
স্পোর্টস ডেস্ক:
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গত আসরে মোহামেডানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু দল সুপার লিগে না উঠায় খেলার সুযোগ হয়নি তার। আন্তর্জাতিক সূচী ও ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় গ্রুপপর্বের ম্যাচগুলোতে মোহামেডানের জার্সিতে খেলতে পারেননি সাকিব। তবে ব্যস্ততা কাটিয়ে যখন ফিরেছেন, তখন মোহামেডান টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গেছে। শেষ পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ক্লাব বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে খেলার জন্য ছেড়ে দেয়। এবারও মোহামেডানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সাকিব, কিন্তু জাতীয় দল ও আইপিএলের কারণে তাকে পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। তবু তিনি মোহামেডানের হয়ে খেলতে আত্মবিশ্বাসী।
আগামী ১৫ মার্চ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শুরু হবে। এই উপলক্ষে শনিবার বিকালে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ট্রফি উন্মোচন হয়ে গেছে। ক্লাবগুলোর অধিনায়কসহ সিসিডিএমের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে মোহামেডানের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তা্মই মিরপুরে ট্রফি উন্মোচনে দেখা যায়নি তাকে। তার অনুপস্থিতিতে ট্রফির অনুষ্ঠানে মোহামেডানের প্রতিনিধিত্ব করেন এনামুল হক জুনিয়র।
এদিকে ইংল্যান্ড সিরিজের পর ১৮ মার্চ থেকে ঘরের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে সাকিবরা। এর পরপরই ইংল্যান্ড সফরে যাবে ওয়ানডে দল। সেখানে আইরিশদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৩১ মার্চ থেকে শুরু হবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। যেখানে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলার কথা সাকিবের। এমন অবস্থায় মোহামেডানের হয়ে এই মৌসুমে খেলাও তার জন্য প্রায় অসম্ভব।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে মোহামেডানের দল পরিচিতি অনুষ্ঠান হয়। সেখানে সাকিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা ও আইপিএলে দায়বদ্ধতার মাঝেই মোহামেডানের হয়ে খেলতে চান তিনি, ‘ইচ্ছা আছে সবগুলো খেলার, বাকিটা দেখা যাক। আমি যেটা বললাম সবগুলো ম্যাচ খেলার চেষ্টা থাকবে। জাতীয় দলে ও আইপিএলে একটা দায়বদ্ধতা আছে, কিন্তু এর মাঝেই যথাসম্ভব টিমের সাথে থাকার এবং ম্যাচগুলো খেলার চেষ্টা করবো।’
গত আসরে প্রিমিয়ার লিগ চলাকালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিল বাংলাদেশ দল। সেবার প্রথমবারের মতো প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। দেশে ফেরার পর সাকিব মোহামেডানের জার্সিতে খেলার সুযোগ পাননি। কেননা ততদিনে মোহামেডান সুপার লিগ থেকে ছিটকে গেছে। মোহামেডানের আগেভাগে ছিটকে যাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাকিব, ‘দেশের হয়ে ভালো কিছুর জন্যই (দক্ষিণ আফ্রিকায় জয়) মোহামেডান সুপার লিগে যেতে পারেনি। কারণ আমরা অনেকগুলো খেলোয়াড় ছিলাম যারা খেলতে পারিনি, সার্ভিস দিতে পারিনি। জাতীয় দলের দায়বদ্ধতার কারণে আমরা খেলতে পারিনি। আশা করি আমরা এবার দল হয়ে খেলতে পারবো, মোহামেডান অনেক দিন ধরে যেমন চাচ্ছে, ওরকম একটা ফল আনতে পারবো।’
শনিবার মোহামেডানের পরিচিত পর্বের অনুষ্ঠানে সব ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন না। সাকিবের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ, রনি তালুকদার, আবু জায়েদ রাহী ও খালেদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। গত আসরের মতো এবারও শক্তিশালী দল গঠন করেছে মোহামেডান। সাকিব আশা করছেন দল হিসেবে খেলতে পারলে মোহামেডানকে কাঙ্ক্ষিত শিরোপা উপহার দেওয়ার সম্ভব হবে, ‘আমরা যেন দল হিসেবে খেলতে পারি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। একটা ভালো ম্যাচ খেলতে পারলাম, আরেকটা পারলাম না। এটা খুব একটা ভালো ব্যাপার না। যেহেতু সবাই পেশাদার খেলোয়াড়, সবাই যার যার জায়গা থেকে দলের জন্য যথাসম্ভব অবদান রাখার চেষ্টা করতে পারলে আমরা প্রত্যাশা মতো ফল পাবো।’
গতবারের মতো এবারও মোহামেডানের নেতৃত্বে থাকবেন সাকিব। যদিও তার অনুপস্থিতিতে দল সামলাতে দেখা যাবে অন্য কাউকে। তারপরও অধিনায়কত্ব দেওয়ায় মোহামেডানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাকিব, ‘প্রথমত ধন্যবাদ জানাই মোহামেডান ক্লাবকে, আমাকে এত বড় একটা দায়িত্ব দিয়েছে।
মোহামেডানের মতো একটা ক্লাবের অধিনায়কত্ব করা অনেক বড় সম্মানের। আমি চেষ্টা করবো সম্মানটা ধরে রাখার। গত বছর আমি যে টিমে খেলেছিলাম, আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল আমরা যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারি। ইনশাআল্লাহ একইভাবে আমরা চেষ্টা করবো যে এ বছর মোহামেডান যেন ভিন্ন একটা ফল করে এবং আমরা যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারি।’