খেটেছেন কয়েকবার। সুজনশাহ গ্রামের রউফ মেম্বার হত্যা মামলার তিনি প্রধান আসামি।
তিনি আরও বলেন, ২০ বছর আগে সুজনশাহ থেকে শিবপুর গ্রামে বসবাস শুরু করেন। ২-৩ বছর আগে থেকে তিনি কবিরাজ হয়েছেন। খুলেছেন সোলেমানী দাওয়াখানা। ঝাড়-ফুঁক দিয়ে টাকা রোজগার করেন।
তিনি বলেন, শেখ মহিউদ্দীন কোনো কবিরাজ বা ডাক্তার নন। প্রতারণা করে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে দাওয়াখানার দরজা বন্ধ করে রোগী ও তার স্বজনদের পিটিয়েছেন। আমি তার বিচার দাবি করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহানুর রহমান জানান, জিন তাড়ানোর জন্য সকালে চারজন আসেন। একটি মেয়ের ঘাড়ে নাকি জিন লেগেছে। জিন ছাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ৮ হাজার টাকা চুক্তি করে মহিউদ্দীন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জিন ছাড়াতে না পারায় তারা চলে যেতে চায়। তখন কবিরাজ টাকা দাবি করলে তারা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের ঘরের দরজা বন্ধ করে মারধর করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, মানুষকে বড় লোক করে দেওয়া, গর্ভে সন্তান না হলে তদবিরের মাধ্যমে সন্তানের ব্যবস্থা করা, পারিবারিক সমস্যার সমাধান, যৌন রোগের চিকিৎসা ও তদরিবের মাধ্যমে প্রেমের ব্যবস্থা করাসহ নানা সমস্যার সমাধানের কাজ করেন শেখ মহিউদ্দীন।
অভিযোগের বিষয়ে শেখ মহিউদ্দীন বলেন, রোগীটা আমার কাছে এসে চুক্তি করে। তবে টাকা না দিয়ে চলে যাচ্ছিল। তখন এই ঘটনা ঘটেছে। আমার ডাক্তার হওয়ার কাগজপত্র সব রয়েছে। আমি দেখাতে পারব। তিনটা রাজনৈতিক মামলা রয়েছে।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, ঝাড়ফুঁক দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এমন খবর আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।