নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী শুক্রবার বিয়ে। তাই নিয়ে বন্ধুমহলে নানা আলোচনা। বাড়ীতে উৎসবমুখর পরিবেশ। সবাই মেতে আছে আনন্দে। আনুষ্ঠানিকতা সব শেষ শুধু অনুষ্ঠানটিই বাকি। তার মধ্যে ঘটে গেল অঘটন। সন্ত্রাসীদের ছুরির আঘাতে মরতে মরতে কোনমতে ইস্রাফিল বেঁচে আছে হাসপাতালে।
গত ৪ আগস্ট বুধবারে বড় বাজার কাঁচা ও পাঁকামাল ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারী আব্দুর রহিম বাবুর উপর সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর জখম ইস্রাফিলের জ্ঞান ফিরেছে। তবে অবস্থা শংকট জনক। মাথায় ইটের আঘাতে সৃষ্ট ক্ষতচিহ্নে পড়েছে তিনটি সেলাই। বুকে ছুরি ঢুকিয়েছে ফুসফুস পর্যন্ত। দম নিতে কষ্ট হয় ইস্রাফিলের। রাতে দিতে হয় অক্সিজেন। ফুসফুস থেকে এখনও রক্ত আসছে। সে রক্ত বের করার জন্য লাগানো হয়েছে পাইপ। আধোচেতনা নিয়ে হাসপাতালের বেডে দিন কাটছে তার। তবে শুভ দিন শুক্রবারে বিয়েটা স্থগিত করা হয়েছে।
ইস্রাফিল জানায়, ‘আমি বাড়ি যাচ্ছিলাম। পথে দেখি ছালাম আমার মামার জামা ধরে টানতেছে। আরো কয়েকজন ব্যক্তি মিলে হেনস্তা করছে। তাই আমি এগিয়ে গিয়ে মামাকে ছাড়িয়ে দেই। ছাড়িয়ে দেয়ায় ছালাম আমার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। এসময় চপল ও তামজিদ বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। তখন কথাকাটাকাটি হাতাহাতিতে পরিনত হয়। এমন সময় চপল দৌড়ে এসে আমার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। যখন আমি পরে যাচ্ছি তখন তামজিদ আমার বুকে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। সে সময় আরেকজন আমার পেটে ছুরি দিয়ে আগামাথা একটি পোচ দেয়। আমি চোখে অন্ধকার দেখি। তারপর আমি আর কিছু বলতে পারিনা। চোখ মেলে দেখি আমি খুলানায় হাসপাতালে। আমার ভাবী শ্বশুরবাড়ি থেকে একটি ১২ আনা ওজনের স্বর্ণের চেন আমাকে উপহার দেয় যা ঘটনাস্থলে খোয়া গেছে। আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। যার আর ব্যবহার করা যাবে না।’
উল্লেখ্য, বড়বাজার কাঁচা-পাকা মাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বাবু দীর্ঘদিন আমি আনিছের কাছে ১০ হাজার টাকা পান। তিনি বলেন ‘টাকাটা দিতে টালবাহানা শুরু করে সে। ৫ আগস্ট, বুধবার দুপুরে বাড়ি যাওয়ার পথে সুলপুরের মধ্যে তাকে দেখে আমি পেছন থেকে ডাক দেই। এ সময় সুলতানপুরের চপলের বাড়ির সামনে আনিছ দাঁড়ায়। আমি পাওনা টাকা চাইলে চপলের বাড়ির মধ্যে থেকে কয়েকজন যুবক বের হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় চপল বাইরে এসে আমার সাথে কথা বলে। কথার একপর্যায়ে কথা কাটাকাটিতে রূপ নেয়। এমন সময় চপলের ছেলে তামজিদ গালিগালাজ করলে ইস্রাফিল তাকে বাধ সাধে। একপর্যায়ে ইস্রাফিলকে তামজিদ মারতে থাকে। তখন চপল পিছন থেকে আস্ত ইট দিয়ে ইস্রাফিলের মাথায় সজোরে আঘাত করে। ইস্রাফিলের মাথা ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। হঠাৎ চপলের ছেলে তামজিদ ইস্রাফিলের ফুসফুস বরাবর ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। এতে ইস্রাফিলের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তার হাত থেকে ছুরি নিয়ে ফারুক ইস্রাফিলের পেটে আরেকটি পোঁচ দেয়। হামলার সময় আরও অংশ নেয় সালাম ও আনিছ সহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫জন। ঘটনা অন্য দিকে মোড় নিলে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।ইস্রাফিলের অবস্থা শংকট জনক হওয়ায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে রেফার করে। পরে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তার অপারেশন শেষে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল।ইস্রাফিলের এখনও স্থিতিশীল হয়নি।’
জ্ঞান ফিরেছে ইস্রাফিলের, বন্ধ হয়নি রক্তক্ষরণ
পূর্ববর্তী পোস্ট